B C Roy Hospital Child Death: আজও মৃত্যু ৩ শিশুর, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বাংলায় এল জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন
B C Roy Hospital: জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ ও সরকারি হাসপাতালগুলি থেকে যখন শিশুগুলিকে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে, তখন পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে।
কলকাতা: বাড়ছে উদ্বেগ। রাজ্যে অব্যাহত শিশু মৃত্যু। বৃহস্পতিবারই রাজ্যের দুই হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তিন শিশুর। গত এক মাসে রাজ্যে কার্যত শিশু মৃত্যুর (Child Death) মিছিল দেখা গিয়েছে। তার কারণ খতিয়ে দেখতে এবার রাজ্যে এল জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। বি সি রায় শিশু হাসপাতালের (B C Roy Child Hospital) পাশাপাশি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ (Kolkata Medical College Hospital) পরিদর্শন করবেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের সদস্যরা। বুধবারও রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে তিন শিশুর। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বি সি রায় শিশু হাসপাতালে দুই ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার শহরের তিনটি শিশু হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় ও সদস্য অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তিনি দাবি করেছেন, সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোনও অভিযোগ নেই। অথচ বৃহস্পতিবার সকালে ন’মাসের রুদ্রাংশু কুমারের মৃত্যু রাজ্যের বক্তব্যের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেই দিয়েছে।
যদিও চিকিৎসক মহলের একাংশের বক্তব্য, শিশু মৃত্যুর হার রোখা সম্ভব হচ্ছে না, তার অন্যতম একটি কারণ হল ‘রেফার রোগ’। জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ ও সরকারি হাসপাতালগুলি থেকে যখন শিশুদের স্থানান্তরিত করা হচ্ছে, তখন পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। এমন শারীরিক অবস্থায় শিশুদের বি সি রায় শিশু হাসপাতাল কিংবা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে, তাতে জরুরি বিভাগে সঠিক চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে তারা। গ্রাম কিংবা জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসার ধকলও সইতে পারছে না অসুস্থ শিশুরা।
চিকিৎসক মহলের কী বক্তব্য, কী বলছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা?
এক স্বাস্থ্য অধিকর্তা অবশ্য দাবি করছেন, শিশু মৃত্যুর হার খুব যে একটা বেশি হয়েছে, তা বলা যাবে না। তাঁর কথায়, “শিশু মৃত্যু তো আমরা বন্ধ করতে পারিনি। প্রতিদিন তিনটে মৃত্যুর জায়গায় গড় চারটে হয়েছে। খুব যে মৃত্যু বেড়েছে সেটাও নয়।” তবে তিনি এটাও স্বীকার করেছেন, “রেফারটা আগে যতটা হয়েছে, ততটা এখন হয় না। আমরা জেলাতেও অনেক বেড চালু করেছি। মনিটর রয়েছে, ভেন্টিলেটর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা করোনা মোকাবিলা করেছি, এটাও করব।”
কিন্তু কী বলছেন বিসি রায় হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও এমএসভিপি? তাঁর বক্তব্য, “গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে কিছুটা হলেও পরিস্থিতি থিতু হয়েছে। কিন্তু নেমে যাওয়ার গ্রাফটা এখনও পাইনি। শিশুভর্তির হারও অনেকটাই কমেছে। আশা করছি আগামী দিনে পরিস্থিতি ঠিক হবে। আজই মিনাখাঁ থেকে একটা বাচ্চাকে নিয়ে এসেছে, ওকেও ধকলটা নিতে হয়েছে। এই ব্যাপারগুলো এখনও রয়েছে।”
অর্থাৎ চিকিৎসকদের একটাই বক্তব্য, জেলা থেকে শিশুদের স্থানান্তরিত করার আগে যাতে তাদের শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল করে পাঠানো হয়। না হলে যাত্রাপথের ধকল বাচ্চাগুলো সইতে পারছে না। এবার কেন্দ্রের তরফ থেকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা পরিস্থিতি পরিদর্শনের পর কী বলেন, সেটাই দেখার।