কে যোগ্য, কে অযোগ্য জানতে ১৫ হাজার শিক্ষকের পূর্ণ তালিকা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট
Calcutta High Court: ২০১৪ সালের প্রাথমিক (Primary) টেট (TET)-এর ভিত্তিতে যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের সম্পূর্ণ নিয়োগ তালিকা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
কলকাতা: ২০১৪ সালের প্রাথমিক (Primary) টেট (TET)-এর ভিত্তিতে যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের সম্পূর্ণ নিয়োগ তালিকা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বৃহস্পতিবার এক জনস্বার্থ মামলা (PIL)-র শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল (Justice Rajesh Bindal) তীব্র সমালোচনা করলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে। চাকরিপ্রাপকদের তালিকা চেয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘তালিকা না দিলে খুঁজে নেব’।
২০১৮ সালে উত্তর দিনাজপুরে বাসিন্দা স্বদেশ দাস প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পান। কিন্তু চাকরি পাওয়ার কিছুদিন পর প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদের চোখে পড়ে ওই শিক্ষকের প্রয়োজনীয় যোগ্যতাই নেই। এই কারণ দেখিয়ে তাঁকে বহিষ্কার করে পর্ষদ। এদিকে পর্ষদের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়ের করেন চাকরি থেকে বহিষ্কৃত ওই ব্যক্তি। স্বদেশবাবুর দাবি, প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা তাঁর নেই বটে। কিন্তু তাঁর মতো উত্তর দিনাজপুর জেলায় আরও ১৩ জন এরকম চাকরিপ্রাপক আছেন যাঁদের প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। তাঁরা কীভাবে বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন? তিনিই কেন বহিষ্কৃত হলেন?
শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ে পর্ষদ। এর আগে মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির এজলাসে উঠেছিল এই মামলা। একে বৃহত্তর জনস্বার্থ মামলা বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। এই মামলাই এদিন ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের এজলাসে ওঠে। সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে আইনজীবী শুভ্রপ্রকাশ লাহিড়ি বলেন একটা জেলায় যদি এই এমন অবস্থা হয়, তাহলে গোটা রাজ্যে এমন চাকরি প্রাপকদের সংখ্যা কত হতে পারে! গোটা প্রক্রিয়ায় বড় দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এই প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সরকার পক্ষের কাছে জানতে চান ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটে পরীক্ষার্থী সংখ্যা কত ছিল। সরকারি আইনজীবী জানান প্রায় ১২ লক্ষ পরীক্ষার্থী ছিলেন। তার মধ্যে চাকরি পান ১৫ হাজার। তার পর সেই তালিকা দেখতে চান ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘কার যোগ্যতা রয়েছে, কার নেই, তার পুরোটাই আমি দেখব।’ কিন্তু পর্ষদের দেওয়া তালিকায় না-খুশ তিনি।
কারণ এদিন পর্ষদের তরফে শুধু ১৫ হাজারের নাম দিয়ে বলা হয়, এতজন চাকরিপ্রাপকের রোল নম্বর এবং পুরো তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। খুব সমস্যাজনক বলে জানায় তারা। পর্ষদের এই গড়িমসিতে ক্ষুব্ধ হন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিন্দল। তিনি পরিষ্কার জানান, “পর্ষদ যদি তালিকা দেয় ভাল, নাহলে আদালত তালিকা খুঁজে নেব।” প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বহু লোক প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মামলাকারীর পক্ষে আইনজীবী। আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হাইকোর্টে পূর্ণ তালিকা পেশ করার নির্দেশ দেন তিনি।