প্যাডেল আর চাকায় ভর করে কলকাতা থেকে সিয়াচেন যাচ্ছেন ‘রিকশাওয়ালা’ সত্যেন
‘Siachen Chale Rickshawala’: সত্যেন দাস জানান, ১৯৯৩ সালে প্রথম পুরী গিয়েছিলেন সাইকেলে। আড়াই দিনে পৌঁছেছিলেন সেখানে।
কলকাতা: কোথায় কলকাতা! আর কোথায় সিয়াচেন! রিকশায় চেপে সেই সুদূরে পাড়ি দিচ্ছেন বছর পঞ্চাশের সত্যেন দাস। ঘুরতে ভালবাসেন ভীষণ। ছোটবেলায় পাড়ার দাদুদের কাছে ঘোরার গল্প শুনে মনে মনে চলে যেতেন বহু দূর। তবে সে সব জায়গায় যেতে যে প্রচুর টাকা লাগে। সেখান থেকেই নতুন কিছু করার ইচ্ছা তৈরি হল বারুইপুরের সত্যেনের মনে। ১৯৯৩ সালে প্রথম পুরীতে যাওয়া। সে বার অবশ্য সঙ্গী ছিল সাইকেল। পরে স্ত্রীর ইচ্ছায় ঘোরা শুরু হল তিন চাকার রিকশায়। এখন শুধু ঘোরা নয়, সঙ্গে থাকে বিশ্ব উষ্ণায়ন, প্রকৃতি বাঁচাও সবুজ বাঁচাও নিয়ে বার্তাও। রবিবার রাজারহাট গোপালপুরের বাবলাতলা থেকে সিয়াচেন সীমান্ত পর্যন্ত তাঁর যাত্রার শুরু হল। এবার সঙ্গে নিয়েছেন একগুচ্ছ মাস্ক। বললেন, “মানুষকে দেব। করোনা নিয়ে সচেতন করব।”
বারুইপুরের দক্ষিণ গড়িয়ার বাসিন্দা সত্যেন দাস। ঘরে স্ত্রী, সন্তান রয়েছে। সত্যেন দাস জানান, “আমা৬-৭ বছর বয়সে ভ্রমণের গল্প শুনতাম পাড়ার দাদুদের কাছে। খুব ইচ্ছা হতো যাই। এরই মধ্যে শুনলাম আমার এক দাদু ৮০ বছর বয়সে সাইকেল চালিয়ে হরিদ্বার বৃন্দাবন গিয়েছেন। ব্যস! সেটাই অনুপ্রেরণা হয়ে গেল।”
সত্যেন দাস জানান, ১৯৯৩ সালে প্রথম পুরী গিয়েছিলেন সাইকেলে। আড়াই দিনে পৌঁছেছিলেন সেখানে। এরপর সে বছরই দার্জিলিং, হরিদ্বার সাইকেলে যান। ১৯৯৪ সাল থেকে গোটা ভারত ঘোরা শুরু তাঁর। তবে রিকশায় চড়ে ঘোরা ২০০৭ সালে। বললেন, “বউ আর আড়াই বছরের মেয়েকে নিয়ে পুরী গিয়েছিলাম বউয়ের আবদারে। সেই প্রথম রিকশায় বেরোনো। ৬ দিনে পুরী পৌঁছেছিলাম দূষণমুক্ত পৃথিবী গড়ার বার্তা নিয়ে। এবার গ্লোবাল ওয়ার্মিং, সেভ ওয়াটার সেভ নেচারের বার্তা দেব। সঙ্গে এবার মাস্ক বিতরণ করব। কোভিড বিধি সবাইকে মানতে বলব।”
এই অভিযাত্রী জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর রোমাঞ্চকর জীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে তথ্যচিত্র ‘লাদাখ চলে রিকশাওয়ালা’। এক বার নয়, দু’বার তিনি রিকশা নিয়ে গিয়েছেন লাদাখ। দেশের-বিদেশের বহু মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এবারও প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার পথে সিয়াচেন পাড়ি দেবেন এই ‘রিকশাওয়ালা’। আরও পড়ুন: কর্মব্যস্ত সোমবারে ট্যাক্সি ধর্মঘট, চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে পারেন নিত্যযাত্রীরা