কলকাতা: ডেরায় ফেরানো হয়েছে ‘তাঁকে’ ! আর ৬ দিন নাওয়া-খাওয়া ভুলে ‘তাঁকে’ যাঁরা ডেরায় ফিরিয়েছেন, সেই দলকে পুরস্কৃত করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঘ ধরার সঙ্গে যে টিম কাজ করেছে, তাঁদের পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ” যে টিম বাঘ ধরার কাজ করেছে, তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। কুলপি থানা সঙ্গে বনদফতর। আপনারা অনেক ইনিসিয়েটিভ নিয়ে কাজটা করেছেন। যে সব কর্মীরা কাজ করেছেন, তাঁরা ৬-৭দিন ধরে খাওয়া ঘুম ভুলে লেগে ছিলেন। এটা একটা খুবই মারাত্মক কাজ! আপনারা এটা করে দেখিয়েছেন। আপনাদের পুরস্কৃত করা হবে।” এরপরই তিনি মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদীকে বিষয়টি দেখে নেওয়ার জন্য বলেন।
৬ দিন ধরে ঝড়খালিতে চলেছে বাঘবন্দির খেলা। বাঘকে ধরতে গিয়ে গত ছ’দিনে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি বনকর্মীদের। ট্রাঙ্কুলাইজার নিয়ে বনকর্মীদের অভিযান, পিয়ালি নদী থেকে দমকলকর্মীদের জল স্প্রে, জঙ্গলে লঙ্কা বোমা নিক্ষেপ- কী না করা হয়েছে! কিন্তু বাঘ ছিল তার নিজের অবস্থানেই। বন দফতরের কর্মীরা তাকে নাগালে পাননি। শোনা যাচ্ছিল তার গর্জন, চোখে পড়ছিল পায়ের ছাপ, শুধু দেখা দিচ্ছিল না সে-ই।
কয়েকদিন ধরে অভুক্ত ছিল বাঘটি। তাই সে যেখানে ছিল, সেখান থেকে বের হচ্ছিল না। বাঘটির দেখা মিলতেই পরপর দুটি ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। গুলি করার কিছুসময় পরেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে বাঘটি। পুরোপুরি নিস্তেজ হয়ে গেলে ডোরাকাটাকে পরীক্ষা করতে যান পশু চিকিৎসক ও অন্যান্য উচ্চ পদস্থ কর্মীরা। বাঘটির স্বাস্থ্য় পরীক্ষা করা হয়। পিয়ালি নদীর পাড় থেকেই পাকড়াও করা হয় বাঘটিকে। বনকর্মীরা জানাচ্ছেন, বাঘটি পুরুষ। পূর্ণবয়স্ক। আপাতত সুস্থ আছে।
বুধবার সাতসকালে বনদফতরের তরফে রামগঙ্গা রেঞ্জের অন্তর্গত ঢুলিভাসানি ৪ নম্বর জঙ্গলেরামগঙ্গা রেঞ্জের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয় কুলতলির লোকালয়ে চলে আসা চালা বাঘটিকে।
ঘড়ির কাঁটাতে এদিন ৬:৫৫ হতেই ডিএফও মিলন কান্তি মন্ডলের নির্দেশে জঙ্গল লাগোয়া নদীর জলে বাঘের খাঁচার মুখ খুলে দেওয়া হয়। বাঘটি মুক্তির স্বাদ পেতেই খাঁচা থেকে নেমে পড়ে নদীর জলে। এরপর আস্তে আস্তে নতুন ঠিকানার পথে পাড়ি দেয়। যাওয়ার সময় ফিরে দেখে বন কর্মীদের দিকে। বাঘটিকে নিজের পরিবেশে ফেরাতে পেরে খুশি বন কর্মীরাও।
আরও পড়ুন: Corona in West Bengal: ওমিক্রনের চোখরাঙানি! ফের বন্ধ হতে পারে স্কুল, ইঙ্গিত মুখ্যমন্ত্রীর