CPIM State Committee Meeting: ‘বয়কট’ ধর্মঘট! বনধ ছেড়ে বিকল্প খুঁজছে বাম শিবির, তড়িঘড়ি বৈঠকে রাজ্য কমিটি
Kolkata: জায়গায় জায়গায় বাম শ্রমিক ইউনিয়নগুলিও ধর্মঘটে নিজেদের অনীহাই প্রকাশ করেছে। দলের অন্দরের অনেকেরই মত, বিধানসভা নির্বাচনের ভরাডুবির পর বাম শিবিরের লড়াই কঠিন
কলকাতা: একদা ধর্মঘটই ছিল বাম শিবিরের (CPIM) ‘মোক্ষম চাল’। প্রতিবাদে মিছিল মিটিং ছাড়াও ধর্মঘটেই আস্থা রাখত তারা। কিন্তু সময় বদলেছে। বদলেছে রাজনীতিও। প্রতিবাদে তাই ধর্মঘটে আস্থা রাখতে পারছে না বাম শিবির। বিকল্প কী ? পদক্ষেপ করতে তড়িঘড়ি বৈঠকে সিপিএমের রাজ্য কমিটি।
সামনেই পুরভোট। কিন্তু পুরভোটের আগে নির্বাচনী প্রচারেই যদি ধর্মঘটের জন্য বাধা পড়ে তাহলে প্রচার চলবে কী করে? বিশেষ করে বাম শিবিরের অন্দরে আরও প্রশ্ন, ধর্মঘটকে কেন গুরুত্ব দেবেন সাধারণ মানুষ? বিশ্লেষকদের একাংশের প্রশ্ন, তাহলে কি প্রকারান্তরে বাম শিবির মেনে নিচ্ছে, তাদের ধর্মঘট ডাকায় আদপে সাধারণ জীবনে কোনও প্রভাব পড়বে না?
বস্তুত, পূর্বে কোনও প্রতিবাদ, দাবি জানাতে বাম শিবির ধর্মঘট বা হরতালকেই পন্থা হিসেবে বেছে নিয়েছে। ২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়া আসার পরে বাম শিবিরের ধর্মঘট করা জারি ছিল। কেবল মিছিল পিকেটিং নয়, বিভিন্ন সময়ে ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবরও শোনা যেত। কিন্তু, সেই সময় থেকেই এ বার সরে আসতে চাইছে বাম শিবির। অন্তত এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
একদা ‘ধর্মঘটপ্রেমী’ বামপন্থীদের তাহলে ধর্মঘটের বিকল্প কী হবে? বাম শিবির বলতেই যে ‘পক্ককেশ’ কর্মীদের চিরাচরিত ছবি সামনে ভেসে আসে, সেই জায়গা থেকে এখন অনেকটাই সরে এসেছে তারা। বিধানসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে পুরভোটেও নজর কেড়েছে ওয়াই জেনারেশন। স্বভাবতই গতির সঙ্গে তাল মেলাতে তৎপর তারা। ফলে, নতুন মুখ-রা কেউই ধর্মঘটের পক্ষে মত দিচ্ছেন না এমনটাই খবর সূত্রের। শুধু তাই নয়, জায়গায় জায়গায় বাম শ্রমিক ইউনিয়নগুলিও ধর্মঘটে নিজেদের অনীহাই প্রকাশ করেছে। দলের অন্দরের অনেকেরই মত, বিধানসভা নির্বাচনের ভরাডুবির পর বাম শিবিরের লড়াই কঠিন। ফের নিজেদের হাল ফেরাতে লালশিবিরকে শরণাপন্ন হতেই হবে ‘নবদিগদর্শন’-এর, অন্তত এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।
এই পরিস্থিতিতে ধর্মঘটের বিকল্প কী হবে? তড়িঘড়ি বৈঠকে সিপিএমের রাজ্য কমিটি। আগামী ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পর পর দুটি বৈঠক হয়। বেশিরভাগ জেলার তরফেই যুক্তি দেওয়া হয়েছে, ২৭ ফেব্রুয়ারি পুরসভার নির্বাচন রয়েছে। ফলে প্রচারের একদম শেষের দুইদিন ধর্মঘট করা বিশেষ লাভজনক হবে না বলেই দলের অন্দরের একাংশের অভিমত। বরং,ওই দুইদিন প্রচারে জোর দিলেই ভাল বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
শুধু তাই নয়, পুরভোটে পৃথকভাবে লড়াই করে কলকাতায় নিজেদের ভোট শতাংশ বাড়িয়েছে বাম শিবির। শূন্য থেকে উঠে এসেছে দ্বিতীয়ত। সেই শতাংশ জেলার বাকি পুরভোটেও হারাতে চায় না। বরং, কীভাবে ভোট শতাংশ বাড়ানো যায়, সেদিকেই নজর বাম শিবিরের। ইতিমধ্যেই অনেকগুলি জেলায় পুরভোটে নতুনদের মুখ করেছে সিপিএম।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র স্পষ্টই জানিয়েছেন, বয়স নিয়ে যে নীতি নেওয়া হয়েছে, তার বদল হবে না। নতুনদের জায়গা দেওয়া হবে। যাঁরা প্রবীণ তাঁদের ধীরে ধীরে জায়গা ছাড়তে হবে। নির্বাচনে নিজেদের হাল ফেরাতে তরুণ প্রজন্মের উপরেই ভরসা রাখছে কাস্তে-হাতুড়ি এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন: ‘বুদ্ধবাবুকে পার্টি পুরস্কার নিতে দেয়নি, সন্ধ্যাদেবীর ক্ষেত্রে চাপের পরিবেশ তৈরি করা হল’