কলকাতা: দুর্নীতিকে প্রশ্রয়, পেশি শক্তির আস্ফালন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চুপ- ইস্তফাপত্রে এই সবই শব্দবন্ধ উল্লেখ করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার। জহরের এই চিঠি কাটা ঘায়ে নুনের ছিটের মতো কাজ করল তৃণমূলের অন্দরে। আরজি কর কাণ্ড নিয়ে সাঁড়াশি চাপে শাসক তথা মমতার সরকার। একদিকে তিলোত্তমার খুন-ধর্ষণ, অন্যদিকে সন্দীপ ঘোষের কীর্তি, প্রতিদিন বিদ্ধ হচ্ছে তৃণমূল। দলের অন্দরেও কেউ কেউ উষ্মা প্রকাশ করছেন। এই আবহে জ্বালাময়ী চিঠি লিখে জহর সরকারের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া স্বভাবতই অস্বস্তিতে ফেলেছে তৃণমূলকে। আর এখানেই যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের তাৎপর্যপূর্ণ কটাক্ষ, “এক জন ছেড়েছেন, আরেকজন ছাড়ুন। স্রোতের অনুকূলে তো কচুরিপানাও ভাসে। উল্টোদিকে সাঁতার না কাটলে তো মানুষ জন্ম বৃথা।”
জহর সরকার একজন আইএএস অফিসার ছিলেন। তাঁকে ‘কচুরিপানা’ বলে কটাক্ষ স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । ৭২ বছরের এই প্রবীণ মানুষটিকে ২০২১ সালে রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত করে তৃণমূল। মনে করা হয়, জহর সরকারকে বাছাই করা ছিল একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত। বিজেপির বিরুদ্ধে বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মোক্ষম অস্ত্র হিসাবে জহরকেই কাজে লাগান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৭৫ সালের ক্যাডার জহর সরকার ২০০৮-২০১২ পর্যন্ত কেন্দ্রের সচিব পদে কাজ করেছেন ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রসার ভারতীর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। সেই জহর সরকারকে ‘কচুরিপানা’ বলে কটাক্ষ করছেন নবীন রাজনীতিবিদ দেবাংশু ভট্টাচার্য। জহরকে এভাবে কটাক্ষ করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নেটিজেনদের একাংশ। দেবাংশু বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ২০১৭ সালে ডিপ্লোমা করেছেন। নেটিজেনদের প্রশ্ন, তিনি কীভাবে একজন প্রাক্তন আইএএস আধিকারিককে ‘কচুরিপানার’ সঙ্গে তুলনা করলেন, যেখানে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভার টিকিট দিয়েছিলেন।
তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেছেন, “ইস্তফা জহর সরকারের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তৃণমূল জহর সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছে না। তাঁর মনে হয়েছে, তিনি তাঁর মতো করে সিদ্ধান্ত নেবেন।” কুণালের আরও বক্তব্য, “জহরবাবু প্রাক্তন আমলা, ওঁ অনেক জ্ঞানীগুণি মানুষ, অনেক সিনিয়র, তিনি তাঁর মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শীর্ষ নেতৃত্ব বিচার করবেন। আমাদের স্তরে কোনও সমালোচনা মানায় না।”
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)