Bomb Blast near Arjun Singh’s House: পবন সিংয়ের অফিস গুঁড়িয়ে দিতেই হামলা, অর্জুনের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনায় চার্জশিট পেশ NIA-এর
Pawan Singh: গত ৮ সেপ্টেম্বর ফোনে বিধায়ক পবন সিং-এর সঙ্গে বোমাবাজির ঘটনায় দীর্ঘক্ষণ ফোনে কথা বলেন এনআইএ-এর এক কর্তা। সাংসদের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনার তদন্তভার গ্রহণের পরেই দিল্লিতে একটি এফআইআর দায়ের করেছিল এনআইএ
কলকাতা: বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের (Arjun Singh) বাড়ির সামনে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা পড়ার মামলায় চার্জশিট পেশ এনআইএর। বিশেষ আদালতে চার্জশিট পেশ করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)। ওই চার্জশিটে তিন অভিযুক্তের নামও রয়েছে।
এনআইএ সূত্রে খবর, ওই চার্জশিটে যে তিন অভিযুক্তের নাম রয়েছে, তাঁরা হলেন সোনু জয়সওয়াল, রাহুল কুমার, আরিফ আখতার। তবে দুষ্কৃতীদের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি। চার্জশিটে এও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধায়ক পবন সিং-এর অফিস গুঁড়িয়ে দিতেই হামলা চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা, অন্তত এমনটাই তাঁরা জানিয়েছেন জেরায়।
গত, সেপ্টেম্বরে সাংসদের বাড়িতে বোমবাজি মামলার তদন্তভার আগেই নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা এনআইএ। মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর এনআইএ আদালতের কাছে আবেদন করে, বারাকপুর কমিশনারেট যেন বোমাবাজির মামলার এফআইআর কপি এবং কেস ডিটেলস তাদের হাতে তুলে দেয়। সেই মতো আদালতের পক্ষ থেকেও ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা জমা দিতে বলা হয়। আদালতের মাধ্যমেই সেই নথি পৌঁছে যায় এনআইএ-র কাছে। অর্জুনের বাড়ির সামনে বোমাবাজির মামলা চলছিল জগদ্দল থানায়। বিস্ফোরণের ঘটনায় আগেই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
গত অক্টোবরে, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছিল, আরিফ আলি ও মহম্মদ চাঁদ নামে দুই দুষ্কৃতীকে সাংসদের বাড়িতে বোমাবিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার করেছিল জগদ্দল থানার পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদেরই বয়ানে বাদল কুমার বাসফোর ও রাহুল কুমাররের নাম উঠে আসে। পরে, ভাটপাড়া থেকেই ওই দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গত সেপ্টেম্বর মাসেই সাতসকালে সিআইএসএফ (CISF) প্রহরার দেড় ফুটের মধ্যেই সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনার ঘটে। ঘটনায় সাংসদের নিরাপত্তা নিয়েই ওঠে একাধিক প্রশ্ন। তবে এই প্রথমবার নয়, ভোট পরবর্তী পর্যায়ে জুলাই মাসেও অর্জুনের বাড়িতে বোমাবাজি হয়। সিআইএসএফ- এর উপস্থিতিতেই বারে বারে এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে সাংসদ অর্জুন সিং এবং তাঁর পুত্র বিধায়ক পবন সিং-এর নিরাপত্তা নিয়ে। এই প্রেক্ষিতে অর্জুনের মন্তব্য, “অমিত শাহ ফোন করে খবর নিয়েছেন। এবার আমার সেল্ফ ডিফেন্সের সময় এসেছে। নিজের আত্মরক্ষা নিজেকেই করতে হবে।”
বোমাবাজির ঘটনায় অর্জুন দাবি করেন, ভবানীপুরের ইলেকশনের অবজারভার করেছে দল। তাই জন্য তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর আগেও ১১ বার তাঁকে আক্রমণ করা হয়েছে। বারবার হামলার কারণ তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি আরও যোগ করেন, তবে যে ধরনের বোমা চলেছে তা অতি সক্রিয় বোমা। তাই এনআইএ (NIA)-র তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন সাংসদ।
গত ৮ সেপ্টেম্বর ফোনে বিধায়ক পবন সিং-এর সঙ্গে বোমাবাজির ঘটনায় দীর্ঘক্ষণ ফোনে কথা বলেন এনআইএ-এর এক কর্তা। সাংসদের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনার তদন্তভার গ্রহণের পরেই দিল্লিতে একটি এফআইআর দায়ের করেছিল এনআইএ। এরপর, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ নম্বর ধারায় খুনের চেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলাও দায়ের করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরপর, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সাংসদের বাড়িতে আসে। সরাসরি সাংসদ-পুত্র পবন সিংয়ের সঙ্গে কথাও বলেন তদন্তকারীরা।
ঘটনায় রাজ্য পুলিশের হাত থেকে বিস্ফোরণ-কাণ্ডের সমস্ত নথি হস্তান্তরের আর্জি জানিয়ে বিশেষ আদালতের দ্বারস্থ হন তদন্তকারীরা। মামলার শুনানিতে, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটকে ৩ দিনের মধ্যে বিস্ফোরণ-কাণ্ডের এফআইআর-এর কপি, কেস ডিটেইলস-সহ সমস্ত নথি এনআইএর হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। পাশাপাশি, বোমাবাজির ঘটনায় গ্রেফতার এক অভিযুক্তকে ২১ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয় বিশেষ আদালত। সাংসদের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনায় তদন্তে গতি আনতেই ওই আবেদন করা হয়।
৮ সেপ্টেম্বরের বোমাবাজির পর এলাকায় নতুন করে আরও ২০টা সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। বাড়ানো হয় পুলিশ পিকেট। সঙ্গে সিআইএসএফ জওয়ানদের (CISF) প্রহরাও রয়েছে। তার মাঝেও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। একরকম সিল করে দেওয়া হয় সাংসদের বাড়ি। আরও শক্ত করা হয় নিরাপত্তার বেষ্টনী। সাংসদ অর্জুন সিং-কে জ়েড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: Sukanta Majumder: ‘মমতা থাকলে রাজ্য আফগানিস্তান হবে’