বিপদে ভাসছে উত্তরবঙ্গ! আজও দুই শিশুর মৃত্যু মালদহ মেডিক্যালে, জ্বরে এখনও অবধি মৃত ৯
MIS-C: চিকিৎসকদের দাবি, বেশিরভাগই নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত। এছাড়াও রয়েছে মিস-সি'র প্রকোপ।
মালদহ: শিশু মৃত্যুর কারণ জানতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে বিশেষ কমিটি গঠন করল মালদহ জেলা স্বাস্থ্য দফতর। চিকিৎসকদের দাবি, রোগ চিহ্নিত করা হয়েছে। বেশিরভাগই নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত। এছাড়াও রয়েছে মিস-সি’র (Multisystem Inflammatory Syndrome, MIS-C) প্রকোপ। তবে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখনও গুরুতর অসুস্থ আরও ১০ জন শিশু। এই নিয়ে গত তিনদিনে মোট পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সকলেরই জ্বর, শ্বাসকষ্টের উপসর্গ ছিল। অন্যদিকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে এখনও অবধি চার শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, মোট ১৬৪ জন শিশু ভর্তি রয়েছে এখানে। যদিও বেডের সংখ্যা ১২০। ফলে একই বেডে একাধিক শিশুকে রাখতেই হচ্ছে। অর্থাৎ এ কথা স্পষ্ট, যত দিন এগোবে বেডের অভাব একটা বড় সঙ্কট হয়ে উঠবে।
উত্তরবঙ্গের জেলা জলপাইগুড়ি থেকে শুরু হলেও অজানা জ্বরের প্রকোপ ইতিমধ্যেই বাকি জেলাগুলিতেও ছড়াতে শুরু করেছে। শুধু উত্তরেই নয়, দক্ষিণবঙ্গেও এখন পরিস্থিতি উদ্বেগের। বেশ কিছু হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। একাধিক হাসপাতালের মেঝেতে শুইয়ে রাখতে হচ্ছে শিশুদের বলে অভিযোগ উঠছে।
আবার কোথাও একই বেডে ৩-৪ জন শিশুকে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কেন শিশুদের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত নয়? তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এই পরিস্থিতিতে একই বেডে রেখে চিকিৎসা করার কথা স্বীকারও করে নিয়েছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (Malda Medical College)। বেডের অভাবেই এ ভাবে শিশুদের চিকিৎসা করা হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছে।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগের প্রধান সুষমা সাহু বৃহস্পতিবারই জানিয়েছিলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুর সংখ্যার তুলনায় বেডের সংখ্যা অনেক কম। তাই বাধ্য হয়েই একই বেডে কয়েকজন শিশুকে একসঙ্গে রেখে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই হাসপাতালে পাঁচ জন শিশুর মৃত্যুও হয়েছে। নিউমোনিয়া ও মিস-সি এই মৃত্যুর কারণ বলেই চিকিৎসকদের দাবি। সকলেরই উপসর্গ এক ছিল।
কী এই মিস-সি
মিস-সি করোনা পরবর্তী ক্লিনিক্যাল সিনড্রম। এটা দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে হচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে গত মাসে যখন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মিস-সি নিয়ে শিশুরা ভর্তি হচ্ছিল, তখন পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে মার্চ, এপ্রিল ও মে— এই তিন মাসে তাদের বাবা, মা কিংবা বাড়ির লোকজন কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই সময় বাচ্চা তাদের সান্নিধ্যে এসেছিল। কিন্তু সেই সময় বাচ্চাদের মধ্যে করোনার কোনও উপসর্গ ধরা পড়েনি। উপসর্গ না থাকায় তাদের করোনা পরীক্ষা করাও হয়নি।
আরও পড়ুন: জয় হনুমান! টুকরো করা হাতে উঁকি দিচ্ছিল বজরংবলীর ট্যাটু, চিনিয়ে দিল আততায়ীকে
আরও পড়ুন: ‘চিনা শত্রু’র দাপট কলকাতার আকাশে! মরণফাঁদ ঠেকাতে ২০ লক্ষ টাকার ‘ঢাল’