AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Sukanta Majumder: ‘বিজেপির এত দুরবস্থা হয়নি যে ১ লাখ টাকায় টিকিট বিক্রি হবে!’

BJP: আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ বিজেপির অন্দর থেকে উঠে এসেছে। যে লেনদেনের অভিযোগ করেছিলেন খোদ তথাগত রায়। এই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা রয়েছে কি না তা হয়ত স্পষ্ট নয়, কিন্তু নির্বাচনের আগে এমন অডিয়ো ক্লিপ যে গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়াবে।

Sukanta Majumder: 'বিজেপির এত দুরবস্থা হয়নি যে ১ লাখ টাকায় টিকিট বিক্রি হবে!'
সুকান্ত মজুমদার(ফাইল ছবি)
| Edited By: | Updated on: Nov 15, 2021 | 12:17 AM
Share

কলকাতা: পুরনির্বাচনের প্রাক্কালে দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি (BJP) যুবনেতার চাঞ্চল্যকর অডিয়ো ক্লিপ ফাঁস! সেই কলরেকর্ডে শোনা যাচ্ছে দুই ব্যক্তির মধ্যে কথা হচ্ছে। এক পক্ষ টিকিট প্রার্থী। অন্যজন বিজেপির যুবনেতা প্রীতম সরকার বলে অভিযোগ। যদিও সেই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি  TV9 বাংলা। অভিযোগ, দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি সভাপতি শঙ্কর শিকদারের জ্ঞাতসারে এই কথোপকথন হয়েছে। অভিযোগ আগেই অস্বীকার করেছে বিজেপি। এ বার বিতর্কিত অডিয়ো ক্লিপ নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)।

সুকান্ত এদিন বলেন, “পুরো ঘটনাটাই ভুয়ো। একটা চক্রান্ত করে তৈরি করা। বিজেপির এতটাও খারাপ দিন আসেনি যে  বিজেপিকে ১ লক্ষ টাকায় টিকিট বিক্রি করতে হবে। তারপর প্রার্থী নির্বাচন করতে হবে। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সংযোগ নেই। পুরোটাই ভ্রান্ত। তৈরি করা।”

এরইমধ্যে, এই ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপটি নিয়ে সরাসরি লালবাজারে অভিযোগ দায়ের করলেন খোদ দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি সভাপতি শঙ্কর শিকদার। লালবাজার সাইবার সেল ও বিজেপি সূত্রে খবর,  স্নেহাশীস দত্ত নামে জনৈক এক ব্যক্তির নামেই লিখিত এফআইআর দায়ের করেছেন শঙ্কর। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছেন, স্নেহাশীস নামের ওই জনৈক ব্যক্তি বেহালার বাসিন্দা। সোশ্যাল মিডিয়ায় , বিজেপি নেতাকে উদ্দেশ্য করে এবং তাঁর নামে নানা মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন স্নেহাশীস নাম্নী ওই ব্যক্তি এমনটাই অভিযোগ। শুধু তাই নয়, স্নেহাশীস  নামের ওই ব্যক্তি বিশেষভাবে শঙ্করবাবুর ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন বলেও দাবি করেছেন বিজেপি নেতা। তাই, স্নেহাশীসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি সভাপতি।

ভাইরাল ওই বিতর্কিত অডিয়ো ক্লিপের ঘটনায় যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, সেই বিজেপি যুব নেতা প্রীতম সরকার, সংবাদমাধ্যমে খবর সম্প্রচারের পর থেকেই আর বাড়িতে নেই। তাঁর সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগ করাও সম্ভব হচ্ছে না। প্রীতম স্পষ্টই জানিয়েছেন , তিনি ক্যামেরার সামনে আসতে রাজি নন। এমনকী, বাড়ির থেকেও বেরচ্ছেন না তিনি। ওই বিতর্কিত অডিয়ো ক্লিপ ফাঁস হওয়ার পরেই যদিও প্রীতম বলেছিলেন তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।

ঠিক কী শোনা গিয়েছে অডিয়ো ক্লিপে? ভাইরাল হওয়া ওই অডিয়ো ক্লিপে শোনা গিয়েছে, দুই ব্যক্তির কথোপকথন। অভিযোগ, ওই দুই কণ্ঠস্বরের একটি বিজেপি যুব নেতা প্রীতম সরকারের। অভিযোগ, বিজেপি যুব নেতা বলে দাবি করা ওই কণ্ঠস্বরে শোনা যাচ্ছে, একজন টিকিট প্রার্থীকে বলা হচ্ছে, “প্রতি ক্যান্ডিটেড ১ লাখ টাকা করে অন্তত দাও”, আরও বলা হচ্ছে, “একদম হবে। এবং সেখানে তৃণমূলের সঙ্গে সেটিং করে জেতানোর যতরকম চেষ্টা, সব করা হবে।” পাশাপাশি, টিকিট প্রার্থীর প্রশ্নের উত্তর দিতেও শোনা গিয়েছে। তবে ওই টিকিট প্রার্থী কে তা জানা যায়নি। অডিয়োটির সত্যতা যদিও যাচাই করেনি TV9 বাংলা।

এদিকে ফাঁস হওয়া অডিয়ো ক্লিপটিকে ‘চক্রান্ত’ বলেই দাবি করলেন দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি সভাপতি শঙ্কর শিকদার। তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে আমাকে নিয়ে একটা ফ্লেক্স বানিয়েও এই ধরনের বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। একটা চক্রান্ত করা হচ্ছে। আজ আবার সেই অডিয়ো এল। এরকম প্রীতম সরকারের মতো কত কত প্রীতম সরকার কার্যকর্তা আমার পাশে ঘুরে বেড়ায়। কে কীভাবে কথা বলবে তার দায়িত্ব তো আমি নিয়ে রাখিনি।আমি এরকম ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নই। আমি নিজে এই ধরনের ঘটনার বিরোধী। কেউ যদি এইধরনের কোনও মন্তব্য করে থাকেন, তবে তাঁর উপযুুুক্ত শাস্তি হবে। ”

এখানেই না থেমে শঙ্কর আর বলেন, “যারা মনে করছে বিজেপি পুরভোটে ভাল ফল করবে, তারাই চক্রান্ত করে এই কাজ করেছে। নির্বাচনের আগে যাতে বিজেপির অন্দরে একটা কানাঘুষো তৈরি হয়, তার জন্য এই চক্রান্ত করা হয়েছে। আমাদের বিরোধী দলের নেতারাই কেউ না কেউ করেছে। যাঁরা এটা করছেন তাঁরা বিজেপির ভাল চায় না বলে এই কাজ করেছেন।”

অন্যদিকে, অভিযুক্ত বিজেপি যুব নেতা প্রীতম সরকার বলেন, “গতকাল রাত্রে আমার কাছে অডিয়ো ক্লিপটি আসে। আমার ছবি  ব্যবহার করে কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি আমাদের কালিমালিপ্ত করার জন্য এটা করেছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। কে করেছে জানা নেই। কিছুদিন আগেও আমাদের জেলা সভাপতির নামে এই ধরনের রাতের অন্ধকারে ফ্লেক্স দেওয়া হয়েছে। আমরা আইনের পথেই হাঁটব।”

বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য যদিও জানিয়েছেন, প্রীতম সরকার নামে এই জনৈক নেতা বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন। তার আগে তিনি বিজেপিতে ছিলেন না। ছবিটি প্রীতমের হলেও কণ্ঠস্বরটিও তাঁর কি না তা স্পষ্ট নয় বলেই দাবি শমীকের।

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই ভাইরাল ভিডিয়োটি টুইটারে শেয়ার করা হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, পুরসভা নির্বাচনের আগে কী করে প্রার্থী কেনা হচ্ছা বিজেপির পক্ষ থেকে। ঘটনায়, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “তথাগত রায় নিজেই তো টাকার খেলার কথা বলেছেন। এতে আর নতুন কী রয়েছে। বিজেপি যে টাকা দিয়ে প্রার্থী কেনে এই কথা তো দলের নেতাই বলেছেন।”

কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “অমৃত গাছ তো আর পোঁতা হয়নি, যে অমৃত ফল ফলবে। বাবলা গাছ পোঁতা হয়েছে, তাই বাবলা গাছই ফলবে। জেলা সভাপতি যা বলে, দলের লোক তাই করে। বিজেপি এ বার নিজে বুঝুক, কোথায় তাদের সততা!”

কিন্তু, আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ বিজেপির অন্দর থেকে উঠে এসেছে। যে লেনদেনের অভিযোগ করেছিলেন খোদ তথাগত রায়। এই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা রয়েছে কি না তা হয়ত স্পষ্ট নয়, কিন্তু নির্বাচনের আগে এমন অডিয়ো ক্লিপ যে গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়াবে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

দেখুন ভিডিয়ো:

আরও পড়ুন: আগামী মাসেই বঙ্গ সফরে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব