Dilip Ghosh On Babul Supriyo: ‘প্রার্থীই তো দিতে পারেনি তৃণমূল, কার হয়ে প্রচার করবেন?’ বাবুলের ত্রিপুরা সফরকে খোঁচা দিলীপের
Dilip Ghosh On Babul Supriyo: শুক্রবার ত্রিপুরা যাচ্ছেন বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু তাঁর ত্রিপুরা সফরকে কটাক্ষ করলেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
কলকাতা: ২৫ নভেম্বর পুরভোট আগরতলায়। সামান্য পুরভোটেও যেন ত্রিপুরা এখন দেশের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে। পারদ চড়ছে ত্রিপুরায়। সেখানে ভিত শক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোটের বাকি আর সাত দিন। শেষ লগ্নে ত্রিপুরার মানুষের অন্দরে একেবারে তারকা-প্রবেশ করিয়ে মন জয় করতে চাইছে তৃণমূল। এই তালিকায় সাংসদ দেব থেকে শুরু করে বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী, জুন মালিয়ারা যেমন রয়েছেন, সেরকমই রয়েছেন সায়নী ঘোষ, ইন্দ্রনীল সেন, বাবুল সুপ্রিয়রা৷ আজ, শুক্রবার ত্রিপুরা যাচ্ছেন বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু তাঁর ত্রিপুরা সফরকে কটাক্ষ করলেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
শুক্রবার নিউটাউনের ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ত্রিপুরায় তৃণমূল প্রার্থী দিতে পেরেছে? কার হয়ে প্রচার করবেন? বিনা লড়াইয়ে বিজেপি জিতে যাচ্ছে। ওরা প্রার্থী পাচ্ছে না। আগে প্রার্থী দিন, তারপর তো প্রচার। কার হয়ে কথা বলবেন?” নাম না করেই বাবুলকে বেঁধেন তিনি।
বাবুল-দিলীপ টানাপোড়েন রাজনৈতিক মহলে চর্চিত। সম্প্রতি রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়, কলকাতায় মেয়র পদপ্রার্থী হিসাবে বাবুলকে ভাবা হচ্ছে। শীর্ষ নেতৃত্ব তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। এ প্রসঙ্গে কলকাতার বাবুল সুপ্রিয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে দিলীপ বলেন, “বাবুল সুপ্রিয় কলকাতায় কবে কাজ করেছেন? ওঁ ওখানকার ভোটারও নন।” এরপরই সাংবাদিকদের উদ্দেশে এই প্রসঙ্গের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “ওটা আপনাদের খাওয়ানোর জন্য করা হয়েছে, ওটা কিছুই হবে না।”
প্রসঙ্গত, এর আগেও বাবুলকে একাধিকবার কটাক্ষ করেছেন দিলীপ ঘোষ। সরাসরি বাবুলকে তোপ দেগে বলেছিলেন, “হ্যাঁ, একটা ব্যাঙ কোথাকার! যতদিন বিজেপিতে ছিলেন ততদিন বিজেপির ব্যাঙ ছিলেন। বিজেপির মতো মহাসমুদ্রে টিকতে পারেননি। তাই ডোবায় গিয়ে ডুব দিয়েছেন।” পাশাপাশি, দিলীপ আরও বলেন, “যে বা যাঁরা দল ছেড়ে যাচ্ছেন তাঁদের ভয় দেখিয়ে বা প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাঁদের যাওয়ায় বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না।”
দলে থাকতেই দিলীপ-বাবুল সম্পর্ক বিশেষ ভাল নয়। তৃণমূলে সদ্য যোগদানের পর দিলীপ ঘোষকে বর্ণপরিচয় উপহার দেওয়ার কথাও বলেন বাবুল। পাল্টা তাঁকে ‘রাজনৈতিক পর্যটক’ বলে আক্রমণ করেন দিলীপ। এমনকী, বাবুলের দলত্যাগের পর দিলীপ বলেছিলেন, “উনি তারকা। দলের হননি কখনও। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। আবেগ দিয়ে রাজনীতি করেন।”সেপ্টেম্বরেই সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন বাবুল সুুপ্রিয়। তার আগেই বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন তিনি।
দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর বিজেপিতে থাকলেও সংগঠনের সঙ্গে গাঁটছড়া কখনই মজবুত হয়নি বাবুলের। মন্ত্রিত্ব হারানোর পর যে বিষয়টি আরও বিপক্ষে যায় আসানসোলের সাংসদের। এমন কানাঘুষোও শোনা যায় যে, বঙ্গ বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর ভূমিকায় খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না। যে কারণে মন্ত্রিত্ব হারা বাবুলকে সংগঠনের কোনও ভূমিকাতেও দেখা যায়নি। ফলে পদ্ম ঘরে ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন এই গায়ক-সাংসদ।
মন্ত্রিত্ব হারানোর পর তিনি নিজে এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে তার বহিঃপ্রকাশ সোশ্যাল মিডিয়াতেই বারংবার দেখা যায়। সঙ্গে বাবুল এটাও দাবি করেন যে তিনি কখনই বিজেপি ছাড়া অন্য কোনও দলকে সমর্থন করবেন না। যদিও সেসব এখন অতীত। আপাতত নতুন ছকে বাবুল। একদা প্রতিপক্ষ অভিষেকের হাতে হাত রেখে নতুন পথ চলার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। বাবুলের কথায়, “প্রথম একাদশে সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি মমতা দিদি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
অভিষেকের সঙ্গে বাবুলের রাজনৈতিক রসায়নও এখন বঙ্গ রাজনীতিতে অত্যন্ত চর্চিত বিষয়। তবে এসবকেই ‘লোক খাওয়ানো’ বলে কটাক্ষ করেছেন দিলীপ ঘোষ। এবার বাবুলের ত্রিপুরা সফরকেও কটাক্ষ করলেন দিলীপ।
আরও পড়ুন: ‘মমতার এ রাজ্যে মন নেই’, পেট্রোলের দাম না কমায় খোঁচায় দিলীপের