কলকাতা: নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাস্ত হয়ে ভবানীপুরে লড়তে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বস্তুত, তাঁর কুর্সি টিকিয়ে রাখার জন্যই এই ভোটে লড়তে হচ্ছে তৃণমূল নেত্রীকে। যা নিয়ে বুধবার ফের একবার চরম কটাক্ষের সুর শোনা গেল বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) কণ্ঠে। ঠিক যেদিন থেকে কর্মিসভার মাধ্যমে মমতা ভবানীপুরে ভোট যুদ্ধের (Bhawanipur Bypolls) প্রস্তুতি শুরু করতে মাঠে নামলেন, সেদিনই তাঁকে সতর্ক থাকার ‘পরামর্শ’ দিলেন দিলীপ। মমতা এ দিনের সভা থেকে নিজেকে ‘বাঘ’ বলে অ্যাখা দিলেও বিজেপি রাজ্য সভাপতির খোঁচা, “উনি বাঘ সিংহ না ছাগল, সেটা তো নন্দীগ্ৰামের মানুষই বুঝিয়ে দিয়েছে।”
নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পরও মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চ থেকে পুজো কমিটিগুলির উদ্দেশ্যে ৫০ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান ঘোষণা করেন মমতা। বিজেপির দাবি, এই ঘোষণা নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধির পরিপন্থী। যা নিয়ে গতকালই কমিশনের কাছে নালিশ জানিয়েছিল বিজেপি। দিলীপ এ দিন বিষয়টি বিরোধিতা করে বলেন, “তৃণমূলের কাছ থেকে আমাদের হিন্দুত্ব শিখতে হবে না। কোনও পুজো কমিটি ওঁর কাছে যায়নি। উনিই দান-ধ্যান করছেন, বড় বড় পোষ্টার মন্ডপে লাগাবেন বলে।”
একই সঙ্গে উপনির্বাচনে ভবানীপুরে মমতার ভোটে লড়া নিয়ে দিলীপ পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। তাঁর দাবি, বিজেপি আবারও তৃণমূল সুপ্রিমোকে হারাতে সক্ষম হবেন। বুধবারের কর্মিসভায় দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্য করে মমতাকে বলতে শোনা যায়, “দিদি জিতে যাবে ভেবে ঘরে বসে থেকো না।” সেই প্রসঙ্গ টেনেই দিলীপের কটাক্ষ, “উনি ঠিকই বলেছেন। ওঁর ফৌজ তৈরি হোক। আমরা তৈরি আছি। একবার হারিয়েছি। আবার হারাব। তবে উনি সতর্ক হয়ে বলছেন। এটা একটা ভাল কথা।” ভবানীপুরে গেরুয়া জার্সিতে মমতার চ্যালেঞ্জার কে হবেন সেটা আজ বা আগামিকাল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিল্লি থেকে ঘোষণা করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, কয়লা তদন্তে বুধবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নতুন করে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। লক্ষ্মীবারেই দিল্লির ইডি দফতরে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। যা নিয়ে মমতা যে যারপরনাই ক্ষুব্ধ, তা তিনি লুকিয়ে রাখেননি। কেন্দ্রীয় সরকার রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারছে না বলেই বারবার এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল নেতা কর্মীদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন নেত্রী। এই ইস্যুতেও পাল্টা দিতে ছাড়েননি দিলীপ।
দিলীপের কথায়, “রাজনৈতিকভাবে না পেরেই উনি এই ধরনের কথাবার্তা বলছেন। মমতা ভোটে না জিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। আরেকজন (শুভেন্দু অধিকারী) ওঁকে হারিয়ে বিরোধী দলনেতা। এটা তো মাথায় রাখবে। প্রতিহিংসার কথা উনি বলা উচিত নয়। তবে আমরা জেতার জন্যই ভবানীপুরে নামব। উনি তো লড়াইয়ের সময় ভবানীপুর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। ভোটের ময়দানে আমরা সব দেখে নেব।”
আরও পড়ুন: বিধানসভা পিছু ৮ থেকে ১০ কোম্পানি বাহিনী! ৩ কেন্দ্রের ভোটেও থাকবে বন্দুকধারী আধাসেনা
আরও পড়ুন: ভোট ঘোষণার পরও পুজো অনুদান কেন? রাজ্য সরকারের ব্যাখ্যা চাইল নির্বাচন কমিশন