কলকাতা: রামপুরহাট হত্যাকান্ডে প্রতিবাদের আঁচ এবার বিধানসভায়। ওয়াক আউট করলেন বিজেপি বিধায়করা। বিজেপির দাবি, রামপুরহাট হত্যাকান্ডের জবাব দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধূলিসাৎ। বিধানসভায় মঙ্গলবার বিষয়টির উত্থাপন করেন বিজেপির শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তিনি রামপুরহাট ইস্যুতে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু স্পিকার তাতে কোনওভাবেই কর্ণপাত করছিলেন না। এই ঘটনা নিয়ে শঙ্কর ঘোষ বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাব দাবি করেন। কিন্তু সেটিও শুনতে দেখা যায়নি স্পিকারকে। এরপরই ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়করা। বিধানসভার সামনে বসেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, সাম্প্রতিককালে বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ‘গণহত্যা’র ঘটনা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর তরফে কোনও বিবৃতি আসেনি। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফ থেকেও কেন কোনও বিবৃতি আসেনি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি বিধায়করা। এই ধরনের ঘটনাই প্রমাণ করছে, রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি কতটা হয়েছে।
বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গার কথায়, “জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে রাজ্যের সাধারণ মানুষ যে সুরক্ষিত নন, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গিয়েছে বীরভূমের রামপুরহাটের এই ঘটনায়। জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। পুরুলিয়া-ঝালদার খুন, তারপর উপপ্রধানকে খুন, তারই প্রতিবাদে ওয়াক আউট। মুখ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগ করতে হবে।”
অন্যদিকে, সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, “এর দায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে। ভোটের দিন খুনোখুনি হল, বুথ দখল হল…তৃণমূলের এমপি, এমএলএ, গন্ডাদের এসব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের পাশ থেকে উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুনের অভিযোগ ওঠে। তারপরই মঙ্গলবার সকালে প্রকাশ্যে আসে আরও বিস্ফোরক ঘটনা। রামপুরহাটের বগটুইয়ে ১০ জনের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুড়িয়ে মারা হয়েছে তাঁদের। সোমবার রাতভর চলেছে তাণ্ডব। একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সোমবার রাতেই তিনটি দেহ উদ্ধার হয় বলে খবর। বাকি সাতটি উদ্ধার হয় মঙ্গলবার। ছোটো আঙারিয়ার পর রাজ্য রাজনীতিতে সাড়া ফেলে দিয়েছে রামপুরহাটের এই গ্রাম।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের উপপ্রধান ‘খুন’, বগটুই গ্রাম থেকে উদ্ধার ১০ অগ্নিদগ্ধ দেহ