
কলকাতা: ‘জয়টা ছিনিয়ে আনার জন্য আমি গিয়েছিলাম। এনেছি।’ তীব্র বিতর্কের আবহে প্রথমবার টিভি৯ বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে এসে এ ভাষাতেই গর্জে উঠলেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রসঙ্গত, মহাসমারোহে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির করেছে রাজ্য সরকার। সরকারের ডাকেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পা পড়েছিল দিলীপ ঘোষের। হাসিমুখে ছবি তুলেছিল যুযুধান দুইপক্ষ– মমতা-দিলীপ। আর তাতেই যেন জোরদার বিস্ফোরণ পদ্ম শিবিরের অন্দরে। সুকান্ত থেকে সৌমিত্র, ধেয়ে এল তোপের পর তোপ। কিন্তু, গত দু’দিন ধরে মোটের উপর স্ট্রেট ব্যাটেই খেলে চলেছেন দিলীপ। এবার টিভি৯ বাংলার স্টুডিয়োতে এসে অকপটেই বললেন, “যেদিন থেকে রাজনীতিতে পা দিয়েছি সেদিন থেকে যুদ্ধই লড়ছি। কখনও বাইরে, কখনও ভিতরে। লড়তেই হবে। এটাই রাজনীতি। লড়াইটাই তো জীবন। তবে দলের বিরুদ্ধে আমি কোনওদিন লড়িনি। আমি কোনওদিন দলের নির্দেশের বাইরে যাইনি।” একইসঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “আমার পার্টি হিন্দুদের কথা বলবে আর হিন্দুত্বের বিষয় থেকে পালিয়ে যাবে কেন? দিলীপ ঘোষ তো পালিয়ে যায় না।”
দিলীপের দাবি, আদতে বিজেপির দেখানো লাইনেই হাঁটতে বাধ্য হয়েছে তৃণমূল। দিনের শেষে পদ্ম শিবিরেরই নৈতিক জয় হয়েছে। আর সেই জয় ছিনিয়ে আনতেই সস্ত্রীক চলে গিয়েছিলেন দিঘায়। দর্শন করেছেন বাংলার জগন্নাথকে। এদিন দিলীপ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ ছিল সেক্যুলারদের জায়গা। কমিউনিস্টরা বলতো এই বিবেকানন্দ আর আরএসএসের বিবেকানন্দ এক নয়। তৃণমূল এখন বলছে, রামায়নের নাম আর বিজেপির রাম এক নয়। এটা বিজেপির রাম নবমী। কিন্তু, সেই রাম নবমীর মিছিল তৃণমূলকেও করতে হচ্ছে। বিজেপি মন্দির পলিটিক্স করে। এটা সাম্প্রদায়িক। কিন্তু, আজকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েও মন্দির পলিটিক্সে আসতে হচ্ছে। জিতটা কার? নৈতিক জয় বিজেপির। এত বড় জয় হল দিলীপ ঘোষ দূরে থাকবে? জয়টা ছিনিয়ে আনার জন্য আমি গিয়েছিলাম। এনেছি।”
তবে দলের সভাপতি যদি তাঁকে বারণ করতেন তাহলে তিনি যেতেন না। কিন্তু, আদৌও মন্দিরে যেতে বিজেপির কেউ বারণ করতে পারে বলে মনে করেন না দিলীপ। বলেন, “যে বিজেপি মন্দির পলেটিক্স করেছে, মন্দিরকে কেন্দ্র করে আমাদের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে সেই মন্দির কি বিজেপি বয়কট করতে পারে? বিজেপি বয়কট করেনি। সব ব্যক্তিগত ব্যাপার। রুচি, ইচ্ছা, সমস্যা আছে। কেউ গেছে কেউ যায়নি। আমাকে যদি আমার সভাপতি বলতো আপনি যাবেন না। তাহলে আমি যেতাম না। আমি জানি বিজেপির কেউ বলতে পারে না মন্দিরে যেও না।”