কয়লা কাণ্ডে নয়া মোড়, লালার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি দিল আদালত
অনুপ মাঝির (Anup Majhi) পাশাপাশি কয়লা কেলেঙ্কারিতে (CBI On Coal Smuggling Case) সিবিআই-এর নজরে আরও তিন জন।
কলকাতা: কয়লা কাণ্ডে (CBI On Coal Smuggling Case) মূল চক্রী অনুপ মাঝি (Anup Majhi) ওরফে লালার ৫০ রকমের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি দিল আসানসোল সিবিআই আদালত (CBI Court)। জমি, বাড়ি-সহ বিভিন্ন সম্পত্তি রয়েছে লালার। এই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ৬৮ জায়গায় সম্পত্তি রয়েছে লালার। পুরুলিয়া, আসানসোল, রানিগঞ্জ, বাঁকুড়া, দুর্গাপুরে এই সম্পত্তি রয়েছে অনুপ মাঝি ওরফে লালার। এর মধ্যে কয়েকশো একর জমি রয়েছে, যেখানে কয়লা খনি বানাতে চেয়েছিলেন তিনি। এ বিষয়ে ৬ পাতার একটি তালিকা তৈরি করেছেন গোয়েন্দারা।
অনুপ মাঝির পাশাপাশি কয়লা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই-এর নজরে আরও তিন জন। কয়লা পাচার কাণ্ডে এখন সিবিআইয়ের নজরে বিনয় মিশ্র। তাঁর নাম উঠেছে এসেছে গরু পাচারের ক্ষেত্রেও। তবে এখনও পর্যন্ত তাঁর নাগাল পায়নি সিবিআই। মনে করা হচ্ছে দুবাইয়ে লুকিয়ে বিনয়। কালো টাকার বড় অংশ দুবাইয়ে সরানো হয়েছে বলে খবর।
দুবাই কানেকশনে বিনয় মিশ্রের সঙ্গে উঠে এসেছে গণেশ বাগারিয়ার নামও। কয়লা ও গরু পাচারের আরও এক অভিযুক্ত বাগারিয়া। ইতিমধ্যেই বাগারিয়ার বাঙুর অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন আধিকারিকরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেশ কয়েকবার তাঁকে নোটিস পাঠায় সিবিআই।
কয়লা কেলেঙ্কারিতে আরও এক অভিযুক্ত জয়দেব মণ্ডল। জানা গিয়েছে, অনুপের পাশাপাশি জয়দেবেরও সিঙ্গাপুরে সম্পত্তি রয়েছে। সুইৎজারল্যান্ডেও সম্পত্তি রয়েছে জয়দেবের। উল্লেখ্য, কয়লা দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত চরিত্র অনুপ মাঝি ওরফে লালা ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা ও গ্রেফতারি এড়াতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রকাশ্য জনসভায় দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেছেন, কয়লা দুর্নীতির টাকা তাইল্যান্ডে পাচার হয়েছে। সেই দাবি করার সময়ে জনসভায় একটি ক্যাশ ডিপোজিট স্লিপও দেখিয়েছিলেন তিনি। টাকা লেনদেন নিয়ে ইতিমধ্যেই অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা ও শ্যালিকা মেনকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর, তাইল্যান্ডের কাসিকর্ন ব্যাঙ্কের সিয়াম ব্রাঞ্চে ২০১৮ সালের নভেম্বরে ১৫ লক্ষ বাট জমা দেওয়া হয়। এই ডিপোজিট স্লিপে রুজিরা নারুলা নামেই সই করা হয়। ব্যাংককে নারুলা পরিবারের সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলে খবর পয়েছেন তদন্তকারীরা। রুজিরার নাগরিকত্ব ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: কয়লা কাণ্ড: রুজিরার বয়ানে অসন্তুষ্ট সিবিআই, দ্বিতীর পর্বে জিজ্ঞাসাবাদের সম্ভাবনা
তবে শুধু দুবাই বা তাইল্যান্ড নয়, তদন্তের সূত্রে উঠে এসেছে লন্ডন, মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড, জার্মানির নামও। প্রতিটি সূত্র সিবিআই জুড়তে পারে কিনা, এ বার সেটাই দেখার।