কলকাতা: পুলিশি নজরদারি এড়িয়ে চুরি ‘ভোট-হিংসা’য় (Post Poll Violence) নিহত অভিজিৎ সরকারের বাড়িতে। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিহত অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার। কলকাতা পুলিশের ডিসির কাছে অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। চুরির মুহূর্তের সেই ছবি ধরা পড়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায়। দিনভর পুলিশের পাহারার পরও কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন বিশ্বজিতের। একই সঙ্গে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।
ঘটনাটি বৃহস্পতিবার রাতের। বিশ্বজিৎ সরকারদের কাঁকুড়গাছির বাড়ির সামনে আপাতত পুলিশি প্রহরা চলছে। এরই মধ্যে দেখা যায় এদিন রাতে এক যুবক একটি ভ্যান নিয়ে বিশ্বজিতের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান। ভ্যান থেকে নামার সময়ই ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নেন আশেপাশে তাঁকে কেউ দেখছে কি না। স্থানীয় বাড়িগুলির রাস্তার দিকের জানলা সে সময় বন্ধই ছিল।
এরপরই দেখা যায়, ওই যুবক চারপাশ দেখে লোহার কিছু একটা পরিত্যক্ত জিনিস নিজের ভ্যানে তুলে নেন। সেটি ভ্যানে তোলার আগেও বেশ কয়েকবার চারপাশটা দেখে নেন তিনি। এদিকে ওই যুবককে দেখে এলাকার দু’টি কুকুরও বেরিয়ে আসে। ডাকতে শুরু করে তারা। সিসিটিভির ফুটেজে তেমনটাই দেখা গিয়েছে। তবে ওই যুবক কিন্তু অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় লোহার পরিত্যক্ত জিনিসটি ভ্যানে তুলে নিয়ে গাড়িটি পিছনের দিকে ঠেলে নিয়ে গলি থেকে বেরিয়ে যান।
এদিকে সেই সময় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীকে একটি চেয়ারে মাথা নিচু করে বসে থাকতে দেখা যায়। রাত ৩টে নাগাদ এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। যদিও চুরির ঘটনাকে খুব একটা বড় করে দেখতে চাইছে না সরকার পরিবার। বরং বিশ্বজিতের বক্তব্য, পুলিশ পাহারায় থাকার পরও যদিও এ ভাবে চুরি হতে পারে, তা হলে তাঁদের উপর রাতের অন্ধকারে হামলার আশঙ্কাও তো উড়িয়ে দেওয়া যায় না! এ নিয়ে ডিসির কাছে অভিযোগও জানান বিশ্বজিৎ সরকার।
কে অভিজিৎ সরকার?
একুশের বিধানসভা ভোটের দিন বিকেলেই পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে কাঁকুড়গাছির অভিজিৎ সরকারকে। গলায় পেঁচানো ছিল তার। পরিবারের দাবি, বিজেপি করার অপরাধেই খুন করা হয় তাঁকে। তারপর থেকে বিচারের আশায় থানা, আদালত সর্বত্রই ছুটেছে পরিবার। ভোটের পর রাজনৈতিক হিংসার পুরো তদন্তভার এখনও সিবিআই-এর হাতে। তদন্তের স্বার্থে প্রায় চার মাস মর্গে পড়েছিল অভিজিতের দেহ। শেষে ডিএনএ রিপোর্টে দেখে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় সম্প্রতি। ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলায় সব থেকে বেশি আলোড়ন হয়েছে এই ঘটনা ঘিরেই। রাজ্য রাজনীতিকে এক নতুন মোড় দিয়েছে অভিজিৎ-হত্যা মামলা।
আরও পড়ুন: বিপদে ভাসছে উত্তরবঙ্গ! আজও দুই শিশুর মৃত্যু মালদহ মেডিক্যালে, জ্বরে এখনও অবধি মৃত ৯