
প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ ও কৌশিক ঘোষের রিপোর্ট
কলকাতা: মুর্শিদাবাদের হিংসা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্ফোরক রিপোর্ট দিয়েছে হাইকোর্টের তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটির। স্থানীয় তৃণমূল নেতা মেহবুব নেতার নেতৃত্বেই মুর্শিদাবাদে হিংসা। বলছে রিপোর্ট। তা ঘিরেই জোর শোরগোল রাজনৈতিক আঙিনায়। তৃণমূলের হুমায়ুন কবীর বলছে অবস্থা যা তাতে ভোট বাক্সে প্রভাব পড়তে বাধ্য। ছেড়ে কথা বলতে রাজি নয় বিজেপি। এদিকে যে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে সেই মেহবুব আলাম সব কিছু অস্বীকার করছেন।
এদিকে হাইকোর্টের অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্ট বলছে, বাড়িতে আগুন লাগিয়ে জলের লাইন কেটে দেয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে। ৩০০ মিটার দূরে থানা, তবু নিষ্ক্রিয় ছিল পুলিশ। পুলিশ পুরোপুরি হাত গুটিয়ে ছিল। বলছে অনুসন্ধান কমিটি। পাশাপাশি মালদহে আশ্রয় নেওয়া মহিলাদের জোর করে ফেরানো হয় বলে অভিযোগ। শুধু বেতবোনাতেই ১১৩টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর যদিও মনে করছেন মুর্শিদাবাদের হিংসার ঘটনা ছাব্বিশের ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলবে। বহু মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে, প্রশাসনের উপরে মানুষ ক্ষুব্ধ। প্রার্থী বদল করলে কিছুটা হলেও ড্যামেজ কন্ট্রোল সম্ভব। কারণ, তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের উপর মানুষের প্রবল ক্ষোভ রয়েছে, এমনটাই দাবি হুমায়ুনের। তিনি বলছেন, “৬৫টা কেস হয়েছে। তাতে তিনশোর বেশি গ্রেফতার, এখনও কয়েক হাজার মানুষ এলাকায় থাকতে পারছে না। এর কিছুটা প্রভাব ভোটে পড়বে বলে আমি মনে করি। প্রার্থী বদল করলে পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দেওয়া যাবে। কারণ তাঁদের উপরে মানুষের অনেক ক্ষোভ রয়েছে।”
বিজেপি যদিও বলছে এর পিছনে অনেক বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে। বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, “যা নির্দেশ ছিল তা করে দেখিয়েছে মেহেবুবের মতো দুষ্কৃতীরা। এটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। ঘটনার আগে পরের অবস্থা বিচার করে রিপোর্ট দেওয়া উচিত।” যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে মেহবুব আলাম বলছেন, “আমি ঘটনার সময় প্রাণের ভয়ে নাদাবপাড়ায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। লোকাল থানার ওসিকে ফোন করলে ওনাকে পাওয়া যায়নি। ৪ ঘণ্টা আমি ওখানে আটকে ছিলাম। আমি যদি নাদাবপাড়ায় থাকি তাহলে বেতবোনাতে কী করে এত লোক নিয়ে আক্রমণ করতে গেলাম? আমি গিয়ে দেখলে ফুটেজ দেখাক। প্রমাণ করতে পারলে আমি ফাঁসির মঞ্চে উঠতে রাজি আছি। জল বন্ধের মতো এত বড় মিথ্যা বলা উচিত নয়। রাজনীতির শিকার করছে আমাদের। এই মিথ্যা অভিযোগ টিকবে না।”