Fake birth certificate: কীভাবে ভূরি ভূরি ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট ইস্যু হচ্ছে পঞ্চায়েত অফিস থেকে? তদন্তে নেমে থ আধিকারিকরা
Fake birth certificate: তদন্তকারীরা বলছেন, পোর্টালের এক্সেস নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় জন্ম শংসাপত্র ইস্যু হওয়ার সময় প্রধানের মোবাইল নম্বরে আর OTP পৌঁছত না। অন লাইনে আবেদনকারীদের নামে জন্ম শংসাপত্র ইস্যু করার সময় OTP পৌঁছত গৌতমের নিজের মোবাইলে। সেই OTP ব্যবহার করে অনায়াসে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র ইস্যু হয়ে যেত।

কলকাতা: হাজার হাজার ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র। এত সহজে কী করে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র বানানো যাচ্ছে? কারা ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট দিচ্ছেন? সম্প্রতি কলকাতার বেশ কিছু পাসপোর্টের আবেদনের জন্য জমা করা ভুয়ো জন্ম শংসাপত্রের তথ্য হাতে পায় কলকাতা পুলিশের সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (SCO)। বিভিন্ন জায়গার পাশাপশি তদন্তে সামনে উঠে আসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার পাঠানখালি পঞ্চায়েতের নাম। সেই তদন্তে পাঠানখালি পঞ্চায়েতের চুক্তিভিত্তিক কর্মী গৌতম সর্দারকে হেফাজতে নেয় SCO। ভবানীপুর থানার মামলায় হেফাজতে নিয়ে এই জালিয়াতির ফাঁদ কীভাবে তিনি বিছিয়েছিলেন, সেই সব তথ্য হাতে পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তদন্তকারীদের নজরে এখন পাঠানখালি পঞ্চায়েতের প্রধান সূচিত্রা ভুঁইঞা। গতকাল পাঠানখালি পঞ্চায়েতের প্রধানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা।
কীভাবে জন্ম শংসাপত্র ইস্যু হয়?
রাজ্যের যে কোনও পঞ্চায়েত থেকে জন্ম শংসাপত্র ইস্যু হওয়ার সময় প্রধানের মোবাইল নম্বরে OTP পৌঁছয়। নির্দিষ্ট সরকারি পোর্টালে সেই OTP দেওয়ার পরেই ইস্যু হয় জন্ম শংসাপত্র। যা দেখা যায় সরকারি পোর্টালে। পোর্টাল থেকেই ডাউনলোড করে পাওয়া যায় জন্ম শংসাপত্রের কপি।
এই খবরটিও পড়ুন




পঞ্চায়েত প্রধানের অজান্তে একজন চুক্তিভিত্তিক কর্মী গৌতম সর্দারের পক্ষে কীভাবে এত সংখ্যক ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট ইস্যু করা সম্ভব? পঞ্চায়েত প্রধান কিছুই জানতে পারলেন না, সেটাই বা কীভাবে সম্ভব? প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দারা যে তথ্য আদালতে তুলে ধরছেন, তাতে চুক্তিভিত্তিক কর্মী গৌতম সর্দারের হাত ধরেই প্রায় ৩৫০০ ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র ইস্যু হয়েছে।
এই তথ্য আদালতে তুলে ধরার পরেই বিচারকের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তদন্তকারীদের। তাহলে টাকার বিনিময়ে কীভাবে সকলের নজর এড়িয়ে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্রের কারবার চালাচ্ছিলেন গৌতম? জানা গিয়েছে, দীর্ঘ প্রায় ৬-৭ বছর ধরে এই অবৈধ কাজ চালাচ্ছিলেন তিনি। গৌতম কম্পিউটার সম্পর্কিত বিষয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। পাঠানখালি পঞ্চায়েতের জন্ম শংসাপত্র সংক্রান্ত পোর্টালের যাবতীয় কাজের দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। সরকারি পোর্টালের এক্সেস নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছিলেন গৌতম।
তদন্তকারীরা বলছেন, পোর্টালের এক্সেস নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় জন্ম শংসাপত্র ইস্যু হওয়ার সময় প্রধানের মোবাইল নম্বরে আর OTP পৌঁছত না। অন লাইনে আবেদনকারীদের নামে জন্ম শংসাপত্র ইস্যু করার সময় OTP পৌঁছত গৌতমের নিজের মোবাইলে। সেই OTP ব্যবহার করে অনায়াসে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র ইস্যু হয়ে যেত। সরকারি পোর্টালেও আপলোড হয়ে যেত সেই নথি। জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত প্রধান সূচিত্রা ভুঁইঞা কম্পিউটার সম্পর্কে অনভিজ্ঞ থাকায় সেই সুযোগকে হাতিয়ার করেই পঞ্চায়েত প্রধানের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে নিজের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে OTP দিয়ে একের পর এক জন্ম ও মৃত্যু সার্টিফিকেট ইস্যু করতে থাকে।
হাওড়ার শিবপুর, উলুবেড়িয়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনার একাধিক এলাকায় গৌতমের এজেন্ট ছড়িয়ে আছে বলেই দাবি তদন্তকারীদের। এজেন্টদের নাগাল পেতে ধৃত গৌতমের ব্যাঙ্ক লেনদেন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। গৌতমের সঙ্গে যাঁদের আর্থিক লেনদেন হয়েছে, সেই তথ্য খতিয়ে দেখে এজেন্টদের নাগাল পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তে উঠে এসেছে, এজেন্টের থেকে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র তৈরি করার জন্য নেওয়া হত ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। কিন্তু এজেন্ট কাস্টমারদের থেকে আরও বেশি টাকা নিচ্ছে জানতে পেরে গৌতম টাকার অঙ্ক আরও বাড়িয়ে দেন। পুরোনো এজেন্ট বদল করে নতুন এজেন্টদের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। এমনকি সরাসরি কাস্টমারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বেশি টাকায় ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র তৈরি করে দিতে থাকেন।





