Calcutta High Court: একশো দিনের কাজে বাংলার চার জেলা থেকে ২ কোটি ২০ লক্ষ উদ্ধার! হাইকোর্টে জানাল কেন্দ্র
Calcutta High Court: বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে একশো দিনের প্রকল্পে দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল এই মামলায় এদিন প্রধান বিচারপতির তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, দুর্নীতি হয়ে থাকলে কেন্দ্রের সংস্থা পদক্ষেপ করতে পারে। কেন্দ্রকে এক্ষেত্রে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। এই অর্থ প্রকৃত প্রাপকদের দ্রুত বন্টনেরও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

কলকাতা: একশো দিনের কাজে দুর্নীতি, আর তাতে বাংলার চার জেলা থেকে ২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। কেন্দ্র কেন মনরেগা প্রকল্প (একশো দিনের কাজ) বন্ধ রেখেছে, কলকাতা হাইকোর্টের এই প্রশ্নের উত্তরে জানাল কেন্দ্র। তিন সপ্তাহ অর্থাৎ ১৫ মে-র মধ্যে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করেছেন কলকাতা হাইকোর্ট প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলার তরফ থেকে অভিযোগ উঠেছে, একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। একশো দিনের কাজে বাংলার একাধিক ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতির তথ্য খাড়া করেছিল কেন্দ্র। তদন্তে রাজ্যে এসেছিল কেন্দ্রীয় দল। মোট ৫ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বন্টনের ক্ষেত্রে দুর্নীতি করা হয়েছিল বলে আদালতে জানান কেন্দ্রের এডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী। চলতি বছরের ২০ মার্চ নোভাল অফিসার রিপোর্ট দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জানান, হাইকোর্ট নিযুক্ত চার সদস্যের কমিটি বিভিন্ন সময় রাজ্যের মোট চারটি জেলা- পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, মালদা এবং দার্জিলিং জিটিএ- এরিয়া পরিদর্শন করে একশো দিনের কাজের টাকা বন্টনের ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন। এই চার জেলা থেকে মোট ২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে একশো দিনের প্রকল্পে দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল এই মামলায় এদিন প্রধান বিচারপতির তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, দুর্নীতি হয়ে থাকলে কেন্দ্রের সংস্থা পদক্ষেপ করতে পারে। কেন্দ্রকে এক্ষেত্রে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। এই অর্থ প্রকৃত প্রাপকদের দ্রুত বন্টনেরও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এদিন কেন্দ্রের অ্যাডিশন্য়াল সলিসিটর জেনারেল জানিয়েছেন, ২০২২ সাল থেকে দূর্নীতির কারণেই কেন্দ্র টাকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে। রাজ্য চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রককে ফের চিঠি দিয়েছিল, যা বিবেচনার পর্যায়ে রয়েছে।
প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, এই স্কিমের বকেয়া কবে কেন্দ্র রিলিজ করবে, সেই বিষয়ে দ্রুত জানাতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৫ মে। তার আগে কেন্দ্রকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ। রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, “পরবর্তী শুনানির দিন জানাতে হবে কেন জব কার্ড হোল্ডারদের বেকার ভাতা দেওয়া হবে না?”
এদিন রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়াল করেন, “কেন্দ্রের সরকার খুব উদ্ধত। তারা প্রস্তাব গ্রহণ করছে না। অন্য কেউ কিছু না করলে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিন বছর হয়ে গেল। অনেক স্কিমে অনেক টাকাই আসেনি এই রাজ্যে।”
মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, “কেন্দ্র রাজ্য লড়াই করছে। কিন্তু ভুক্তভুগী কারা? সাধারণ মানুষ।” প্রধান বিচারপতি তখন জানতে চান, ‘কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকলে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছিল, সেই পদক্ষেপ কি এখনও করা হয়েছে?’
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তখন জানানো হয়, “প্রতি বছর নির্বাচন থাকছে। আগামী বছর নির্বাচন, তাই সব বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে! এটা কিসের রাজনীতি?”
কেন্দ্রের তরফে এএসজি তখন বলেন, “১২ কোটি টাকা রাজ্যকে দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য সরকার দুর্নীতি অভিযোগের টাকাও উদ্ধার করেছে, কিন্তু সেটাও ফেরত দেয়নি।” তখন আদালতে কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের কাছে প্রশ্ন করেন, “টাকা উদ্ধারের পর আপনারা কি করেছেন? সেটা কেন্দ্রকে ফিরিয়ে দিয়েছেন নাকি স্কিমের মাধ্যমে মানুষকে দিয়েছেন?” কেন্দ্রের আধিকারিকরা আদালতে বলেন, “কেন্দ্র যা বলবে সেটা করব। এটা সরাসরি মানুষের অ্যাকাউন্টে দিতে পারব না।”

