
পটনা: অনুপ্রবেশকারীদের জন্য লাল গালিচা পাতা রয়েছে। অনুপ্রবেশ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে ঠিক এই ভাষাতেই বিঁধলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, “গুজরাট, রাজস্থান, অসমে অনুপ্রবেশ হয় না কারণ সেখানে বিজেপি সরকার আছে। পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশকারীদের ভোট ব্যাঙ্কের জন্য স্বাগত জানানো হয়।”
পশ্চিমবঙ্গ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার চলে যাওয়ার পর এবং বিজেপি সরকার আসার পরেই রাজ্য অনুপ্রবেশমুক্ত হবে বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে বলেন যে তিনি (মমতা) মনে করেন তিনি সংবিধানের ঊর্ধ্বে। ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি নিয়েও চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন।
পটনায় এবিপি নিউজের আয়োজিত কনক্লেভে যোগ দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে তাঁকে বলা হয় যে বিরোধীদের অভিযোগ দেশে অনুপ্রবেশ হচ্ছে এবং অনুপ্রবেশ বন্ধ করার দায়িত্ব নরেন্দ্র মোদী সরকারের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে তাঁকে নিতে হবে এই অনুপ্রবেশের। জানতে চাওয়া হয় এমন কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের যাতে ভবিষ্যতে অনুপ্রবেশ না হয়। এই প্রশ্নের উত্তরে অমিত শাহ বলেন, “যারা বাংলাদেশের বা কাশ্মীর, পঞ্জাবের সীমান্ত দেখেছেন, তারা জানেন যে এই সীমান্তগুলি পটনার সোজা পথ নয়। সেখানে বড় বড় নদী রয়েছে, ঘন জঙ্গল রয়েছে, পার্বত্য এলাকা রয়েছে, যেখানে কাঁটাতার লাগানো সম্ভব নয়। ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করাও সম্ভব নয়। বর্ষার সময়ে গঙ্গা এমনভাবে বয়ে যায় যে নজরদারি বোটও ভেসে চলে যায়। দিল্লিতে বসে এইসব কথা বলে, কখনও সীমান্তে গিয়ে দেখুক।”
এরপরই তিনি বলেন, “অনুপ্রবেশকারীরা প্রথমে কোথায় যায়? কোনও গ্রামেও যদি যায়, তাহলে পাটওয়াড়ি (জমি রেকর্ড অফিসার) বা পুলিশ স্টেশনে কি খবর আসবে না যে নতুন ২৫ জন এসেছে? পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশ হচ্ছে কারণ সেখানে পাটওয়াড়ি ও পুলিশ স্টেশনে বলা রয়েছে যে এদের লাল কার্পেটে স্বাগত জানাও কারণ এরা ভোট ব্যাঙ্ক।”
আগামী ২০২৬ সালেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যের ভোটারদের উদ্দেশে অমিত শাহ বলেন, “কেন গুজরাট, রাজস্থান থেকে অনুপ্রবেশ হয় না? অসমে অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়েছে? কারণ সেখানে বিজেপি সরকার রয়েছে। আমি তো বাংলার ভোটারদেরও বলব যে অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে চাইলে দিদির সরকার ফেলে দিন, আমরা অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দেখাব।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রাজ্যে ভোটার তালিকায় নিবিড় পরিমার্জন বা এসআইআর হতে দেবেন না বলেছিলেন, সে বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে অমিত শাহ বলেন, “ওঁ (মমতা) এইসব কথা বলেন কারণ নিজেকে সংবিধানের ঊর্ধ্বে ভাবেন। আমরা সংবিধানের চার কোণার অধীনেই থাকি।”