Kudghat: ‘ম্যানহোল নয়, নতুন পাইপলাইন বসাতে গিয়ে মৃত্যু,’ কুঁদঘাট-কাণ্ডে আদালতে দাবি সরকারের!

Kudghat Manhole Death Case: গত ফেব্রুয়ারি মাসের শীতের কলকাতা। কুঁদঘাট (Kudghat) পাম্প হাউসের কাছে ম্যানহোলে (Manhole) কাজ করতে নেমে অসুস্থ হয়ে পড়েন কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation ) চার কর্মী। তাঁদের মধ্যে দু'জনকে এসএসকেএম বাকি দু’জনকে বাঘাযতীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু কাউকেই বাঁচানো যায়নি।

Kudghat: 'ম্যানহোল নয়, নতুন পাইপলাইন বসাতে গিয়ে মৃত্যু,' কুঁদঘাট-কাণ্ডে আদালতে দাবি সরকারের!
সেদিন ম্যানহোল থেকে কর্মীদের উদ্ধার কাজে দমকল। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 29, 2021 | 1:52 PM

কলকাতা: গত ফেব্রুয়ারি মাসের শীতের কলকাতা। কুঁদঘাট (Kudghat) পাম্প হাউসের কাছে ম্যানহোলে (Manhole) কাজ করতে নেমে অসুস্থ হয়ে পড়েন কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation ) চার কর্মী। ম্যানহোলে কাজ করতে নেমে তাঁরা তলিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে এসএসকেএম বাকি দু’জনকে বাঘাযতীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু কাউকেই বাঁচানো যায়নি। তবে রাজ্য সরকারের দাবি, ম্যানহোলে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হয়নি চার শ্রমিকের! বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) এক মামলার শুনানিতে এমনই দাবি করলেন রাজ্যের তরফে আইনজীবী অমিতেশ ব্যানার্জি।

কুঁদঘাটে ম্যানহোলে কাজ করতে গিয়ে শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করেছিল মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর (APDR)। তবে এদিন আদালতে কার্যত তা মানতেই চাইল না রাজ্য সরকার (West Bengal Government)। সরকারি আইনজীবীর দাবি, ম্যানহোল নয়, নতুন পাইপলাইন বসাতে গিয়েই চার শ্রমিকের দুর্ভাগ্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছে। তিনি সওয়াল করেন, মৃত্যুর ঘটনা অবশ্যই দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু ম্যানহোল নয়, নতুন পাইপলাইন বসাতে গিয়েছিলেন ওই কর্মীরা।

উল্লেখ্য, কলকাতা পুরসভার ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে কুঁদঘাট পাম্প হাউসের কাছে সেদিন ম্যানহোলের পুরনো ও নতুন পাইপ সংযুক্তিকরণের কাজ চলছিল। প্রথমে তিনজন শ্রমিক ম্যানহোলে নেমেছিলেন বলেই অভিযোগ ওঠে। জানা যায়, তাঁদের তলিয়ে যেতে দেখে ম্যানহোলে রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়ে থাকা আরও এক জন শ্রমিক নামেন, কিন্তু তিনিও ভেসে যান। দীর্ঘক্ষণ সহকর্মীদের উঠতে না দেখে বাকি কর্মীরা ততক্ষণে দমকলে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু দমকল দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করেও তাঁদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালানোর পর ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়। কিন্তু চারজন কর্মীরই মৃত্যু হয়।

এদিকে ম্যানহোলে নেমে কাজ করা আইনত নিষিদ্ধ। ২০১৩ সালের এই আইনকে হাতিয়ার করে এবং আদালতের রায়ের উদাহরণ টেনে মামলা করে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর (APDR)। সেই মামলার শুনানিতে এদিন ম্যানহোলে শ্রমিক নামার ঘটনা কার্যত অস্বীকার করল সরকারি পক্ষ। দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর রাজ্যের কাছে এদিন হলফনামা চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ২২ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের এজলাসে রয়েছে মামলার পরবর্তী শুনানি।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ‘প্রহিবিশন অফ এমপ্লয়মেন্ট অ্যাজ় ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জারস অ্যান্ড দেয়ার রিহ্যাবিলিটেশন বিল’ পাশ হয়। যা পরবর্তীতে আইনে পরিণত হয়েছে। সেই আইন অনুযায়ী, নর্দমা, পয়ঃপ্রণালী পরিষ্কার করা পেশায় যুক্ত কাউকে ম্যানহোলে নামিয়ে কাজে নিযুক্ত করলে ওই নিযুক্তকারী ব্যক্তির (বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঠিকাদার) পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। একই সঙ্গে ম্যানহোল বা সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে কাজ করার কাজে যুক্ত সাফাইকর্মী ও তাঁদের পরিবারের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও আইনে উল্লেখ করা হয়। যদিও আইন রয়েছে খাতায়-কলমে, রাজ্য তথা দেশজুড়ে ম্যানহোলে নেমে শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা একাধিকবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে।

আরও পড়ুন: Baguiati: আর কটা মৃত্যু হলে হুঁশ ফিরবে? শহরের ‘মরণফাঁদের’ খবর নেই মন্ত্রীর কাছে