AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

দমকলের অতীত থেকে শিক্ষার ফল! স্ট্র্যান্ড রোডের পুনরাবৃত্তি ঘটল না লেনিন সরণিতে

 লেনিন সরণি কাণ্ডে কোনওরকম বিতর্ক এড়াতেই সচেতন ভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটল দমকল। প্রায় দেড় ঘণ্টার ম্যারাথন চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এল আগুন। ঘটনায় মৃ্ত্যু হয়নি কোনও ব্যক্তির।

দমকলের অতীত থেকে শিক্ষার ফল! স্ট্র্যান্ড রোডের পুনরাবৃত্তি ঘটল না লেনিন সরণিতে
আগুন নিয়ন্ত্রণে দমকলের সচেতন পদক্ষেপ, নিজস্ব চিত্র
| Updated on: Apr 02, 2021 | 6:24 PM
Share

কলকাতা: সকাল ১১ টা। ১৫৭/সি লেনিন সরণির বহুতলে তখন ভয়াবহ আগুন (Fire)। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে চারপাশ। ঘটনাস্থলে, তড়িঘড়ি পৌঁছয় দমকলের ১০ টি ইঞ্জিন। পরে পৌঁছয় আরও ২টি। নানাভাবে পরিকল্পনামাফিক ঘণ্টা দেড়েকের ম্যারাথন প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ দিন নজর কাড়ে দমকলের (Fire Department) সচেতন পদক্ষেপ। স্ট্র্যান্ড রোডের ঘটনা থেকেই কি এবার শিক্ষা নিল দমকল? এমনটাই প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।

এ দিন, অগ্নি নির্বাপণে কী কী বিশেষ পদক্ষেপ করে দমকল?

১. একাধিক ইঞ্জিন অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই প্রথমেই ৮টি ইঞ্জিন পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে। ধীরে ধীরে বাড়ানো হয় ইঞ্জিনের সংখ্যা। আট থেকে সংখ্যাটি বেড়ে শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায় ১২। আগুন (Fire) নেভাতে জলের কমতি যাতে না হয়, সেইজন্যেই একযোগে পাঠানো হল একাধিক ইঞ্জিন। বহুতলে ছিল না লিফট। সিঁড়িও ব্যবহার করেননি দমকল কর্মীরা। বহুতলের ভেতর না ঢুকে বাইরে থেকে আগুন (Fire) নেভানোর কাজ করা হয়।

২. অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রপাতির বহুল ব্যবহার লেনিন সরণির ঘিঞ্জি এলাকার ওই বহুতলে একতলা থেকে আগুন ক্রমশ দোতলায় ছড়িয়ে পড়ে। দোতলায় পৌঁছতে দমকলের তরফে দুটি হাইড্রোলিক ল্যাডার সহ কাটার ও নানারকম অন্যান্য যন্ত্রপাতি আনা হয়। ঢিল মেরে ভাঙা হয় জানলার কাচ। শেষে ভ্যাকুয়ম ক্লিনারের মতো একটি বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে বের করা হয় ধোঁয়া। দোতলায় পৌঁছন চার জন দমকল কর্মী। লক্ষ্যণীয়, কর্মী সংখ্যা। এক জায়গায় একাধিক কর্মীকে না পাঠিয়ে আলাদা আলাদা করে ছোট ছোট দলে ভাগ করে পাঠানো হয় কর্মীদের।

৩. কর্মীদের সুরক্ষা বিধি ও উচ্চ আধিকারিকদের উপস্থিতি সচেতনভাবেই, কর্মীদের যেমন আলাদা আলাদা করে ছোট ছোট দলে ভাগ করে পাঠানো হয় দমকল কর্মীদের (Fire Department) একইসঙ্গে সকলের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয় ইউনিফর্ম। ধোঁয়ায় যাতে শ্বাসকষ্ট না হয় তাই কর্মীদের জন্য মাস্ক, অক্সিজেন সিলিন্ডার, চোখের জন্য বিশেষ গ্লাস ও অগ্নিনির্বাপক বিশেষ পোশাক দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, কিছু সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছন সেন্ট্রাল ডিসি রূপেশ কুমার। উপস্থিত ছিলেন দমকল প্রধান অভিজিৎ পাণ্ডে। উদ্ধারকার্যে গিয়ে অসুস্থ দমকল কর্মীকে দ্রুত পাঠানো হয় হাসপাতালে।

আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই বহুতল থেকে বেরিয়ে আসেন সকলে। ভেতরে কেউ আছে কি না তা নিশ্চিত করে নিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। বন্ধ করে দেওয়া হয় বহুতলের মূল প্রবেশপথও। দমকল কর্মীদের এই সতর্ক পদক্ষেপ কিন্তু চোখ এড়ায়নি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, স্ট্র্যান্ড রোড কাণ্ডের থেকেই একরকম সচেতনতার পাঠ নিয়েছে দমকল কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, ওই বহুতলে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সকলকেই বের করা আনা সম্ভব হয়েছিল। তাই, ধীরে সুস্থেই আগুন নেভানোর কাজ করে দমকল। ভ্যাকুয়ম ক্লিনার দিয়ে ধোয়া বের করার পরিকল্পনাটিও নতুন ও অভিনব বলেই দাবি করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।

প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ স্ট্র্যান্ড রোডের কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ে ভয়াবহ আগুন লাগে। মোট নয় জনের মৃ্ত্যু হয় যাঁদের মধ্যে চারজন ছিলেন দমকল কর্মী। আগুন লাগার সময়ে কেন চলেছিল লিফট কেনই বা উপযুক্ত সুরক্ষাবিধি না মেনে উদ্ধার কার্যে নেমেছিলেন দমকল কর্মীরা তা নিয়ে বিস্তর বিতর্কও হয়েছিল। মামলা ও পাল্টা মামলায় জর্জরিত হয়েছিল দমকল। লেনিন সরণি কাণ্ডে কোনওরকম বিতর্ক এড়াতেই সচেতন ভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটল দমকল। প্রায় দেড় ঘণ্টার ম্যারাথন চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এল আগুন। ঘটনায় মৃ্ত্যু হয়নি কোনও ব্যক্তির।

আরও পড়ুন: ধোঁয়া বের করতে উন্নত প্রযুক্তি, দ্রুত আগুন নেভাতে লেনিন সরণিতে বাড়ল ইঞ্জিনের সংখ্যা