কলকাতা: প্রায় ১০ বছর হয়ে গেল তিনি ক্ষমতায় রয়েছেন। নিন্দুকরা বলেন, তাঁর শাসনকালে বাংলার ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ ক্রমেই অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, কারণ রাজ্যে কোনও বড় শিল্প বা বিনিয়োগ নেই। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এহেন মমতাই বুধবার বিকেলে টুইট করে আশার আলো দেখালেন, দিলেন অভয়বাণীও। জানিয়ে দিলেন বাংলার ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তাঁর সরকার বদ্ধপরিকর।
বুধবার বিকেল ৪ টে নাগাদ একটি টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী, টুইটে তিনি লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্মসংস্থান তৈরিতে বদ্ধপরিকর। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বাংলা। টিসিএস কলকাতার ৫০ হাজার জনকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে, ২০১১ সালে এই সংখ্যাটাই ছিল ১৫ হাজার। কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে তিন গুণ। সকলকে আমার শুভেচ্ছা।”
GoWB is committed towards generating employment!
Happy to share that the IT sector in Bengal has touched a new high. TCS has given employment to 50,000 professionals in Kolkata! Back in 2011, the number was only 15,000 and now, it has increased by 3 times.
Best wishes to all!
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) December 22, 2021
কর্মসংস্থানই যে মমতার পাখির চোখ কলকাতা পুরভোটের প্রচারে নেমেই তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। বিভিন্ন জনসভা থেকে বলেছিলেন, “সব কাজ হয়েছে গিয়েছে। এবার ছেলে মেয়েদের কর্মসংস্থান ও নতুন বিনিয়োগই আমার প্রধান লক্ষ্য।” মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা ভালই বোঝেন, এই করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই নিজের চাকরি হারিয়েছেন, পাশাপাশি রাজ্যের কাজকর্মের সুযোগ নিয়ে যুবসমাজের একটা বড় অংশের মমতা সরকারের প্রতি ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভ থেকেই তাদের একটা বড় অংশ ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সমর্থন। তাই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই ক্ষোভ প্রশমন করা প্রয়োজন।
করোনা আবহে ২০২০ সালে বাদ পড়লেও এই বছর বিনিয়োগ টানতে ঘটা করে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এমনকি শিল্পপতিদের ইতিবাচক বার্তা দিতে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন স্বয়ং মমতা। মোদী যে আসছে সেকথাও আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মোদীকে আমন্ত্রণ জানানোর পর আশ্চর্যজনকভাবে মোদী ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন মমতা। বলা বাহুল্য আদানিও বাণিজ্য সম্মলনে উপস্থিত থাকবেন। রাজনৈতিক মহলরে মতে, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তার যে চেষ্টার কোনও খামতি নেই সেই বার্তাই দিতে চাইছেন মমতা।
উল্লেখ্য, রাজ্যে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও নিয়মিত নিয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেকের। নিয়োগ হলেও সেক্ষেত্রে বেশ কিছু বেনিয়মের অভিযোগও সামনে এসেছে। এই নিয়ে যুবসমাজের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। চুক্তিভিত্তিক সরকারি কর্মীদের নিয়েও পুরভোটের প্রচার থেকে বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, “কনট্র্যাকচুয়ালের কথা শুনলেই অনেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এই চাকরি খারাপ কী? ৬০ বছর অবধি চাকরি থাকবে। অবসরের সময় টাকাও পাওয়া যাবে।” সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও আগামি দিনে মুখ্যমন্ত্রী কোনও আশার কথা শোনান কিনা সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।
আরও পড়ুন Photo Gallery: ‘কলকাতায় মহিলা মেয়র চাই’, ‘ক্রিসমাস কার্নিভাল’-এ মাতলেন শোভন-বৈশাখী-মদন
আরও পড়ুন Madhyamik: জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দেওয়ার আগে ‘জীবন’ শেষ! ডেঙ্গিতে মৃত্যু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর