
নয়া দিল্লি: অপারেশন সিঁদুরে কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়েছিল বিরোধী দলগুলিও। শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একজোট থাকার বার্তা দিয়েছিল। এবার এই অপারেশন সিঁদুর নিয়েই আলোচনার দাবিতে সরব তৃণমূল কংগ্রেস। কীভাবে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা হল, কেন গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে এই বিষয়ে আগে থেকে কোনও খবর ছিল না, এই ধরনের চোখা চোখা প্রশ্ন কেন্দ্রকে করতে চাইছে তৃণমূল। আজ সাংবাদিক বৈঠক করে তারা বিশেষ অধিবেশনের দাবি জানালেন।
এ দিন তৃণমূলের সাংসদ কাকলী ঘোষ দস্তিদার ও সাগরিকা ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তারা দাবি জানান, অপারেশন সিঁদুর নিয়ে কেন্দ্রকে বিশেষ অধিবেশন ডাকতে হবে। দেশের জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। তাঁদের দাবি, জুনের মধ্যে বিশেষ অধিবেশন ডাকতে হবে। বাদল অধিবেশন পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত হবে না।
১৯৭১ সালে যুদ্ধের পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বিশেষ অধিবেশন ডেকে আলোচনা করেছিলেন।কার্গিল যুদ্ধের পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীও বিশেষ অধিবেশন ডেকেছিলেন। এবার পাকিস্তানের সঙ্গে যে সংঘাত শুরু হয়েছিল, তাও যুদ্ধের থেকে কম কিছু নয়। তাই অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনা চাইছে তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, সর্বদলের সর্বসম্মত সমর্থন পেতে সংসদের অধিবেশন সর্বোচ্চ ক্ষেত্র। কী ঘটেছে তা জানার অধিকার দেশবাসীর আছে।
বিশেষ অধিবেশনের দাবি নিয়ে অন্য দলের সঙ্গে কথা হচ্ছে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল সাংসদ বলেন, “আমরা দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ দল। এটা ধরেই নেওয়া যায় আমাদের দলনেত্রী এই বিশেষ অধিবেশন নিয়ে অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলছেন। কিন্তু কী কথা হচ্ছে তা এখনই বলা যাবে না।”
অপারেশন সিঁদুর নিয়ে প্রচার করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামিকাল পশ্চিমবঙ্গে সভা রয়েছে, সেই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ কাকলী ঘোষ দস্তিদার বলেন, “ওরা ওদের রাজনৈতিক মতামত নিয়ে ঘুরছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রচারে রাজনীতি রয়েছে। যুদ্ধে যাতে সন্ত্রাসবাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া যায়, সেই বিষয়ে আমরা সব রকম সহযোগিতা করেছি। কিন্তু এই যুদ্ধকে সৈন্যদের স্বার্থত্যাগ বা কৃতিত্ব না দেখিয়ে, উনি এমন ভাবে দেখাচ্ছেন যেন যুদ্ধটা উনি করেছেন।”
আরেক সাংসদ সাগরিকা ঘোষও বলেন, “অপারেশন সিঁদুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা অভিযান ছিল, যা আমাদের সেনাবাহিনীর সাহসিকতা দেখিয়েছে। কিন্তু বিজেপি যা করছে, তা কোনওভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। রাজনৈতিক নাটক করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নাটকের অভিনয় বলে মনে হচ্ছে। আমরা জবাব চাই। সেনাবাহিনীর সর্বোত্তম আত্মত্যাগকে ছোট করছে বিজেপি।”
সূত্রের খবর, অন্যান্য দলের পাশাপাশি তাৎপর্যপূর্ণভাবে কংগ্রেসের সঙ্গেও প্রতি মুহূর্তে এই বিষয়ে যোগাযোগ রাখছে তৃণমূল। কীভাবে যৌথভাবে চাপ তৈরি করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, ডিএমকে, আরজেডি, আপ, এনসিপি, শিবসেনা উদ্ধব, ন্যাশনাল কনফারেন্স, এআইএমআইএম , সিপিআইএম, নিজেদের মধ্যে কথা চলছে। গতকালই কলকাতায় তেজস্বী এবং লালু প্রসাদের সঙ্গে কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।