Scheduled Caste students: লাটে পড়াশোনা! তফসিলি জাতির পড়ুয়াদের ভর্তির তথ্যে বাড়ছে উদ্বেগ
Scheduled Caste student: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মৃন্ময় প্রামাণিক বলেন, "আলিপুরদুয়ারের টোটোপাড়াতে বেশ কয়েকবছর ধরে কাজ করছি। ২০২২ সালের অগস্ট ওখানে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত যে স্কুল রয়েছে, সেখানে পড়ুয়া সংখ্যা ছিল ৩০০-র বেশি। এবছর অগস্টে গিয়ে দেখি, ছাত্রসংখ্যা ১২০-র মতো। আমি জানতে চাইলাম, ছাত্রসংখ্যা কমছে কেন? তারা বলল, ছাত্ররা সবাই কাজে চলে যাচ্ছে।"

কলকাতা: বাংলায় সরকারি চাকরি? প্রশ্ন শুনে কেউ হাসলেন। কেউ বললেন, বাংলায় সরকারি চাকরির সুযোগ কমছে। সরকারি চাকরির সুযোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু, পড়াশোনা? রাজ্যে কি পড়ুয়ার সংখ্যাও কমছে? উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এল তফসিলি জাতির পড়ুয়াদের সংখ্যা নিয়ে। রাজ্যে ক্রমশ কমছে তফসিলি জাতির পড়ুয়াদের সংখ্যা।
পরিসংখ্যান বলছে, সার্বিক ভর্তির সংখ্যা বাড়লেও তফসিলি জাতির পড়ুয়াদের ভর্তির সংখ্যা ক্রমশ কমছে। পড়াশোনা থেকে কি মন সরছে প্রান্তিক পড়ুয়াদের? গবেষণা বলছে, তফসিলি পডুয়াদের ৩৫ শতাংশই কৃষিকাজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। এর মধ্যে আবার ১৭ শতাংশ সম্পূর্ণরূপে কৃষিকাজে যুক্ত।
প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে তফসিলি পড়ুয়াদের ভর্তি কমছে-
২০১১-১২ সালে প্রাথমিকে তফসিলি পড়ুয়াদের ভর্তির সংখ্যা ছিল ২৭ লক্ষ ২১ হাজার ৪৬০। ২০২০-২১ সালে সেটাই কমে হয় ২০ লক্ষ ৬৬ হাজার ২৯৭। আবার ২০১১-১২ সালে উচ্চ প্রাথমিকে তফসিলি পড়ুয়াদের ভর্তির সংখ্যা ছিল ১৩ লক্ষ ১৭ হাজার ৮৩৪। ২০২১-২২ সালে তা কমে হয় ১০ লক্ষ ৫৩ হাজার ৮২২।
এদিকে, ২০২৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে তফসিলি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ৮ হাজার। সেখানে ২০২৫ সালে উচ্চমাধ্যমিকে তফসিলি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। এবার উচ্চমাধ্যমিকে তফসিলি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ১২ হাজার।
কেন কমছে তফসিলি পড়ুয়ার সংখ্যা?
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মৃন্ময় প্রামাণিক বলেন, “আলিপুরদুয়ারের টোটোপাড়াতে বেশ কয়েকবছর ধরে কাজ করছি। ২০২২ সালের অগস্ট ওখানে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত যে স্কুল রয়েছে, সেখানে পড়ুয়া সংখ্যা ছিল ৩০০-র বেশি। এবছর অগস্টে গিয়ে দেখি, ছাত্রসংখ্যা ১২০-র মতো। আমি জানতে চাইলাম, ছাত্রসংখ্যা কমছে কেন? তারা বলল, ছাত্ররা সবাই কাজে চলে যাচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে সিকিম কিংবা অন্য কোথাও যাচ্ছে। তার কারণ, তারা দেখছে, তাদের পাড়ায় যারা এমএ পাশ করেছে, তারা বসে রয়েছে। যদি ওরা চাকরি পেত, অন্যরা দল বেঁধে পড়তে আসত। কিন্তু, এখন পড়তে আসছে না।”
শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, “সার্বিক আগ্রহ কমেছে। আদিবাসীদের আগ্রহ বেশি কমেছে। আমাদের রাজ্যে শিক্ষা বিপর্যয় চলেছে।” রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে নাট্যকার চন্দন সেন বলেন, “২ কেজি চাল থেকে শুরু করে যেসব শ্রীগুলো আসে, সেই শ্রীতে চলে যায়। সুতরাং তারা কেন স্কুলে পড়তে যাবে?”
পড়ুয়াদের সংখ্যা কমায় রাজ্য সরকারকে দুষলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, “স্কুলে যাওয়ার বয়সে কোনও ছেলেমেয়ে স্কুলের বাইরে থাকবে না। এটা করে দেখিয়েছে কেরল সরকার। আর পশ্চিমবঙ্গে গরিব, প্রান্তিক মানুষের স্কুলছুট বাড়ছে।” শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার কথা তুললেন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী।
