নয়া দিল্লি: ত্রিপুরা নিয়ে কিছুদিন ধরেই সরগরম জাতীয় রাজনীতি। সম্প্রতি ত্রিপুরার পুর নির্বাচন নিয়ে বিজেপি তৃণমূল দ্বৈরথ দেখেছে দেশ। নির্বাচনের আগে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেবের করা মামলার প্রেক্ষিতে ত্রিপুরা সরকারকে ভর্ৎসনা করে বিরোধী প্রার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা নির্দেশ দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত। নির্বাচনে বিজেপি বিপুল জয় পেলেও ভোটে সন্ত্রাস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল সহ ত্রিপুরার বিরোধী দলগুলি। এবার সেই হিংসার অভিযোগে ত্রিপুরার বিপ্লব দেব সরকারের থেকে রিপোর্ট তলব করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (National Human Rights Commission)।
বিশিষ্ট আরটিআই কর্মী তথা তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলে, তথ্যের অধিকার আইনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন ত্রিপুরাতে তৃণমূলকর্মী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও সাংবাদিকদের ওপর যে হামালা হয়েছে, তাতে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে? সেই প্রশ্নের পরিপ্রক্ষিতেই বিপ্লব দেব সরকারকে নোটিশ পাঠিয়েছে মানবাধিকার কমিশন। টুইাটারে এই কথা জানিয়েছেন সাকেত গোখলে স্বয়ং। তিনি লিখেছেন, ” সংখ্যালঘু, তৃণমূল কর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ নিয়ে আমার করা অভিযোগের ভিত্তিতে, ২ ডিসেম্বর অবধি কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সেই বিষয়ে ত্রিপুরা সরকারে কাছে জানতে চেয়ে নোটিশ দিয়েছে। আশা করি বিপ্লব দেব জবাব দেবেন। আমি পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য রিপোর্টের একটি কপি চেয়ে পাঠিয়েছি।”
মানবাধিকার কমিশনের এই রিপোর্ট তলবকে ‘নৈতিক জয়’ হিসেবই দেখছে তৃণমূল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মানবাধিকার কমিশনের এই পদক্ষেপে অক্সিজেন পাবে তৃণমূল। কারণ সংসদে এখন শীতকালীন অধিবেশন চলছে। সেই সময়ই বিজেপি শাসিত রাজ্যের কাছে হিংসা নিয়ে কমিশনের রিপোর্ট তলবকে কেন্দ্র করে সংসদে কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে তৃণমূলের কাছে, পাশাপাশি বাংলায় নির্বাচন জয়ের পরই জাতীয় রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতার পেতে ময়দানে নেমেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। কমিশনের এই রিপোর্ট তলব বিরোধী রাজনীতিতে বিজেপি আক্রমণের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করতে পারে তৃণমূল।
প্রসঙ্গত ত্রিপুরার পুর নির্বাচনের আগে থেকেই ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। যুব তৃণমূলনেত্রী সায়নীল ঘোষের জিজ্ঞাসাবাদের সময় রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে পূর্ব আগরতলা মহিলা থানা। মাথা ফাটে তৃণমূল কর্মীর। সম্প্রতি দিল্লি সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তাঁর কাছে ত্রিপুরার পরিস্থিতি নিয়ে নালিশ জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এখন ত্রিপুরা বিপ্লব দেব সরকার মানবাধিকার কমিশনের নোটিসে কী জবাব দেয় সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।