BC Roy Child Hospital: সময়ে মিলল না রক্ত, ক্ষতিগ্রস্ত ৮ দিনের শিশুর মস্তিষ্কের টিস্যু
BC Roy Child Hospital: TV9 বাংলার প্রতিনিধি বিষয়টি জানান স্বাস্থ্য ভবনে। ফোন করেন স্বাস্থ্য সচিবকেও। তখন শুরু হয় তৎপরতা। সকাল ১০টায় টিভি নাইনের হস্তক্ষেপে এম আর বাঙুরে রক্তের ব্যবস্থা করা হয়। ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।
কলকাতা: অ্যাডিনো ভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেও ২৪ ঘণ্টা ব্লাড ব্যাঙ্ক পরিষেবা চালু নেই। রাত ভর শহরের ৬ টি ব্লাড ব্যাঙ্কে ঘুরেও মিলল না রক্ত। শুধু তাই নয়, নমুনার গ্রুপিং পর্যন্ত হয়নি। রক্ত পেতে দেরি হওয়ায় জন্ডিসে আক্রান্ত আট দিনের সদ্যোজাতের মস্তিষ্কে বিলুরুবিন পৌঁছে যায়। যার জেরে ব্রেন টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আবার প্রশ্নের মুখে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা। সময়ে মেলেনি রক্ত। বিলুরুবিন বাড়তে বাড়তে মস্তিষ্কের টিস্যুতে পৌঁছে গিয়েছে। আটদিনের সদ্যোজাতের মস্তিষ্কের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার দায় কার? বৃহস্পতিবার এই প্রশ্নই তুলে দিল বি সি রায় শিশু হাসপাতালের ঘটনা।
বুধবার রাতে জন্ডিসে আক্রান্ত আটদিনের সদ্যোজাতকে বনগাঁ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে আনা হয়। রাতেই পরিজনের হাতে রক্তের নমুনা ধরিয়ে দ্রুত রক্ত জোগাড় করে আনতে বলেন চিকিৎসকেরা। অভিযোগ, বিসি রায় শিশু হাসপাতাল থেকে গ্রুপিং পর্যন্ত করে দেওয়া হয় না রক্তের। বিসি রায় শিশু হাসপাতালে রয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্ক। তা খোলা থাকে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যায় ৭টা পর্যন্ত। তাই রাতে বিসি রায় শিশু হাসপাতাল থেকে মিলল না রক্ত। এরপর পরিজনরা রক্তের নমুনা নিয়ে শহরের আরও ৬টি ব্লাড ব্যাঙ্কে ঘোরেন। অভিযোগ, কোনও একটি জায়গাতেও ওই নমুনা দেখে গ্রুপিং করে জানিয়ে দেওয়া হল না, এই সদ্যোজাতর কোনও গ্রুপের রক্ত লাগবে। পরদিন দুপুর একটা পর্যন্ত জোগাড় করা যায়নি রক্ত! শিশুটির পরিবারের এক সদস্য বলেন, “স্যাম্পেলটা নিয়ে ঘুরেছি। কিন্তু কোথাও গ্রুপ পর্যন্ত দেয়নি। এখানে এসে বলেছি, অন্তত বাচ্চাটার গ্রুপটা বলে দিন। ওরা বলল, আমরা কীভাবে বলব। বলছে আপনারা যেখান থেকে হোক রক্ত নিয়ে আসুন, আমরা দিয়ে দেব। আমরা কাল রাত পুরো কলকাতা ঘুরেছি।”
TV9 বাংলার প্রতিনিধি বিষয়টি জানান স্বাস্থ্য ভবনে। ফোন করেন স্বাস্থ্য সচিবকেও। তখন শুরু হয় তৎপরতা। সকাল ১০টায় টিভি নাইনের হস্তক্ষেপে এম আর বাঙুরে রক্তের ব্যবস্থা করা হয়। ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। সময়ে রক্ত না পেয়ে সদ্যোজাতর মস্তিষ্কের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। বিলুরুবিন সদ্যোজাতের মস্তিষ্কের টিস্যুতে পৌঁছে গিয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যে রোগের নাম ‘কার্নিকটেরাস’। এর ফলে যে সকল ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা তা হল
শ্রবণ-দৃষ্টি শক্তির হ্রাস ব্যহত হতে পারে মস্তিষ্কের বিকাশ দাঁতেরও ক্ষতির সম্ভাবনা
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে অ্যাডিনো আতঙ্কে গোটা রাজ্যে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেখানে কীভাবে রক্তের অভাবে এতক্ষণ শিশুটি পড়ে থাকল বিসি রায় শিশু হাসপাতালে?
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, “সদ্যোজাত অনেক বাচ্চার জন্ডিস হয়। অনেক সময় জন্ডিস স্বাভাবিকের থেকে একটু বেশি হয়। ফটোথেরাপি দিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। যদি মাত্রা ২০-২১ হয়ে যায়, তাহলে জন্সিস মাথায় উঠে যায়। সেটা বাচ্চাদের জন্য খুবই খারাপ। রক্ত বদলাতে হয় দ্রুত।”