Human Trafficking: সাজার হাত থেকে বাঁচতে লাখ লাখ টাকা অফার সাজাপ্রাপ্তদের, যৌনপল্লিতে পাচার হওয়া এক নাবালিকার কেসে বিস্ফোরক তথ্য আইনজীবীদের
Human Trafficking: এরকমই একটি কেস স্টাডি সামনে এসেছে। এক কিশোরীকে পাচারের ঘটনায় এরকমই প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল। সেই প্রলোভনে আর নতুন করে পা দেননি নির্যাতিতা। শত দারিদ্রর মধ্যেও প্রলোভন থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে আইনি লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে ৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করলেন এক মহিলা।
কলকাতা: কেউ চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যেতেন, কেউ ভালোবাসার! কিন্তু নিয়ে যাওয়ার পর ঠিকানা আলাদা হলেও প্রত্যেকেরই পেশা জুটত একই। যৌনপল্লিতে ঠাঁই হত তাঁদের। নারী পাচারের এহেন গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ দায়ের হয় পুলিশের খাতায়। পুলিশি ধরপাকড়ে গ্রেফতারও হয়, গ্রেফতারির পর আদালতে পেশ, সাজা। কিন্তু সেই সাজা থেকে বাঁচতেও চাপ তৈরি হয় নিগৃহীতাদের পরিবারের ওপর। শাস্তির হাত থেকে বাঁচতে লাখ লাখ টাকার প্রলোভন দেখায় অভিযুক্তরা, আর সেই দরেও চলে রীতিমতো নিলাম। কোনও অভিযুক্ত দেড় লাখের ডিল করতে চান, তো অন্যজন দর হাঁকেন চারগুণেরও বেশি! পুলিশি তদন্তে এহেন একাধিক কেস রয়েছে। কিন্তু এসবের পরেও পুলিশ আর স্পেশ্যাল সরকারি কৌঁসুলির প্রয়াসে সাজা পান মানব পাচারে অভিযুক্তেরা।
এরকমই একটি কেস স্টাডি সামনে এসেছে। এক কিশোরীকে পাচারের ঘটনায় এরকমই প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল। সেই প্রলোভনে আর নতুন করে পা দেননি নির্যাতিতা। শত দারিদ্রর মধ্যেও প্রলোভন থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে আইনি লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে ৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করিয়ে ছাড়লেন এক মহিলা।
পাঁচ জনকে সাজা দিল ডায়মন্ডহারবার অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ১ নম্বর ফার্স্ট কোর্টের বিচারক জয়প্রকাশ সিং -র এজলাস। অভিযুক্ত ৫ জনের মধ্যে বুধবার তিন জনের ১৪ বছরের জন্য এবং ২ জনের ১০ বছরের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিন জনের বিরুদ্ধে পাচার, যৌন নিগ্রহ পক্সো অ্যাক্টে ১৪ বছরের সাজা দেওয়া হয়। বাকি ২ জনকে পাচার, পক্সো অ্যাক্টে ১০ বছরের সাজা।
ঘটনার সূত্রপাত কোভিডের ঠিক আগে। মন্দির বাজার থানা এলাকার বছর ষোলোর এক নাবালিকাকে বাড়ির লোকজন বিয়ে দিয়ে দেন। কিন্তু বিয়ের পরই শ্বশুরবাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে বাপের বাড়ি চলে আসে ওই কিশোরী। কিন্তু সেখানেও এলেও ঠাঁই মেলেনি। এরপর কাজের লোভে এলাকার পরিচিত জামাইবাবুর সঙ্গে মুম্বই পাড়ি দেয় বছর ওই কিশোরী। পাঁচ হাত বদলাতে বদলাতে অবশেষে ঠাঁই হয় মুম্বইয়ের এক যৌনপল্লিতে।
যৌনপল্লিতে থাকতে চায়নি সে। দু- দুবার যৌনপল্লি থেকে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় । কিন্তু তৃতীয়বার সক্ষম হয়। তখন অবশ্য কিশোরী নয়। প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠেছেন তিনি। মুম্বই পুলিশ উদ্ধার করে সেখানকার এক হোমে পাঠায়। কিন্তু বাড়ি ফেরা হয়নি। মাঝে কোভিড। ১ বছর মুম্বইতেই হোমে থাকতে হয় তাঁকে। কলকাতার এক হোমে আনার পরে নির্যাতিতার বয়ানের ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের হয়। ২০২১ সালের মামলা দায়ের হওয়া মামলার নিষ্পত্তি ঘটে বৃহস্পতিবার। এই মামলার স্পেশ্যাল সরকারি কৌঁসুলি দেবরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এই মামলায় সব অপরাধীই ধরা পড়ে। সকলকেই সাজা দেওয়া গিয়েছে।”