কলকাতা: এতদিন শুধুই শোনা যাচ্ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। টানা দু’বার ডায়মন্ড হারবার জিতেছেন তৃণমূলের সেনাপতি। বিরোধী শিবির থেকে কোনও প্রার্থীর নাম না আসায় খোঁচা দিতে ছাড়েননি তৃণমূল নেতারা। প্রার্থী চেয়ে ওয়ান্টেড পোস্টারও পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত সেই ডায়মন্ড হারবারে প্রার্থী দিয়েছে আইএসএফ। তবে যে নওশাদের এই আসনে দাঁড়ানো নিয়ে বিস্তর জল্পনা হয়েছিল তাঁকে টিকিট দেয়নি দল। উল্টে লড়ছেন মজনু লস্কর। এদিকে নাম ঘোষণা হতে না হতেই অভিষেককে এক হাত নিলেন মজুন। চাঁচাছোলা ভাষায় দাগলেন তোপ। খোঁচা দিয়ে বললেন, “আমার বিরুদ্ধে যিনি প্রার্থী হয়েছেন সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়স তো ৩৬ বছর। আমার বয়স ৪২। তাহলে ভাইকে দাদা কী ভয় পায়? আপনারা আপনাদের ভাইকে কী ভয় পান?”
এখানেই না থেমে অভিষেকের সংসদে অনুপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মজনু। বলেন, “অভিষেকবাবু খুব সমস্যার মধ্যে আছেন। ওনার চোখের যন্ত্রণা দিনের পর দিন বাড়ছে। পার্লামেন্টে বেশিরভাগ দিন অনুপস্থিত ছিলেন। ডায়মন্ড হারবারের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়ে কিছুই বলেননি।” অভিষেকের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আরও বলেন, “আমি ওর দাদা হিসাবে বলছি ভাল করে চোখের চিকিৎসা করুন। আমেরিকায় যেতে হলে যান। কারণ চোখ গেলে আর ফিরে পাওয়া যাবে না। আপনি আপনার স্বাস্থ্যটা আগে বাঁচান। আমি আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। কথা দিচ্ছি দাদা হিসাবে আপনার পাশে থাকব।”
প্রসঙ্গত, শুরু থেকেই বাম-কং-আইএসএফের মধ্যে আসন সমঝোতার কথা শোনা যাচ্ছিল। জলও গড়িয়েছিল অনেক দূর। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত যাদবপুর, মুর্শিদাবাদ, শ্রীরামপুরের মতো আসনে প্রার্থী দিয়ে দিয়েছে আইএসএফ। সেখানে রয়েছে বামেদের প্রার্থী। তবে কী বেলাইন হল বামেদের সমঝোতা এক্সপ্রেস? উত্তরে মজনু বলছেন, “আমরা কারও পক্ষে বা বিপক্ষে মতামত দেওয়ার আগে কালেক্টিভ সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ করি। আমাদের দল চেয়েছিল সবাইকে নিয়ে বিজেপিকে হারাতে। কিন্তু, অনেকেই সাহায্য করেনি। আমাদের সাহায্য একশো শতাংশ ছিল।”
কিন্তু, যে আসনে নওশাদের দাঁড়ানো নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল সেখানে তিনি কেন? মজনুর যুক্তি, “কে প্রার্থী সেটা বড় কথা নয়। কোন প্রার্থী ডায়মন্ড হারবারের সামাজিক, অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সহায়ক তার ভিত্তিতে লড়াই হবে। কাউকে না কাউকে তো দাঁড়াতে হবে।” তবে নওশাদের বদলে কেন তাঁকে দাঁড় করানো হয়েছে সরাসরি এর উত্তর না দিয়ে দলের কোর্টে বল ঠেলে তিনি বলেন, “নওশাদের বদলে আমাকে কেন দেওয়া হয়েছে তা দল বলতে পারবে। তবে দলে সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিকভাবেই নেওয়া হয়। দল আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল আমি তাতে সম্মতি প্রকাশ করেছি।”