‘এক সেকেন্ডের জন্য কথা বলতে দেওয়া হল না, এত অবহেলা!’ মোদীর বৈঠকে ক্ষুব্ধ মমতা

মমতার (Mamata Banerjee) দাবি, রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে কিছুই জানতে চাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। বৈঠককে 'ক্যাজুয়াল ফ্লপ মিটিং' বলে কটাক্ষ মমতার।

'এক সেকেন্ডের জন্য কথা বলতে দেওয়া হল না, এত অবহেলা!' মোদীর বৈঠকে ক্ষুব্ধ মমতা
ফাইল ছবি - পিটিআই
Follow Us:
| Updated on: May 20, 2021 | 2:03 PM

কলকাতা: ভোটের ফলাফলের পর থেকেই কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত বারবার প্রকাশ্যে আসছে। এরই মধ্যে করোনায় বিপর্যস্ত বাংলা। এই পরিস্থিতিতে বৈঠকে মোদী-মমতার মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। মমতা কী বার্তা দেবেন, সে দিকে তাকিয়ে ছিল রাজনৈতিক মহল। কিন্তু বৈঠক মিটতেই মমতার গলায় ক্ষোভের চেনা সুর। এ দিনের বৈঠকেও কোনও কথা বলতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করলেন তিনি। ক্ষোভ উগরে দিয়ে বললেন, ‘এটা একটা ফ্লপ ক্যাজুয়াল বৈঠক।’ অনেক দাবি নিয়ে বসলেও প্রধানমন্ত্রী বলার সুযোগ না দেওয়ার হতাশ তিনি।

আজ, কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনামূলক ভার্চুয়াল বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মমতার ছাড়াও সেখানে ছিলেন অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও জেলাশাসকেরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিভিন্ন বিষয়ে দাবি জানানোর জন্য কাগজপত্র নিয়ে তৈরি ছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের বলার কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমার খারাপ লাগল, এক সেকেন্ডের জন্যও মুখ্যমন্ত্রীদের কথা বলতে দেওয়া হল না’। শুধুমাত্র কয়েকটি বিজেপি শাসিত রাজ্যের জেলাশাসকদের কথা বলতে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি মমতার।

মমতা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীদের গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই জেলাশাসককে এ দিনের বৈঠকে বসাননি তিনি। মমতার সঙ্গে এ দিন রাজ্যের তরফে ছিলেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব। এ দিন বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘অতিমারির পরিস্থিতিতে আমরা প্রত্যেকেই রাজ্যের দাবি দাওয়া নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম। কিন্তু কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেই বলতে দেওয়া হয়নি। হাতের কাগজ দেখিয়ে মমতা বলেন, ‘আমরা পেপার ওয়ার্ক করে তৈরি ছিলাম। অথচ আমাদের এক সেকেন্ডের জন্য বলতে দেওয়া হয়নি। কয়েকটি বিজেপি শাসিত রাজ্যের জেলাশাসকদের বলতে দেওয়া হল। তারপর নিজেই বক্তব্য রেখে বৈঠক শেষ করলেন।’ প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘কী বক্তব্য রাখলেন কিছুই বোঝা গেল না।’ মমতা আরও বলেন, করোনা কমে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

রাজ্যের ভ্যাকসিন, ওষুধ, অক্সিজেনের কী পরিস্থিতি সেই বিষয়ে কিছু জানতে না চাওয়ায় রীতিমতো হতাশ তিনি। রাজ্যের জন্য ভ্যাকসিন চেয়ে আগে বারবার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এ দিনের বৈঠকে সেই বিষয়েও কোনও কথা হয়নি। মমতা বলেন, ‘ভেবেছিলাম বলব ভ্যাকসিনটা দিন। আমরা ১ কোটি ২০ লক্ষ ভ্যাকসিন  পেয়েছি। আমাদের ২৪ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা ছিল তাও দিচ্ছে না। ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। সেই জবাব কে দেবেন? প্রধানমন্ত্রী মুখ লুকিয়ে চলে যাচ্ছেন।’ প্রধানমন্ত্রীর এই ব্যবহারকে ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। মমতার কথায়, ‘এত ইনসিকিওরড ফিল করছেন? এত অবহেলা কিসের? কথা বলতে দেবেন না যখন, তাহলে ডাকা হল কেন?’

আরও পড়ুন: কলকাতায় করোনার জাল রিপোর্ট চক্রের পর্দাফাঁস, নামী ল্যাবের নাম ভাঁড়িয়ে রমরমিয়ে চলত ব্যবসা

অন্য দিকে, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধি দলের উপস্থিতি নিয়েও মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশে নদীতে দেহ ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে তো কেন্দ্র প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে না?’ অতিমারী পরিস্থিতিতে নারদ-কাণ্ডের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘ববি সারাক্ষণ ফিল্ডে থেকে কাজ করত। আর গত চার দিন ধরে কলকাতায় টিকাকরণে ব্যাঘাত ঘটেছে।’