‘কমিশনের সহায়তায় কোথাও কোথাও রিগিং হয়েছে’, বিধানসভাতে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরক মমতা
বঙ্গ বিধানসভার (Assembly) অধ্যক্ষ হিসাবে হ্যাটট্রিক করলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বিধানসভায় স্পিকার মনোনয়ন অধিবেশন ছিল।
কলকাতা: ভোটের আগে থেকেই কমিশনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির হয়ে পক্ষপাতের অভিযোগে কাঠগড়ায় তুলেছেন কমিশনকে। সেই একুশের ভোটে বিপুল জয়ের পরও কমিশনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মমতা। রিগিংয়ে সহযোগিতার অভিযোগ তুললেন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। বললেন, “আমি জানি ইলেকশন কমিশন রিগিং ঠেকাবে। টি এন সেশনের সময় থেকে এটা দেখে আসছি। এখন তো পুরো উল্টোটা। কমিশনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কোথাও কোথাও রিগিং সমাপন হয়েছে। এটা আমাদের কাছে খুব দুঃখের, লজ্জার। ”
বঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ হিসাবে হ্যাটট্রিক করলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বিধানসভায় স্পিকার মনোনয়ন অধিবেশন ছিল। সেখানেই বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন মমতা। বলেন, “সরকার হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি হুঙ্কার দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিছুতেই মানুষের এই জয় ওরা মানতে পারছে না। বাংলার মানুষের নিদান ওরা মানতে পারছে না। সেই জন্য এগুলি করছে। যা গণতন্ত্রকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়।”
এদিন মমতা অভিযোগ করেন, তাঁদের কাছে কোনও প্যানেল না চেয়েই জেলাশাসক, পুলিশসুপারদের একের পর এক বদলি করা হয়েছে। বিজেপির নির্দেশেই কমিশন তা করেছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। বলেন, “ইনএফিসিয়েন্ট লোকগুলো বসিয়ে দিয়েছে। তারপর বলছে ভায়োল্যান্স হয়েছে। আমি হিংসা পছন্দ করি না। আমরা শান্তির পক্ষে। তাই বলব হেরে গেছেন হারটা মেনে নিন। দয়া করে যেখানে জিতেছেন হিংসা করবেন না। আপনারা তো ৯৯ শতাংশ ফেক ভিডিয়ো, ফেক নিউজ ছড়াচ্ছেন।”
Election Commission needs immediate reforms. Bengal has a spine and it never bows. There was a conspiracy, all central ministers landed here. I don’t know how many crores they spent on planes & hotels. Money was flowing like water here: West Bengal CM Mamata Banerjee pic.twitter.com/Mt1ViF36kP
— ANI (@ANI) May 8, 2021
বিজেপি হার মানতে না পেরে এ ধরনের হিংসা ছড়াচ্ছে বলে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে দাবি করেন মমতা। একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশনের সংস্কার প্রয়োজন। কয়েকটা মনোনীত মানুষ, অবসরপ্রাপ্ত অফিসারকে নিয়ে চিরকুটে ট্রান্সফার করে দিচ্ছে। এ জিনিস যেন না হয়। তা হলে কিন্তু ভারতবর্ষের গণতন্ত্র রক্ষা হবে না।”
এদিন সর্বজনীন টিকাকরণের দাবিতেও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, যে টাকা খরচ করে সংসদ ভবনের সংস্কার হচ্ছে, স্ট্যাচু তৈরিতে যে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে, সে টাকায় দেশের ১ কোটি ৪০ লক্ষ নাগরিকের টিকাকরণ হয়ে যেত। এমনকী ভোট প্রচারেও বিজেপি ‘হোস পাইপে টাকা ঢেলেছে’ বলেও অভিযোগ করেন মমতা। তারপরও মানুষের রায় তাঁর দিকে গিয়েছে। সে কারণে মমতা ধন্যবাদ জানান রাজ্যের নারী শক্তিকে। একইসঙ্গে তরুণ প্রজন্মের প্রতিটাও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। মমতার সংযোজন, “এবার এই ভোটে সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে। তৃণমূলের বিধায়করা ৩১ হাজার ৩৬০ বা ৭৬০ গড়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ভারতবর্ষের কোথাও কোনওদিন তা হয়নি। এটা ইতিহাস। মানুষের সম্পূর্ণ সহযোগিতা না পেলে তা কখনও হতে পারে না। আজ কৃতজ্ঞতায় আমার মাথা নত হয়ে যাচ্ছে।”