শাসক থেকে বিরোধী। উপস্থিত একাধিক রাজনৈতিক নেতা। মঞ্চ আলোকিত করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিং, অমিত শাহ প্রমুখ। মঞ্চে বক্তব্য পেশ করলেন অরবিন্দ কেজরীবাল, ভগবন্ত মান সহ একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আজ, মঙ্গলবার TV9 নেটওয়ার্কের কনক্লেভের তৃতীয় দিনে ‘সত্তা সম্মেলনে’র আয়োজন করা হয়। সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে শুরু হয় অনুষ্ঠান।
কোনও সমীক্ষার প্রয়োজন নেই। মোদীজি যখন বলেছেন ৪০০ পার হবে, তখন তাই হবে। দেশ নতুন সংসদ তৈরি করে, পবিত্র সেঙ্গল স্থাপন করে নতুন যাত্রা শুরু করেছে। ভারতের অর্থনীতি পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। মোদী সরকারের তৃতীয় দফায় এটা তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে। মোদীজি দেশকে সুরক্ষিত করেছেন। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছেছে। অর্থনীতি, কূটনীতির পরিবর্তন এনেছেন। গান্ধীজির সমাধিতে একসঙ্গে সমস্ত রাষ্ট্রনেতারা সম্মান জানিয়েছেন। দিল্লি শংসাপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। ২০৪৭ সালে ভারত সব ক্ষেত্রে শ্রেষ্ট হবে। এমন দলকে নির্বাচন করুন, যারা দেশের ভাল চায়।
রাহুল গান্ধী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ তুলে নেওয়া হবে। শাহ বলেন, রাহুল গান্ধীকে কেউ সিরিয়াসলি নেয় না। রাহুল গান্ধী জানেন না যে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির উপরে সবথেকে বেশি অত্যাচার করেছে কংগ্রেসই। কংগ্রেস কখনও ওবিসিদের সংরক্ষণ দেয়নি। এগুলো তো মোদীজি এসে করেছেন।
ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন নিয়ে বলেন, এত বড় দেশে বারবার নির্বাচন হওয়া অর্থনীতির জন্য ভাল নয়। রামনাথ কোবিন্দ এই বিষয়টি দেখছেন। আমিও সদস্য। শীঘ্রই রিপোর্ট পেশ করা হবে।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি গণতন্ত্রের প্রাথমিক চাহিদা। দেশের আইন ধর্মের ভিত্তিতে নয়, জনতার হিতের জন্য হওয়া উচিত। বিজেপি যবে থেকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তবে থেকে ৩৭০ প্রত্য়াহার, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনার স্বপ্ন দেখেছে। উত্তরাখণ্ডে এই আইন এসেছে। এর বৈধানিক পর্যালোচনা হবে। নির্বাচনের পর দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনা হবে। সামাজিক পরিবর্তন এটা। এই নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। তারপর দেশে চালু করা হবে।
মণিপুরের হিংসা নিয়ে বলেন, ওখান থেকে যেভাবে মাদক পাচার হচ্ছিল, তাতে দেশে হিংসা বাড়ছিল। সেই কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মায়ানমার সীমান্তে বেড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কয়েক দিনেই এই কাজ শুরু হবে। এফএমআর বন্ধ করা হবে।
১০ বছরে নকশালবাদ ৭২ শতাংশ কমেছে। ৬-৭ রাজ্য়েই সীমাবদ্ধ রয়ে গিয়েছে। এই দেশকে নকশালবাদ থেকে মুক্ত করা হবে।
৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্য়াহারের পর কাশ্মীরে পাথর ছোড়া বন্ধ হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ থেমেছে। ৫ বছর ধরে স্কুল চলছে। ৩০বছর বাদে সিনেমা হল খুলেছে, মহরম পালিত হয়েছে। বিনিয়োগ , শিল্প আসছে। আগে তিন পরিবারই শাসন চালাত।
রাজনীতি তখন হত, যখন মন্দির তৈরি না হত। আমরা তো মন্দির তৈরি করে সমস্যা শেষ করে দিয়েছি। কংগ্রেস ৭০ বছর ধরে গরিব, দলিতদের যোগ্য সম্মান দেয়নি। আমরা ১০ বছরেই দেশের মায়ের এলপিজির সংযোগ দিয়েছি। ১৪ কোটি বাড়িতে শৌচালয় তৈরি করা হয়েছে। ৩ কোটি মাকে ঘর দেওয়া হয়েছে। ৬০ কোটি মানুষকে রেশন দেওয়া হচ্ছে, স্বাস্থ্য চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে।
সবার কাছে ওই দিনটা অবিস্মরণীয় দিন ছিল। আমাদের বৈষ্ণব রীতিতে মূর্তি দর্শন করা শুভ মনে করা হয়। আজ দেশবাসী চোখ বন্ধ করলেই রামলালার মূর্তি দেখতে পান। সেদিন আমি লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরে বসেছিলাম। সঙ্গে ৮০০ থেকে ১০০০ লোক ছিলেন। সবার চোখে জল ছিল। আমাদের পরাজয়ের চিহ্ন ছিল যা এতদিন, আজ সেখানে পবিত্র রাম মন্দির তৈরি হয়েছে। কাশী বিশ্বনাথ করিডর তৈরি হয়েছে। সোমনাথ মন্দিরে সোনার চূড়া বসছে, কেদার-বদ্রীনাথের সংস্কার হচ্ছে। কংগ্রেস তুষ্টিকরণের জন্য় এই কাজ করত না। এই জন্য দেশবাসী আজ মোদীজির পাশে।
আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান করছি। কংগ্রেসের সাংসদের বাড়ি থেকে ৩৫০ কোটি নগদ উদ্ধার হচ্ছে। ওরা বলবে, কোনও তদন্ত হবে না কারণ আমি সাংসদ। তৃণমূলের মন্ত্রীর বাড়ি থেকে ৫১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। মেশিন কম পড়ছিল। তারপরও বলবে তদন্ত করবে না। নিয়োগে দুর্নীতি, গরু পাচার, কয়লা পাচার করবে, তারপরও বলবে আমাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করো না। এই দেশে কী আদালত নেই? ইডি যত অভিযান করে বাজেয়াপ্ত করেছে, তার মাত্র ৫ শতাংশ রাজনৈতিক নেতাদের। ৫৫ শতাংশ বাজেয়াপ্তের রাজনীতির সঙ্গে কোনও যোগ নেই।
৪০ বছর ধরে নারী সংরক্ষণের কথা হচ্ছিল, কিন্তু কেউ করেনি। আমরা ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ দিয়েছি। আইপিসিতে পরিবর্তন এনেছি, ব্রিটিশ আইন তুলে। প্রভু শ্রীরামকে তার জায়গায় আনা হয়েছে মাত্র ১০ বছরে। মোদী সরকার পরিবারবাদ, তুষ্টিকরণ, জাতিবাদ কে শেষ করে পলিটিক্স অব পারফরম্যান্স চালু করেছে। আমরা রাজনীতিতে ভোটব্যাঙ্কের করি না, দেশের হিতকামনা করে রাজনীতি করি।
স্বাধীনতার পর গান্ধী-নেহরুজির প্রতিশ্রুতি ছিল, পড়শি দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার। রাজনৈতিক তুষ্টিকরণের জন্য তা হয়নি। আমরা সিএএ এনেছি। ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্য়াহার করে কাশ্মীরকে দেশের অভিন্ন অংশ করেছি। ৩০ বছর পর নতুন শিক্ষা নীতি এনেছি। বিশ্বের সবথেকে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা।
১০ বছর আগে কেউ কল্পনা করতে পারত না যে সবজিওয়ালি অনলাইনে পেমেন্টের কথা বলবে। সার্জিকাল স্ট্রাইক, এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে বলেছিল যুদ্ধ হবে। মোদীজি বলেছিলেন, যা হবে দেখা যাবে। সীমান্ত ও সেনা নিয়ে টানাটানি সহ্য করব না। ঘরে ঢুকে জবাব দেওয়া হয়েছে। তিন তালাকের আইন নিয়ে কতদিন কথা হয়েছে, কেউ বাস্তবায়ন করেনি।
মোদীজি ২০১৪ সাল থেকে সঠিক সময়ে অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা জনতার ভাল লাগে, এমন সিদ্ধান্ত নিইনা, জনগণের জন্য মঙ্গলদায়ক সিদ্ধান্ত নিই । এর মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। ওয়ান র্যাঙ্ক, ওয়ান পেনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ২০১৬-তে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, ১৭-এ ইউপি নির্বাচন ছিল। সবাই বলেছিল, বড় ভুল করেছি। কিন্তু ৩২৫ আসনে জয়ী হয়ে আমরা সবথেকে বড় সরকার গড়েছিলাম। জিএসটি এনেছি। পুরো বিশ্ব আজ অবাক জিএসটির মতো নিয়ম কীভাবে এত বড় দেশে চালু হল। আমরা জনধন, আধার এনেছি।
আগে ভারতরত্ন দেওয়া হয়েছে, তারপর এরা যোগ দিয়েছে। কংগ্রেসের অনেক নেতাকে আমরা ভারতরত্ন দিয়েছি। নরসিমহা রাও-কে ভারতরত্ন দিয়ে আমাদের কী লাভ, তরুণ গগৌকে দিয়ে কী লাভ করেছি। এটা কংগ্রেস পার্টি নয় যে শুধু বাবা-দাদাকেই সম্মান দেবে। বিজেপি দল নির্বিশেষে সম্মান দেয়। সর্দার পটেলকে ভারতরত্ন পেতে কত বছর সময় লাগল। পদ্ম পুরস্কারের রাজনীতির বিভাজন করা যায় না। মোদী সরকার যোগ্য ব্যক্তিদের সম্মান দেয়। আগে তো রিপোর্টারদের সুপারিশেও পুরস্কার দেওয়া হত। যারা জনগণের জন্য কাজ করেছেন, তাদের পুরস্কার দিই।
ইন্ডি জোট সাত ক্ষমতালোভী পরিবারের জোট, যারা নিজেদের ছেলেমেয়ে বা পরিবারের সদস্যদের মন্ত্রী বানাতে চায়। আমি দেশবাসীদের বলতে চাই, কংগ্রেস সনিয়াজির জীবনের এতমাত্র লক্ষ্য হল , ২১ তম বারে যাতে রাহুল গান্ধী সফলভাবে রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করতে পারে এবং সফল হয়। ২০ বার ব্যর্থ হয়েছে। উদ্ধব ঠাকরের লক্ষ্য ছেলে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যাক, স্ট্যালিনের লক্ষ্য ছেলে মুখ্যমন্ত্রী হোক। মমতাজির লক্ষ্য ভাইপোকে ক্ষমতায় বসানো, লালুজির লক্ষ্য ছেলেকে মুখ্যমন্ত্রী বানানো। এখানে গঠবন্ধন কোথায়?
ইন্ডিয়া জোট কখনও ছিলই না। এটা মি়ডিয়ার তৈরি করা। কোথাও জোট হয়নি। ইন্ডিয়ার দুই সদস্য কেরলে লড়ছে। বাংলায় তিন সদস্য মুখোমুখি লড়ছে। মহারাষ্ট্রে আগেই জোট ছিল। ওড়িশায় জোট নেই, হিমাচলে সম্ভব নয়। পঞ্জাবে সবে হয়েছে। জোট তখনই গ্রহণ করা হয়, তখন এর লক্ষ্য থাকে।
আমি তো শুধু আমার দলের সিদ্ধান্তে কাজ করি। কঠোর পরিশ্রমে বিশ্বাস রাখি। সাফল্য, ব্যর্থতা ভগবানের উপরে নিরাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই। আমার দল অনেক ধাপ পেরিয়ে এসেছে। অনেক হার দেখেছি। এখন মোদীজির নেতৃত্বে সাফল্যেরও অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।
বিজেপিতে উপর থেকে যা বলা হয়, তাই করতে হয়। মোদী বলেন ইন্দিরা গান্ধী স্বৈরাচারী ছিলেন। আগে তো নিজের দলের লোকজনকে স্বাধীনতা দিন।
আমরা সকলেই ভারতীয়, উত্তর-দক্ষিণ ভাগ করা ঠিক নয়। দেশকে বাঁচাতে গেলে সকলতে এক হয়ে লড়তে হবে। এখানে রাজনীতির জায়গা নেই।
আমার বাড়িতে আমি শরদ পওয়ারের সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেছিলাম। তারপর ডেকেছিলাম ডিএমকে-কে। তারপর এক এক করে অন্যান্য দলগুলির সঙ্গেও আমরা বৈঠক করি। শেষে অরবিন্দ কেজরীবালও আমার বাড়িতে এসে আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাহুল গান্ধীও ছিলেন। সবার সঙ্গে আলোচনার পর প্রশ্ন ওঠে, বৈঠক কোথায় হবে? নীতীশজি বলেছিলেন প্রথম বৈঠক হবে পটনায়। সকলের সঙ্গে কথা বলেছিলাম আমি, কথা বলেছিলাম আমি, পরে উনি বলত শুরু করলেন তিনি নাকি সকলকে একজোট করেছেন।
বিজেপি বলছে ইন্ডিয়া জোট হাওয়ার মতো। হাওয়া তো মানুষের বেঁচে থাকার জন্যই দরকার। উনি জোট ভাঙার অনেক চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমরা ভাঙার জন্য তৈরি নই। অনেক দল আমাদের সঙ্গে আছে। আমাদের বিরুদ্ধে লেখার স্বাধীনতা আছে সাংবাদিকদের, মোদী এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লেখার স্বাধীনতা নেই।
যারা এখন দল ছেড়ে যাচ্ছেন, তাদের অনেকে গত ৩০-৪০ বছর ধরে আমাদের সঙ্গে ছিলেন। এর মধ্যে কি আমাদের আদর্শ বদলে গিয়েছে? আসলে সেই সময় কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। সকলে সেই ক্ষমতার লোভেই ছিল। এখন, ফের ক্ষমতার লোভেই তারা দল ছাড়ছে। আমাদের আদর্শের টান নেই, এটা বলা ভুল।
নির্বাচিত সরকারকে ভাঙা, বিধায়কদের লোভ দেখিয়ে ধমকে দল বদলে বাধ্য করা, এটা কেমন গণতন্ত্র? এর আগে, মধ্য প্রদেসে হয়েছে, কর্নাটকে, মণিপুরে, গোয়ায়, সব জায়গায় এটা দেখা গিয়েছে। এখন হিমাচল প্রদেশে দেখা যাচ্ছে। লোকতন্ত্রে তো হিম্মত দেখাতে হয়। জওহরলাল নেহরু কি এই ধরনের কাজ করেছিলেন? লালবাহাদুর শাস্ত্রী এরকম করেছিলেন? এভাবে চলতে থাকলে, এরা একদিন গণতন্ত্রকে শেষ করে দেবে।
মনরেগা, শিক্ষা, খাদ্য সুরক্ষা, ভূমি সংস্কার, ব্যাঙ্কের জাতীয়করণের মতো অনেক গ্যারান্টি আমরা ইউপিএ সরকারের সময় দিয়েছি। ১০ পয়েন্ট প্রোগ্রাম, ২০ পয়েন্ট প্রোগ্রামের মতো অনেক কাজ করা হয়েছে। ওদের গ্যারান্টি কী? বছরে ২ কোটি চাকরি দেবেন বলেছিলেন, ১০ বছরে ২০ কোটি চাকরি হয়েছে? এটা বলেছিলেন তো? সেটা গ্যারান্টি ছিল না? ১৫ লক্ষ টাকা দেবেন বলেছিলেন, সেটা গ্যারান্টি ছিল না?
১৯৪৭-এ তাঁর বাড়ি আগুনে পুড়ে গিয়েছিল বলে জানালেন খাড়্গে। তিনি বলেন, “মাকে হারিয়েছি, বোনকে হারিয়েছি, কাকাকে হারিয়েছি। বাবা ক্ষেতে কাজ করছিল। আমি বাড়ির বাইরে এক ধর্মশালার সামনে খেলছিলাম। এরপর বাবা আমাকে পুণেতে নিয়ে এসেছিলেন। সেখানে এক বস্ত্র কারখানায় আমার বাবা কাজ পেয়েছিলেন। তিনিই আমায় বড় করেন। সেখান থেকে আমি ছাত্রনেতা হয়েছি, শ্রমিক নেতা হয়েছিল, ১৯৬৯ সালে ব্লক কংগ্রেস কমিটির সভাপতি হয়েছিলাম। তারপর থেকে আজ যেখানে পৌঁছেছি, তা আমার বাবার আশীর্বাদ আর নিজের পরিশ্রমের দৌলতে। আমি এই কথা বলছি একটাই কারণে, আমার কারও সিমপ্যাথি চাই না। আমি শ্রমিকের সন্তান। জনতার জন্য লড়ে যাব সারা জীবন।”
TV9-এর সত্তা সম্মেলনের মঞ্চে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। বিজেপি নেতাদের মুখে কেন শুধুই তাঁর নাম? খাড়্গে বললেন, গণতন্ত্রে এটা স্বাভাবিক। তবে, ওদের শুধু মুখেই আমার নাম শোনা যায়। ওদের হৃদয়ে আমার কোনও জায়গা নেই।
ইডি-র সামনে হাজির হওয়ার প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘আইনগতভাবে যা সঠিক আমি তাই করব। আমি আদালতে গিয়ে বলব কীভাবে এই সমনগুলি বেআইনি।’
বিজেপির বিরুদ্ধে সরকারি তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘আবগারি দুর্নীতির মামলা দুই বছর ধরে চলছে। ইডি লাগাতার অভিযান চালিয়েছে। উদ্দেশ্য গ্রেফতার করা।’
তোপ দেগেছেন বিজেপিকে। বলেন, বিজেপি শাসিত এমন এক রাজ্য আছে যেখানে ৬ হাজার সরকারি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জনসংখ্যা বাড়ছে। আরও সরকারি স্কুলের দরকার, যে স্কুল আছে সেগুলির উন্নতি দরকার। কিন্তু, ওরা তো পুরোটাই বেসরকারিকরণের দিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
“দিল্লির সরকারি স্কুলে এমন শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে যা আদপে বেসরকারি স্কুলে দেওয়া হয়। দিল্লির মধ্যে প্রায় ৪ লক্ষ বাচ্চা বেসরকারি স্কুল থেকে নাম কেটে সরকারি স্কুলে ভর্তি হয়েছে। এখন আমরা পঞ্জাবে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতিতে হাত দিয়েছি। আমরা চাই, গরিব থেকে বড়লোক, সকলের বাচ্চা ভাল শিক্ষা পাক।”
দিল্লি সরকার তিনটি ক্ষেত্রে সেরা কাজ করেছে। প্রথমটি হল শিক্ষা। এটা ছাড়া কোনও বড় দেশ চলতে পারে না। আমরা এত সরকারি স্কুল তৈরি করেছি যে আজ দিল্লির ছেলেমেয়েরা উন্নত শিক্ষা পাচ্ছে।
“আমি নেতা নই। নেতাগিরি আমি করতে পারি না। রাজনীতিও করতে পারি না। এই অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই অনেক রাজনীতিক কথা হয়েছে। আমি আজ দেশের কথা বলব।” বললেন কেজরী।
মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব বলেন, “আমরা মোদীজিকে সামনে রেখে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি এবং মানুষ কেবল তাঁর মুখ দেখেই ভোট দিয়েছে”। রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়া যাত্রা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিজেপি ৩৭০অনুচ্ছেদ বাতিল করে প্রকৃত ভারতকে একজোট করেছে। কংগ্রেস রাস্তায় নেমে কোথায় যাবে বুঝতে পারছে না। “
এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, “বিজেপির কোনও অধিকার নেই মুসলিমদের উপরে নৈতিকতা আরোপ করার। মুসলিম মেয়েরা বাবা ও স্বামী-উভয়ের সম্পত্তিতেই অধিকার পায়।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আছেন মানেই ‘গ্যারান্টি’ আছে। TV9 নেটওয়ার্কের সত্তা সম্মেলনে এমনটাই বললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। মঞ্চ থেকে রাহুল গান্ধীকে নিশানা করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘কংগ্রেসই রাহুল গান্ধীকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় না।’
উপত্যকার পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরে গেলে দেখা যাবে ঝিলমের তীরে রাত ১১টার সময়েও তরুণরা গিটার বাজাতে পারেন।
বিস্তারিত পড়ুন: গভীর রাতেও ঝিলম নদীর ধারে গিটার শোনা যায় আজ, কাশ্মীর প্রসঙ্গে বললেন মনোজ সিনহা
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান বলেন, “আজকের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রাসঙ্গিক নয়। বাস্তব জীবনে যা কাজে লাগে, এমন কিছু স্কুলে শেখানো উচিত। আমরা পঞ্জাবে স্কুল অব এমিনেন্স খুলেছি। সেখানে নবম শ্রেণি থেকে যে যা বিষয়ে পড়তে চায়, তাই-ই পড়ানো হবে। যে বিজ্ঞানী হতে চায়, তাঁকে বিজ্ঞান পড়ানো হবে, যে অভিনয় করতে চায়, তাঁকে সেই প্রশিক্ষণই দেওয়া হবে।”
মনোজ সিনহা বলেন, যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে পাকিস্তান থেকে অনেক সন্ত্রাসবাদী প্রবেশ করেন। পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নে মনোজ সিনহা বলেন, পাকিস্তান যতদিন না নিজেদের শুধরে নেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কথা বলব না। আমরা কাশ্মীরের তরুণ ও সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলব।
কবে হবে কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন? এই প্রশ্নের উত্তরে জম্ম ও কাশ্মীরের লেফট্যানেন্ট গভর্নর মনোজ সিনহা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে বলেছেন কাশ্মীরে বিধানসভার আসন বাড়ছে। নতুন ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে বিধানসভা নির্বাচন হবে।
যারা নিজেদের মুঘলের বংশধর বলে মনে করে, তাদের এগুলি নিয়ে আপত্তি আছে। বাকি যে ৯৯.৯ শতাংশ মুসলিম আছে, তারা সবাই রামকৃষ্ণের সন্তান। রাম মন্দির সম্পর্কে রামদেব বলেন, ‘রাম মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা, ভারতের সাংস্কৃতিক, ধার্মিক, আধ্যাত্মিক স্বাধীনতার এক মহা পর্ব ছিল।’
মেনস্ট্রিম মিডিয়া ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি লোক আমাকে ফলো করে। ১ কোটির বেশি ইউটিউবে ফলোয়ার রয়েছে। এটা করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে।
শূন্য থেকে শুরু করেছিলাম। ৩৫ বছর আগে আমার কাছে এক টাকাও ছিল না। TV9-এর মঞ্চে বললেন যোগগুরু রামদেব।
বিরোধীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজনাথ সিং বলেন, ‘হিন্দু কোনও জাতি নয়, এটা আসলে একটা জীবন-পদ্ধতি। ভারতের বেশির ভাগ মানুষ সেই জীবন-পদ্ধতি মেনে চলে। তবে আমি স্পষ্ট করে দিচ্ছি, বিজেপি জাতপাতের রাজনীতি করে না। আমরা চাই সবাই নিজের নিজের ধর্ম মেনে চলুক।’
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩৭০ পার করবে আর এনডিএ ৪০০। মঞ্চে বললেন রাজনাথ সিং। প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করে রাজনাথ সিং বলেন, তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হবেন মোদী, চতুর্থবারও প্রধানমন্ত্রী হবেন মোদী।
রাজনাথ সিং বলেন, ‘Pok-এর লোকজন নিজেরাই বলছে আমরা ভারতে যেতে চাই। দেখুন ভবিষ্যতে কী হয়।’
‘সেনাবাহিনীর ক্ষমতার নিয়ে কখনও সন্দেহ করবেন না। এটুকু আশ্বস্ত করছি, দেশের মাথা কখনও নীচু হতে দেব না।’, রাহুল গান্ধীকে বার্তা দিলেন রাজনাথ সিং।
চিন প্রসঙ্গে রাজনাথ সিং বলেন, “আমরা কাউকে আক্রমণ করব না, কিন্তু কেউ আমাদের আক্রমণ করলে আমরা ছেড়ে কথা বলব না। এই বার্তা একেবারে স্পষ্ট। ভারত একমাত্র দেশ, যারা অন্য কোনও দেশের এক ইঞ্চি নেয়নি, কারও ওপর আক্রমণও করেনি।”
বিরোধীদের উদ্দেশে রাজনাথ সিং বলেন, ‘ভারত কোনও রাজ্যের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ করেনি কখনও। আমরা কাউকে কোনও ভয় দেখাচ্ছি না। যারা ভুল করবে তাদের জন্য ইডি-তো কাজ করবেই। বিরোধীরা কি চায় যে দুর্নীতি বাড়ুক?’
মন্ত্রী বলেন, কাশ্মীরবাসী বলছে, আগের পরিস্থিতি ফিরে আসছে। শান্ত হচ্ছে কাশ্মীর। তিনি আরও বলেন, বিরোধীরা যখন সেনার শক্তি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে, প্রশ্ন তোলে, তখন সবথেকে খারাপ লাগে।
রাজনাথ সিং বলেন, সন্ত্রাসবাদীদের সুরক্ষা দেয় পাকিস্তান। সন্ত্রাসবাদীদে মদত দেওয়া বন্ধ হলে ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার পথে হাঁটতে পারে। তাঁর মতে, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল রাখা উচিত কারণ প্রতিবেশী কখনও বদলানো যায় না।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রধানমন্ত্রীর গ্রহণযোগ্যতা প্রায় সব দেশের রাষ্ট্রনেতাদের কাছেই আছে। ভারতই পারে শান্তি ফেরাতে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সময়ে মোদীজি যা করেছেন, তা বিশ্বের আর কোনও রাষ্ট্রনেতা করতে পারেননি।” ভারতীয়দের উদ্ধার করতে কীভাবে প্রধানমন্ত্রী পুতিন, জেলেনস্কি ও বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, সে কথা উল্লেখ করলেন রাজনাথ সিং।
যাঁর মধ্যে অহঙ্কার হবে, তিনি কখনও সমাজের চোখে বড় হতে হবে না। তিনি নিজের কাছে বড় হতে পারেন, বললেন, রাজনাথ সিং।
মঞ্চে বক্তব্য পেশ করছেন TV9 ভারতবর্ষ-এর ম্যানেজিং এডিটর পরিতোষ চতুর্বেদী। তিনি জানিয়েছেন, আজ মঞ্চ থেকে অমিত শাহ, রাজনাথ সিং, মল্লিকার্জুন খাড়গে সহ বিশিষ্ট অতিথিরা তাঁদের বক্তব্য পেশ করবেন।
শুরু হল TV9 নেটওয়ার্কের কনক্লেভের তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠান।
সকাল ১০ টা ৫৫ মিনিটে কনক্লেভের রাজনৈতিক আলোচনায় অংশ নেবেন রাজস্থানের কংগ্রেস নেতা প্রমোদ তিওয়ারি ও বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া। ‘২০২৪ মে সত্তা কিসকি হ্যায়’- এই শিরোনামে হবে আলোচনা।
মঙ্গলবার মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি, রামদেব, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, কংগ্রেস নেতা পবন খেরা, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, ছত্তিশগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেব সাই, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান প্রমুখ।
সকাল ৯টা ৫৫ মিনিট থেকে শুরু হবে অনুষ্ঠান। বক্তব্য রাখবেন TV9 নেটওয়ার্কের সিইও তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর বরুণ দাস। এরপর একে একে বিশিষ্ট অতিথিরা বক্তব্য পেশ করবেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে।
নীচের লিঙ্কে রইল সেই সূচি…
শাসক থেকে বিরোধী, হোয়াট ইন্ডিয়া থিঙ্কস টুডে-তে এক মঞ্চে সবাই