‘সকালেও জানতাম না যে বিকেলে ইস্তফা দেব’, মুখ খুললেন দীনেশ ত্রিবেদী

'ভারত আজ বিশ্বের দরবারে পরিচিতি পেয়েছে', মোদী সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করে বললেন দীনেশ ত্রিবেদী

'সকালেও জানতাম না যে বিকেলে ইস্তফা দেব', মুখ খুললেন দীনেশ ত্রিবেদী
মোদী সরকারের ভূয়সী প্রশংসা দীনেশ ত্রিবেদীর মুখে
Follow Us:
| Updated on: Feb 13, 2021 | 7:22 PM

নয়া দিল্লি: রাজ্যসভায় আচমকা ইস্তফা। জল্পনা যতই থাকুক, শুক্রবার রাজনৈতিক মহলকে বেশ কিছুটা চমক দিয়েই সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন দীনেশ ত্রিবেদী। তৃণমূল নেতারা বলছেন, আগে কোনও ক্ষোভের কথা সে ভাবে জানাননি তিনি। তাহলে হঠাৎ কী এমন হল? ২৪ ঘণ্টা পেরিয়েও প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। শনিবার সেই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন তৃণমূলের এই প্রাক্তন সাংসদ।

আচমকা কেন ইস্তফা দিলেন তিনি? এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে দিনেশ ত্রিবেদী বলেন, “বৃষ্টি কিংবা বজ্রপাত কখনও আচমকা হয় না। যে কোনও ঘটনার পিছনেই একটা প্রক্রিয়া থাকে। গত কাল সকালেও আমি জানতাম না যে বিকেলে আমি ইস্তফা দেব, তবে মনের মধ্যে প্রক্রিয়াটা চলছিলই।” অর্থাৎ দলের সঙ্গে সংঘাত যে চলছিল, সেই ইঙ্গিত তাঁর কথায় স্পষ্ট।

আরও পড়ুন: ফের রাজ্যে আসছেন মোদী, উদ্বোধন করবেন দক্ষিণেশ্বর মেট্রোর

সংঘাতের সূত্রপাত যদিও কয়েক বছর আগে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে ঠিক কী হয়েছিল, তা তেমন ভাবে প্রকাশ্যে আসে নি। তবে তৃণমূলের উপর ক্ষোভ কিসের? দীনেশের জবাব,“বাংলা জুড়ে শুধুই দুর্নীতি আর হিংসা। সেই বাংলার শাসন ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। আর তৃণমূলের সাংসদ হয়ে আমি কিছুই করতে পারছি না। তাহলে পদে বসে থেকে আমার কী লাভ?” তাঁর দাবি, তিনি চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু পারেননি। অর্থাৎ দুর্নীতি বা হিংসাত্মক ঘটনার বিরুদ্ধে মুখ খুলেও তিনি কিছু করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।

শনিবারও তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে বিজেপি তথা মোদী সরকারের প্রশংসা। তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বেও ভারত বিশ্বের দরবারে পৌঁছেছে। বিজেপির নেতৃত্বে দেশের মানুষও আশা দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “দেশ উন্নয়নের পথে হাঁটছে। আমরা এমন একটা সময়ের দিকে এগোচ্ছি, যাকে মানুষ ভারতের যুগ বলবে।” তিনি মনে করেন, সাম্প্রতিককালে ভারতে ডিজিটাল বিপ্লব সহ অনেক উদ্ভাবনী কাজ হচ্ছে। এখন ভারতে বিনিয়োগ করতে অনেকেই আগ্রহী হন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

বিজেপি নেতারা তাঁকে যেভাবে দলে স্বাগত জানিয়েছেন, তাতে আপ্লুত দীনেশ ত্রিবেদী। তবে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন কিনা, সেই বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেননি তিনি।

এ দিন জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। জানান, তিনি ওই হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, কিন্তু দল তাঁর বিরুদ্ধে গিয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও তাঁকে চুপ করিয়ে দিয়েছে দল। হিংসাত্মক পরিস্থিতিতে ভয় তৈরি হয়েছে, তাই কেউ মাথা উঁচু করে চলতে পারছেন না বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ দিন বার্তা দিয়েছেন দীনেশ ত্রিবেদী।

শুক্রবার রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখতে উঠেই পদত্যাগের ঘোষণা করেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, “এখানে থেকে কোনও কাজ করা যাচ্ছে না, দম বন্ধ হয়ে আসছে।” অধিবেশন চলাকালীন বক্তব্য রাখতে উঠে তিনি বলেন, “আমি বেশি সময় নেব না। দুই মিনিটের মধ্যেই আমার বক্তব্য শেষ করব। আমি মনের কথা অনুসরণ করে এগোচ্ছি। আমার মতে কাজ না করার থেকে পদত্যাগ করাই শ্রেয়।”

ত্রিবেদীর পদত্যাগের ঘোষণার পরই প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “দীনেশের পদত্যাগে আমি দুঃখিত। ওনার ক্ষোভের বিষয়ে আগে কোনও কথা স্পষ্টভাবে বলেননি। তবে ভোটের আগে এভাবে ইস্তফা দেওয়া ঠিক হল না।”