Bratya Basu: ‘দলে এখন দু’রকমের মত তৈরি হয়েছে…’, বিস্ফোরক কথা বলেই ফেললেন ব্রাত্য
Bratya Basu: ব্রাত্যর বক্তব্য, যে সমস্ত শিল্পীরা সরকার, রাষ্ট্রের বিরোধিতা করেছেন, তাঁরা সরকারি শো-তে অংশ নেবেন, তেমনটা আশা করা যায় না। সেক্ষেত্রে এই বিতর্কে সেই সমস্ত শিল্পীদের কী মত, সেটাই জানা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক বলে মনে করেন ব্রাত্য।
কলকাতা: দলের দু’রকমের মত রয়েছে। স্পষ্টভাবে স্বীকার করলেন শিক্ষামন্ত্রী তথা শিল্পী ব্রাত্য বসু। আরজিকর কাণ্ডে যে সমস্ত শিল্পীরা রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলকে আক্রমণ করেছিলেন, তাঁদের তৃণমূলের আয়োজিত অনুষ্ঠানে বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে দাঁড়িয়ে কুণালের সেই দাবিকেই উড়িয়েছেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ‘শিল্পী বয়কট’ তত্ত্বকে নিয়েই এখন তৃণমূল অন্দরে জলঘোলা। এবার তা নিয়ে মুখ খুললেন ব্রাত্য। স্পষ্ট করলেন নিজের অবস্থান।
ব্রাত্যর বক্তব্য, যে সমস্ত শিল্পীরা সরকার, রাষ্ট্রের বিরোধিতা করেছেন, তাঁরা সরকারি শো-তে অংশ নেবেন, তেমনটা আশা করা যায় না। সেক্ষেত্রে এই বিতর্কে সেই সমস্ত শিল্পীদের কী মত, সেটাই জানা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক বলে মনে করেন ব্রাত্য। তাঁর কথায়, “আমাকে যদি একজন শিল্পী হিসাবে জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে বলব, আপনারা আমার মত নেওয়ার থাকে, সেই সব শিল্পীদের কাছ থেকে কী মত নিয়েছেন, যাঁরা দিনের পর দিন সরকারের নামে বললেন, মুখ্যমন্ত্রীর নামে বললেন, এখন সরকারি শো তাঁরা করবেন কী করবেন না, তাঁদের অবস্থান কী?”
তিনি জানান, বাম আমলে তাঁরও একাধিক থিয়েটার ফতোয়ার মধ্যে পড়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চে উঠেছিলেন বলে, তাঁর তিনটে থিয়েটার একদিনেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সে উদাহরণও তুলে ধরেন তিনি। এরপরই ব্রাত্য বলেন, “আমি মনে করি, বাম সরকার যদি আমার কোনও থিয়েটারের ফতোয়া জারি করে, তাহলে তারা ঠিকই করেছে। কেননা আমি শিল্পী হিসাবে সরকার, রাষ্ট্রের বিরোধিতা করব, আবার সেই সরকারের থেকেই শো চাইতে যাব, এটা হতে পারে না।”
এরপরই বিজেপি-কেন্দ্রীয় সরকারের প্রসঙ্গ চেনে আনেন তিনি। বলেন, “২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে আমার দল, একমাত্র দল, ‘কালিন্দী ব্রাত্যজন’ কেন্দ্রীয় সরকারের ২০টা গ্র্যান্ট একসঙ্গে প্রত্যাখ্যান করে। কারণ রাজনৈতিকভাবে বিজেপি আমার বিরোধী। আমি যদি বিজেপির বিরুদ্ধে কিছু বলি, কেন্দ্রীয় সরকার যদি তার জন্য আমাকে শো না দেন, তারা ঠিকই করছে। আমার সিনেমা গোয়াতে সিলেক্টেড হয়ে বাতিল হয়েছে। আমাকে কেন্দ্রীয় কোনও শোতে ডাকা হয় না। তাহলে আমি এটা নিয়ে কি কাঁদুনি গাইব?”
ব্রাত্য বলেন, “কুণাল ঘোষ যে কথা বলেছেন, কুণাল তো কেবল আমার একার কথা বলেননি, আরও অনেকের কথা বলেছেন। আমি দলের সদস্য হিসাবে বলব, নেত্রী যা বলবেন, সেটাই আমার কাছে চূড়ান্ত। পরিষ্কার তো দেখতে পারছেন, দলে দুরকমের মত রয়েছে।” কেন তারও ব্যাখ্যা দেন তিনি। তাঁর কথায়, “আমাদের পার্টি তো রেজিমেন্টেড পার্টি নয়, খোলামেলা পার্টি। সেখানে এক-এক জনের এক-একরকমের মত থাকতে পারে। পদমর্যাদায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার উঁচুতে। তাঁর মত কিংবা কুণাল ঘোষের মত ঠিক কিনা ভুল, তা উত্তর দিতে পারি না।কেবল বলতে পারি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতই আমার মত।”