নয়া দিল্লি: সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পে কেন্দ্রকে সবুজ সংকেত দিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, যাবতীয় নথি ও অনুমতি পত্র সঠিক থাকায় এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা যেতে পারে। ২০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পেরই অন্তগর্ত নতুন সংসদ ভবন। গত বছর ১০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংসদের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করলেও সুপ্রিম কোর্ট কাজ শুরুতে বাধা দেয়, আদালতের সম্মতি না পাওয়া অবধি অপেক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আজ, বিচারপতি এ এম খানউইলকরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইনের অধীনে এই প্রকল্প বৈধ এবং পরিবেশ মন্ত্রকের দেওয়া ছাড়পত্রের নথিও সঠিক। ফলে শুরু করা যেতে পারে নতুন সংসদ ভবনের নির্মাণ কাজ। তিন সদস্যের এই বেঞ্চের দুই বিচারপতি নির্মাণ কাজে কোনও সমস্যা খুঁজে না পেলেও বিচারপতি সঞ্জীব খান্না পৃথক রায় ঘোষণা করে বলেন, পুরনো সংসদ ভবন সংরক্ষণের জন্য কোনও অগ্রিম অনুমোদন না থাকায় বিষয়টি নিয়ে গণশুনানির আয়োজন করতে হবে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, প্রায় ১০০০ কোটি টাকা খরচে নতুন সংসদ ভবন তৈরি করা হবে, পাশেই থাকবে কেন্দ্রীয় সচিবালয়। ২০২২ সালের অগস্ট মাসের মধ্যেই সংসদ পুনর্গঠনের কাজ শেষ করা হবে। স্বাধীনতা দিবসের ৭৫ বছর পূর্তিতে উন্মোচন করা হবে নতুন সংসদের।
আরও পড়ুন: ‘গবেষকদের উপর প্রশ্ন তুলিনি’, করোনা টিকা বিতর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন অখিলেশ
কেন্দ্রের তরফে তড়িঘড়ি কাজ শুরু করতে গেলে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, এখনই কোনও নির্মাণ বা সংস্কারের কাজ শুরু করা যাবে না। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে জমা পড়া যাবতীয় আবেদন খতিয়ে দেখার পরই শুরু করা যাবে কাজ। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের ভিত্তিতে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, বর্তমানে কেবল ভিত্তি প্রস্থরই স্থাপন করা হবে। কোনও গাছ কাটা, নির্মাণ বা পুরনো সংসদ সংস্কারের কাজ হবে না।
নতুন সংসদ ভবন তৈরিতে ব্যবহৃত জমি ও পরিবেশ সংক্রান্ত যাবতীয় নিয়ম কানুন মেনে চলা হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখে শীর্ষ আদালত। এছাড়াও সংসদ ভবন গঠনের বিরুদ্ধে যে আবেদনগুলি জমা পড়েছিল, তাও খতিয়ে দেখা হয়। এরমধ্যে সেন্ট্রাল ভিস্তা কমিটির সম্মতি পত্র ও পরিবেশ দূষণের বিষয়গুলিকেও যাচাই দেখা হয়।
প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, বর্তমানে যে সংসদ ভবনটি রয়েছে, তাতে নানা সমস্যা রয়েছে। জায়গার অভাবের পাশাপাশি ভবনের গঠনগত দুর্বলতা ও নিরাপত্তা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। বিভিন্ন সচিবালয়ের ভাড়া দিতেও সরকারের প্রায় ১০০০ কোটি টাকা খরচ হয়। নতুন সংসদ ভবনের পরিসর বড় হওয়ায় আসন সংখ্যা বাড়বে, এতে যেমন সাংসদদের বসার সুবিধা হবে, তেমনই নিরাপত্তা বলয়ও শক্তিশালী করা যাবে।
নতুন সংসদ ভবন তৈরি হলেও ভেঙে ফেলা হবে না বর্তমান সংসদ ভবনটি। নতুনের পাশেই পুরনো সংসদ ভবনটিকে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসাবে সংরক্ষণ করে রাখা হবে। আদালতে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, নতুন সংসদ ভবন নিয়ে কোনও তড়িঘড়ি করা হচ্ছে না। কোনও নিয়মও ভাঙা হয়নি।
বর্তমান সংসদের পাশেই ৬৪,৫০০ বর্গমিটার জুড়ে তৈরি হবে ত্রিভূজাকৃতির নতুন সংসদ ভবন। নতুন এই সংসদ ভবনে লোকসভা ও রাজ্যসভার আসন সংখ্যা বাড়িয়ে যথাক্রমে ৮৮৮ ও ৩৮৪ করা করা হয়েছে। দুই কক্ষের যৌথ অধিবেশনের ক্ষেত্রে ১২২৪ জন সাংসদ বসতে পারবেন। নাগোয়া ৪০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় গড়ে তোলা হবে কেন্দ্রীয় দফতর ও আবাসনগুলি।
আরও পড়ুন: ব্রিটেনে বেনামে সম্পত্তি কেনাবেচা, রবার্ট বঢরার বয়ান নিতে বাড়িতে হানা আয়কর দফতরের