Supreme Court: ‘বিচার প্রক্রিয়ার অপব্যবহার’, করোনা মাতার মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতাকেই জরিমানার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
Supreme Court on Demolition of Corona Mata Temple: বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল ও বিচারপতি এমএম সুন্দ্রেশ জানান, দেশে করোনা ছাড়াও আরও অনোক সংক্রামক রোগ থাকলেও আবেদনকারী এর আগে কোনও মন্দির তৈরি করেননি।
নয়া দিল্লি: দেশ যখন করোনায় (COVID-19) কুপোকাত গোটা দেশ, সেই সময়ই উত্তর প্রদেশে রাতারাতি গজিয়ে উঠেছিল করোনা মাতার মন্দির (Corona Mata Temple)। কিন্তু পাঁচদিনের মধ্যেই ভেঙে ফেলা হয় সেই মন্দির। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করেছিলেন মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা দম্পতি। তবে শীর্ষ আদালতের তরফে এটিকে “বিচারপক্রিয়ার অপব্যবহার” বলে অ্যাখ্যা দিয়ে সেই আর্জি খারিজ করে দেওয়া হল এবং মামলাকারীকে পাঁচ হাজার টাকার জরিমানা দেওয়ার নির্দেশও দিল আদালত।
উত্তর প্রদেশের প্রতাপগড় জেলায় গত ৭ জুন এক মহিলা করোনা মাতা মন্দির তৈরি করেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, ওই মন্দিরে পুজো দিয়েই করোনা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে এবং যারা আক্রান্ত, তারাও সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু ৫ দিন পরই সেই মন্দির ভেঙে দেওয়া হয়। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ওই দম্পতির অভিযোগ ছিল, রাতের অন্ধকারে পুলিশ এসে ওই মন্দির ভেঙে দিয়েছে। যদিও পুলিশের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়, ওই জমিটি নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরেই বিবাদ চলছিল। কোনও এক বিবাদী পক্ষই এসে মন্দিরটি ভেঙে দিয়েছেন। এরসঙ্গে পুলিশের কোনও যোগ নেই।
এরপরই মন্দির ভাঙার প্রতিবাদে ওই দম্পতি শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন, দায়ের করেন জনস্বার্থ মামলা। কিন্তু গতকাল ওই মামলার শুনানি শুরুতেই বিচারপতি এসকে কৌল ও বিচারপতি এমএণ সুন্দ্রেশ ওই আর্জি খারিজ করে দেন এবং বিতর্কিত জমিতে মন্দির তৈরি করায় ওই দম্পতিকে ৫ হাজার টাকার জরিমানাও করেন।
শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, আর্জিপত্রে ওই আবেদনকারী দাবি করেছিলেন যে ওই জমিটি তাঁর নিজের এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সম্মতিতেই তিনি ওই মন্দির তৈরি করেছিলেন। সেই কারণেই তিনি আইনি কোনও অনুমতি নেননি। বিচারপতির বেঞ্চের তরফে বলা হয়, “আবেদনকারী এখনও অবধি অন্য কোনও রোগের জন্য মন্দির গঠন করেননি। ওই জমিটি যে বিতর্কিত, তার রেকর্ডও রয়েছে এবং একটি পুলিশি অভিযোগও রয়েছে।”
দীপমালা শ্রীবাস্তব নামক ওই আবেদনকারী আদালতে সংবিধানের ৩২ নম্বর ধারা অনুযায়ী রিট পিটিশন দায়ের করে বলেছিলেন, তাঁর স্বামীর সঙ্গে মিলিত উদ্যোগে তিনি যে করোনা মাতা মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন, তা ভেঙে ফেলে তাঁর মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে।
বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল ও বিচারপতি এমএম সুন্দ্রেশ জানান, দেশে করোনা ছাড়াও আরও অনোক সংক্রামক রোগ থাকলেও আবেদনকারী এর আগে কোনও মন্দির তৈরি করেননি। বিতর্কিত জমির উপর মন্দির তৈরি করা এবং সেই নির্মাণের জন্য কোনও রূপ প্রশাসনিক অনুমতিও নেওয়া হয়নি। আবেদনকারী জমিটি নিজের বলে দাবি করলেও আদালতের কাছে জমা হওয়া তথ্য প্রমাণে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে এই জমি ঘিরে বিতর্ক রয়েছে এবং এর প্রেক্ষিতে পুলিশি অভিযোগও রয়েছে।
আদালতের তরফে এই রিট পিটিশনকে বিচারপক্রিয়ার অপব্যবহার বলে আখ্যা দিয়ে ওই আর্জি বাতিল করে দেওয়া হয় এবং মামলাকারীকে ৫ হাজার টাকার জরিমানাও করা হয়, যা আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট ওয়েলফেয়ার ফান্ডের নামে জমা করতে হবে।