Pahalgam Tourist Attack: ‘অবৈধভাবে বসতি গড়তে চাইলে হিংসা চলবে’ – সোশ্যাল মিডিয়ায় হামলার দায় স্বীকার করে হুমকি সন্ত্রাবাদী সংগঠনের
Pahalgam Terror Attack: অ-স্থানীয়রা পর্যটক হিসেবে আসে, বসবাসের অনুমতি নেয় এবং তারপর এমন আচরণ শুরু করে যেন তাঁরা জমির মালিক। ফলস্বরূপ, যারা অবৈধভাবে বসতি স্থাপনের চেষ্টা করবে তাঁদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনা ঘটবে।

শ্রীনগর: কাশ্মীরে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করল পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসী সংগঠন ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’। জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পর্যটন কেন্দ্র পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসী হামলায় ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ১ পর্যটকের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বেশ কয়েকজন। সূত্রের খবর আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। যদিও এই বিষয়ে সরকারি ভাবে এখনও কোনও সংখ্যা জানানো হয়নি, তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন অনুসারে মৃতের সংখ্যা অন্তত ৫ জন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সন্ত্রাসী সংগঠন ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। নতুন আবাসিক আইনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকেই এই হামলা বলে অনুমান। ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ জানিয়েছে ৮৫,০০০ এরও বেশি আবাসিক কার্ড অ-স্থানীয়দের দেওয়া হয়েছে। যা এখানে জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের পথ প্রশস্ত করেছে। এই অ-স্থানীয়রা পর্যটক হিসেবে আসে, বসবাসের অনুমতি নেয় এবং তারপর এমন আচরণ শুরু করে যেন তাঁরা জমির মালিক। ফলস্বরূপ, যারা অবৈধভাবে বসতি স্থাপনের চেষ্টা করবে তাঁদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনা ঘটবে।
হামলার পরপরই, নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং তীব্র তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। স্থানীয় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী যৌথভাবে সন্ত্রাসীদের খুঁজছে। এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সংবেদনশীল এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও, পহেলগাঁওতে আসা বাকি পর্যটকদেরও আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

নতুন আবাসিক আইন কী?
প্রসঙ্গত, নতুন আবাসিক আইনের প্রতিবাদ জানাতেই এই হামলা বলে দাবি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের। প্রশাসন সাধারণ জনগণকে সতর্ক থাকার এবং যে কোনও সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে অবিলম্বে নিরাপত্তা বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে। এই হামলা আবারও উপত্যকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। বহু বছর পর পর্যটকদের উপর সরাসরি সন্ত্রাস হামলার ঘটনা ঘটল। এর আগে একাধিক সন্ত্রাস হামলার ঘটনা ঘটলেও সেই তালিকা থেকে বাদ ছিলেন পর্যটকরা। কিন্তু এই বার সরাসরি তাঁদেরকেই টার্গেট করা হল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা অপসারণের পর, জম্মু ও কাশ্মীরকে একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়। এই, নতুন আইনের অধীনে, যাঁরা ১৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে জম্মু ও কাশ্মীরে বসবাস করছেন তাঁরা স্থায়ীভাবে বসবাসের মর্যাদা পেতে পারেন। যাঁদের বাবা-মা বা অভিভাবকরা জম্মু ও কাশ্মীরে ১০ বছর ধরে সরকারি চাকরি করেছেন এমন ব্যক্তিও স্থায়ী বসবাসের যোগ্য। এই আইনের অধীনে, আরও কিছু শ্রেণীর মানুষও স্থায়ী বসবাসের যোগ্য। এই সিদ্ধান্তে সন্ত্রাসীরা বিচলিত।
জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এই হামলার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, “আমি পহেলগাঁওতে পর্যটকদের উপর কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমি জনগণকে আশ্বস্ত করছি যে এই জঘন্য হামলার পিছনে যাঁরা রয়েছে তাঁদের রেহাই দেওয়া হবে না। ডিজিপি এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সেনাবাহিনী এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের দল এলাকায় পৌঁছে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের পহেলগাঁওতে ভর্তি ব্যক্তিদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আহত একজন পর্যটককে জিএমসি অনন্তনাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি সকল আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”
