AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Fire Brigade Crisis: ওভারটাইমের পারিশ্রমিক ৭-১২ টাকা! নেই স্থায়ী কর্মী নিয়োগ, হাড় গিলগিলে চেহারা দমকলের

Fire Fighters of West Bengal: কর্মীদের কথায়, ফায়ার অপারেটররা অতিরিক্ত কাজের জন্য ঘণ্টাপিছু পান মাত্র ৭ টাকা, লিডাররা পান ৯ টাকা এবং অফিসাররা পান ১২ টাকা করে।

Fire Brigade Crisis: ওভারটাইমের পারিশ্রমিক ৭-১২ টাকা! নেই স্থায়ী কর্মী নিয়োগ, হাড় গিলগিলে চেহারা দমকলের
দমকলের হাঁড়ির খবর
| Edited By: | Updated on: May 09, 2022 | 11:39 PM
Share

কলকাতা : সাম্প্রতিক অতীতে কলকাতায় একাধিক ভয়ঙ্কর আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। সেই আগুন নেভাতে গিয়ে কালঘাম পোহাতে হয়েছে দমকলকর্মীদের। অনেকেই বক্রোক্তির সুরে বলে থাকেন, গোটা কলকাতা শহরটাই যেন একটা জতুগৃহ। দমকলের উন্নয়নের জন্য একেবারেই কাজ হয়নি, এমন নয়। সুজিত বসু দায়িত্ব নেওয়ার পর বেশ কিছু কাজ করেছেন বটে, কিন্ত খামতি রয়ে গিয়েছে আসল জায়গাতেই। গোড়াতেই গলদ যাকে বলা যায় আর কি! কারণ, পর্যাপ্ত দমকল কর্মীর অভাব। যদি লোকেই না থাকে দমকলে, তাহলে আগুন নেভাবে কে? দমকল দফতরের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, রাজ্যে ১৪৪টি দমকল কেন্দ্রে মোট ৯,৪১৫ জন কর্মী থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে রয়েছেন মাত্র ৩,৭১৪ জন। বিভিন্ন বিভাগে ৫,৭০১টি পদে নিয়োগ হয়নি এখনও।

শুধু তা-ই নয়, রাজ্যের ২৩টি জেলার প্রতিটিতে এক জন করে ডিভিশনাল অফিসার থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে রাজ্যে ডিভিশনাল অফিসার পদে রয়েছেন মাত্র আট জন। ফলে এক-এক জন ডিভিশনাল আধিকারিককে একাধিক জেলার দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। যেমন, মালদহের ডিভিশনাল আধিকারিকের কাঁধেই রয়েছে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের দায়িত্ব। কিন্তু এ ভাবে একাধিক দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে সমন্বয়ের অভাব দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, দমকলে ফায়ার অপারেটরের সংখ্যাও যা প্রয়োজন, তার তুলনায় অনেকটাই কম। থাকার কথা ৫৫০০ জনের। কিন্তু রয়েছেন মাত্র ৯০০ জন। সেখানেও ৪৬০০টি পদ খালি। এ ছাড়া স্টেশন অফিসারের পদ খালি ৯০টি। ডেপুটি ডিরেক্টরের ৬টি পদের মধ্যে চারটিতে নিয়োগ হয়নি। সাব-অফিসারের পদে ৫৪০ জন থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে রয়েছেন মাত্র ১২০ জন।

আগুন লাগলে দমকলের গাড়িকে যিনি নেতৃত্ব দেবেন, সেই লিডার পদে রয়েছেন ৩১০ জন। থাকার কথা ১৪০০। এছাড়া ১৪০০ জন ফায়ার ইঞ্জিন অপারেটর তথা ড্রাইভার বা এফইওডি পদে থাকার কথা। অথচ রয়েছেন ৫০০ জন। আবার মোবিলাইজ়িং ও অ্যাসিস্ট্যান্ট মোবিলাইজ়িং অফিসার নেই যথাক্রমে ২১ এবং ৫৪ জন।

কর্মী নিয়োগের কথা বলা হলেও, কোষাগারের অর্থাভাবের কারণে তা বার বার ধাক্কা খাচ্ছে। নতুন নতুন দমকল কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে, গাড়িও কেনা হচ্ছে বটে। কিন্তু আগুন নেভানোর কাজ করছেন কারা? অক্সিলিয়ারি ফায়ার পার্সোনেলরা; এককথায়, যাঁরা স্থায়ী কর্মী নন। আরও ভয়ঙ্কর প্রশ্ন হল, যাঁরা এই মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করছেন, তাঁরা কি পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন? দমকলে যাদের স্থায়ী পদে নিয়োগ করা হয়, তাদের ছয় মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যাদের অক্সিলিয়ারি ফায়ার পার্সোনেল হিসেবে নিযুক্ত করা হচ্ছে, তাদের কোনওরকমে এক মাস প্রশিক্ষণ দিয়েই কাজে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে প্রতি মুহূর্তে বিপদ আরও ভয়ঙ্কর হওয়ার আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।

দমকল বিভাগ। জরুরিকালীন পরিষেবা। ছুটির কোনও ঠিক ঠিকানা নেই। কাজের সময়ও সেভাবে নির্দিষ্ট নয়। তার উপর আবার লোক কম। স্বাভাবিকভাবেই, সেই কর্মীসংখ্যার ঘাটতি পূরণ করতে ওভারটাইম তো করতেই হয়। কখনও দুই ঘণ্টা, তো কখনও আবার চার-পাঁচ ঘণ্টা। আপনি হয়ত ভাবতেই পারেন, ওভারটাইম করেন তো কী? টাকা তো নিশ্চয়ই পান অতিরিক্ত সময় কাজে। হ্যাঁ, অতিরিক্ত সময় কাজ করার জন্য টাকা পান দমকলকর্মী। কিন্তু কত জানেন? ওভারটাইম বাবদ তাঁরা যে টাকা পারিশ্রমিক পান, তা যে কোনও সরকারি কর্মীর ওভারটাইম পারিশ্রমিক হতে পারে, তা হয়ত আপনার কল্পনারও অতীত। কর্মীদের কথায়, ফায়ার অপারেটররা অতিরিক্ত কাজের জন্য ঘণ্টাপিছু পান মাত্র ৭ টাকা, লিডাররা পান ৯ টাকা এবং অফিসাররা পান ১২ টাকা করে।

দফতরের লোকবলের এমন করুণ দশা যে একেবারে অফিসার ব়্যাঙ্ক থেকে শুরু করে ফায়ার অপারেটর ব়্যাঙ্ক পর্যন্ত – প্রায় সব স্তরেই ওভারটাইম করতে হচ্ছে অনেক কর্মীকে। কিন্তু এত কিছুর পরেও মিলছে না ওভারটাইমের পর্যাপ্ত পারিশ্রমিক। দমকল সূত্রে খবর, ওভারটাইমের কাজের টাকা যাতে ঘণ্টাপিছু বাড়ানো হয়, তার জন্য অর্থ দফতরে ফাইল পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ব্যাস ওইটুকুই। তারপর সে নিয়ে আর বিশেষ কিছু সিদ্ধান্ত হয়নি।