Kaveri jet engine: রাশিয়াতে চলছে চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়াল, ‘কাবেরী’ জেট ইঞ্জিনে উড়বে ভারতের UCAV
Kaveri jet engine: ভবিষ্যতের আকাশযুদ্ধে ভারতের ড্রোন, এমনকী তেজসের মতো যুদ্ধবিমানেও এই ইঞ্জিনের শক্তিশালী অ্যাডভান্সড টার্বো ফ্যান প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। 'মেক ইন ইন্ডিয়া' প্রকল্পের অধীনে এই পদক্ষেপে ভারত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আরও স্বনির্ভর হয়ে উঠবে।

এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ‘কাবেরী’ জেট ইঞ্জিনের চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়াল চলছে রাশিয়াতে। বাকি আর মাত্র ২৪ ঘণ্টার টেস্টিং। সফল হলেই ভবিষতে ভারতের ‘আনম্যানড কমব্যাট এরিয়াল ভেহিক্যাল’ (UCAV) বা সামরিক ড্রোন উড়বে কাবেরী জেট ইঞ্জিনে বলীয়ান হয়েই। ভবিষ্যতের আকাশযুদ্ধে ভারতের ড্রোন, এমনকী তেজসের মতো যুদ্ধবিমানেও এই ইঞ্জিনের শক্তিশালী অ্যাডভান্সড টার্বো ফ্যান প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অধীনে এই পদক্ষেপে ভারত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আরও স্বনির্ভর হয়ে উঠবে।
ভারতের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও জানিয়েছে, ভারতের লং রেঞ্জ UCAV-তে ব্যবহার করার জন্য রুশ সেনার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাবেরী জেট ইঞ্জিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। এই ইঞ্জিন বানিয়েছে ডিআরডিও। অপারেশন সিঁদুর বুঝিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতের যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোন কতটা গুরুত্বপূর্ণ সামরিক হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে। যে দেশের ড্রোন যত শক্তিশালী, সেই দেশের আক্রমণের ঝাঁঝ তত বেশি। তাই এবার সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে ড্রোন, মিসাইল এমনকী জেট ইঞ্জিন তৈরিতেও আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে চাইছে ভারত। তারই ফলস্বরূপ কাবেরী ইঞ্জিনের চূড়ান্ত ট্রায়াল পর্ব চলছে রাশিয়াতে।
প্রাথমিকভাবে কাবেরী ইঞ্জিন তেজসের মতো লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফটের (LCA) জন্য বানানো হলেও ট্রায়ালে সামান্য দেরি হওয়ায় আপাতত LCA-গুলিতে মার্কিন জিই-৪০৪ ইঞ্জিন ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে কাবেরী জেট ইঞ্জিনের যে ট্রায়াল এখন চলছে, সেটি সম্পূর্ণ হলে ভবিষ্যতে লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফটেও ওই ইঞ্জিন ব্যবহৃত হবে বলেই আশাবাদী ডিআরডিও। আপাতত, রাশিয়ার সেনার তত্ত্বাবধানে প্রতিকূল সবরকম পরিস্থিতিতে এই কাবেরী ইঞ্জিনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। ডিআরডিও দেখে নিতে চাইছে, যুদ্ধের সময় যে কোনওরকম চ্যালেঞ্জকে এই জেট ইঞ্জিন টপকাতে করতে পারে কি না। আর মাত্র ২৪ ঘণ্টার মতো টেস্টিং বাকি রয়েছে। ইঞ্জিনটির শক্তি, জ্বালানির খরচ ও হামলার মুখে কতক্ষণ টিকতে পারবে- সেই সব পরীক্ষা হচ্ছে রুশ সেনার অধীনে। ট্রায়াল সফল হলে, ভারতের নিজস্ব জেট ইঞ্জিন তৈরির ক্ষেত্রে কাবেরী ইঞ্জিন এক মাইলফলক স্পর্শ করবে। বিদেশি রাষ্ট্রের উপর থেকে নির্ভরতা কমাতে অনেকদিন ধরেই এই চেষ্টা চালাচ্ছে দিল্লি। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে ট্রেন্ডিং হয় ‘ফান্ড কাবেরী ইঞ্জিন প্রজেক্ট’ হ্যাশট্যাগ। যুদ্ধবিমান বা ড্রোনের জন্য এইরকম দেশি ইঞ্জিন একবার সাফল্যের মুখ দেখলে ভবিষ্যতে আর বিদেশি রাষ্ট্রের মুখাপেক্ষী হয়ে ভারতকে থাকতে হবে না। প্রতিরক্ষায় ‘আত্মনির্ভর’ হবে ভারত।

এর পাশাপাশি ডিআরডিও এখন ফ্রান্স, আমেরিকা ও ব্রিটেনের কয়েকটি সংস্থার সঙ্গেও কথা বলছে, আরও শক্তিশালী একটি জেট ইঞ্জিন তৈরির জন্য। যা মার্ক টু ভার্সনের ফিফ্থ জেনারেশন অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফটে বসানো হবে। এমনিতেই এখন ভারতীয় বায়ুসেনা বিদেশ থেকে আমদানির বদলে দেশেই আধুনিক যুদ্ধবিমান তৈরিতে মনোনিবেশ করেছে। ভারতেই তৈরি হচ্ছে এলসিএ মার্ক ১ এ, মার্ক ২ ও AMCA-র মতো যুদ্ধবিমান।

