Baguiati: আর কটা মৃত্যু হলে হুঁশ ফিরবে? শহরের ‘মরণফাঁদের’ খবর নেই মন্ত্রীর কাছেও
Kolkata Street: এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই সমস্যা একদিনের নয়, দীর্ঘদিনের। পুর প্রশাসন বা বিদ্যৎ দফতরের তৎপরতার অভাব রয়েছে বলেও অভিযোগ।
বাগুইহাটি: জলা জলে পড়ে থাকা বিদ্যুতের তারেই তৈরি হয় মরণফাঁদ। দিন কয়েক আগেই দমদমে এমনই এক মৃত্যুফাঁদে প্রাণ হারিয়েছেন দুই তরতাজা কিশোরী। জমা জলের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় মৃত্যু হয় তাঁদের। সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও বলা হয়। কিন্তু, সদ্য ঘটে যাওয়া সেই মর্মান্তিক ঘটনাতেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের। বাগুইহাটিতে (Baguiati) গিয়ে দেখা গেল, রাস্তায় জমে আছে হাঁটু জল। আর রাস্তার পাশে থাকা ট্রান্সফরমার খোলা অবস্থায় রয়েছে, জলের মধ্যে পড়ে বিদ্যুতের তার। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেখান দিয়েই যাতায়াত করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশাসনের তরফে নেই কোনও উদ্যোগ। এমন কোনও খবর তাঁর কাছে নেই বলেই জানিয়েছেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু (Sujit Bose)।
মঙ্গলবার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে কলকাতা সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গে। শহরের অনেক জায়গাতেই জমেছে জল। তবে বাগুইহাটিতে গিয়ে যে দৃশ্য দেখা গেল, তা রীতিমতো আতঙ্কের। একটি নয়, এলাকায় পরপর চারটি ট্রান্সফরমার খোলা। এলাকার বাসিন্দা মানস দাস জানান, এই এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা এতটাই খারাপ যে বাড়িতে কোমর অবধি জল ঢুকে যায়। এ ভাবেই থাকতে হয় বাসিন্দাদের। গত কয়েকদিন আগে যে বৃষ্টি হয়েছিল, সেই সময় ট্রান্সফরমার জলের তলায় ডুবে ছিল। তিনি আরও বলেন, ‘খাল সংস্কার হয়নি। শুধু আইওয়াশ হয়। আমরা সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী। খাল বুজিয়ে বহুতল হচ্ছে।’ দুই কিশোরীর মৃত্যুর পরও প্রশাসনের তরফে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে বিধাননগর পৌরনিগমের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর অনিতা বিশ্বাস বলেন, ‘এই এলাকার পাশ দিয়ে গিয়েছে বিবি চ্যানেল ওয়ান খাল। কিন্তু বাগজোলা খানের জলের স্তর উঁচুতে হওয়ায় জল বের করতে সমস্যা হচ্ছে।’ তাঁর আশ্বাস বড় পাম্প বসানোর পরিকল্পনা আছে। তাঁর দাবি, তিনি উদ্যোগ নিয়ে খাল কাটিয়েছিলেন। তবে খাল কাটাতে গেলে খালের ধারে থাকা বিল্ডিং ভেঙে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। কেন এ ভাবে জমা জলে পড়ে খোলা ট্রান্সফরমার? এই বিষয়ে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এমন কোনও খবর নেই। আমি কোনও মন্তব্য করব না।’
গত ২২ সেপ্টেম্বর বিদ্যৎস্পৃষ্ট হয়ে দমদমে মৃত্যু হয় দুই কিশোরীর। দমদমের বান্ধবনগরের বাসিন্দা দুই ছাত্রী প্রাইভেট টিউশন পড়তে যাচ্ছিল। সেইসময় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। অনুষ্কার ও স্নেহা নামে দুই কিশোরীর মৃত্যু হয়। গাড়ি থেকে ছিটিয়ে আসা জল থেকে বাঁচতে গিয়ে ড্রেনে পড়ে যায় স্নেহা। ল্যাম্পপোস্ট ধরে ওঠার চেষ্টা করতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তার। সাহায্যের জন্য বন্ধুর দিকে হাত বাড়ায় অনুষ্কা। কয়েক মুহূর্তেই সব শেষ। এই ঘটনার পর সাংসদ-মন্ত্রী, পুরসভার চেয়ারম্যান সহ অনেকেই যান ওই দুই ছাত্রীর বাড়িতে। ২ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের আশ্বাসও দেওয়া হয়। কিন্তু সন্তানহারা মা বলেন, ‘আমি জায়গা জমি বাড়ি বিক্রি করে ৪ লক্ষ টাকা দিচ্ছি। আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দিন।’ এত কিছুর পরও ফের সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।