কলকাতা: ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অপরদিকে ধনধান্য অডিটোরিয়ামে প্রাক দোলের উৎসবে গুজরাটি-পঞ্জাবীদের সঙ্গে ডান্ডিয়া-ভাঙড়া নাচলেন মমতা। গত লোকসভা নির্বাচনে (২০২৪) ভবানীপুর বিধানসভার আটটি ওয়ার্ডের মধ্যে পাঁচটি ওয়ার্ডে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এই অবস্থায় হিন্দিভাষীদের ভোট ধরতে সক্রিয় তৃণমূল। যে কারণে পুরসভার ভাঁড়ার থেকে লক্ষাধিক টাকা ব্যায় করে প্রাক হোলির উৎসব পালিত হচ্ছে।
ভবানীপুর বরাবরই অবাঙালি অধ্য়ুষিত। গুজরাটি ভোটারদের রমরমা। সেখানে প্রায় ৪২ শতাংশ বাঙালি হিন্দু ভোটার রয়েছেন। আর ৩৪ শতাংশ অবাঙালি হিন্দু ভোট আছে। ২০২৪ এর লোকসভা ভোটের নিরিখে ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলের উপর নজর দিলে দেখা যাবে, ভবানীপুর বিধানসভার ৬৩, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে লিড পেয়েছে বিজেপি। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক কারবারীদের একাংশ মনে করছে, ভবানীপুর নিয়ে যখন শুভেন্দু গর্জে উঠছেন, তখন অবাঙালি ভোটকে কাছে টানাই এই অনুষ্ঠানের অন্যতম লক্ষ ছিল তৃণমূলের। গতকাল মঞ্চে যখন মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন, সেই সময় তাঁর চারপাশে বেশিরভাগই অবাঙলি, মারওয়াড়ি সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলেন। এখানেই ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে সামনের নির্বাচনে ‘হটস্পট’ হয়ে উঠতে চলেছে এই কেন্দ্র। সেই কারণেই কি লিড পেতে মরিয়া সেখানকার বিধায়ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা মুখ্যমন্ত্রী? এমনই একাধিক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শাসকদলেরই অন্দরে।
গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেউ যদি কিছু বলে যে এ তোমার বিরুদ্ধে এই কথা বলেছে-ওই কথা বলেছে, তাহলে তাতে কান দেবেন না। আপনারা সবাই যে যার ধর্ম পালন করুন। বাংলায় সব ধর্মের মানুষ শান্তিতে বাস করেন। একদিনের জন্য় কেউ এসে ঝগড়া লাগিয়ে চলে যাবে। এরপর যখন আগুন লাগবে উনি থাকবেন না। আমরা আগুন জ্বলুক চাই না। আগুন দিয়ে খাবার তৈরি হয়। আমরা শান্তি চাই। আর বাংলায় কিছু হলে দেশও শান্তিতে থাকবে না।” রাষ্ট্রীয় বিহারি সমাজের সভাপতি হরিন্দ্র সিং বলেন, “উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, উত্তর কলকাতা,শ্রীরামপুর, হুগলি হল হিন্দি বেল্ট। সেখানে হিন্দি ভাষাভাষির মানুষ থাকেন। কেউ কেউ বিভাজনের রাজনীতির শিকার হয়। তবে এই সব জায়গা থেকে কিন্তু তৃণমূলেরই সাংসদ রয়েছেন। জাতপাতের ভেদাভেদ উত্তর প্রদেশ, বিহারে যেভাবে দেখা যায়, বাংলায় সেটা হয় না।”
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “দুটো ডান্ডা নিয়ে ঠোকাঠুকি করেই গেলেন। আসলে উনি শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপিকে ভয় পাচ্ছেন। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবাঙালি ভোটও লাগবে না। যে মিত্র ইন্সস্টিটিউশনে ভোট দেন সেখানেও হেরেছেন। উনি নিজের বুথে হারেন। আমি বলি বয়স হয়েছে রেস্ট নিন।” যদিও, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ স্পষ্ট জানিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠানে শুধু অবাঙলি নয়, সকলেই উপস্থিত ছিল।