Madan Mitra on RG Kar: ‘মেয়ের ক্ষতিপূরণের টাকা লাগবে? সেটা পরিষ্কার বলুন…আপনারা চাইলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-মানুষ সকলে টাকা দেবে’, ‘সীমা ছাড়ালেন’ মদন

Madan Mitra on RG Kar: কোমর বেঁধে একযোগে আক্রমণের ময়দানে নেমেছেন কুণাল ঘোষ, ফিরহাদ হাকিম, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা। আর এবার তাঁদের 'দলেই' নাম লেখালেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তিলোত্তমার মা-বাবার ক্ষতিপূরণ লাগবে? প্রশ্ন মদনের। যদি ক্ষতিপূরণের টাকা প্রয়োজন তাহলে মানুষ-সরকার দেবে।

Madan Mitra on RG Kar: 'মেয়ের ক্ষতিপূরণের টাকা লাগবে? সেটা পরিষ্কার বলুন...আপনারা চাইলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-মানুষ সকলে টাকা দেবে', 'সীমা ছাড়ালেন' মদন
মদন মিত্র, কামারহাটির তৃণমূল বিধায়কImage Credit source: Tv9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 28, 2025 | 5:21 PM

কলকাতা: তিলোত্তমার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয় রাইয়ের ফাঁসি চান না মৃত চিকিৎসকের বাবা-মা। কলকাতা হাইকোর্টে সে কথা উল্লেখ করার পর থেকে শাসকদলের নেতাদের কম আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে না তাঁদের। কোমর বেঁধে একযোগে আক্রমণের ময়দানে নেমেছেন কুণাল ঘোষ, ফিরহাদ হাকিম, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা। আর এবার তাঁদের ‘দলেই’ নাম লেখালেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তিলোত্তমার মা-বাবার ক্ষতিপূরণ লাগবে? প্রশ্ন মদনের। যদি ক্ষতিপূরণের টাকা প্রয়োজন তাহলে মানুষ-সরকার দেবে। আর মদনের এই বক্তব্যের পরই নিন্দার ঝড় সব মহলে। তৃণমূল বিধায়ক সব সীমা লঙ্ঘন করেছেন মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।

মদন প্রথমে জানিয়েছেন নিজের  সহানুভূতির কথা। তিনি বলেছেন, “তিলোত্তমার জন্য আমরাও চোখের জল ফেলেছি। আমি মদন মিত্র নিজেও মোমবাতি মিছিল করেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। প্রথমে তিলোত্তমার মা-বাবা বললেন ফাঁসি চাই। তারপর বললেন, কলকাতা পুলিশ যথেষ্ট নয়। সিবিআই চাই। সেটা হল। সিবিআই আড়াই তিন মাস রগরালো। কলকাতা পুলিশ যা তদন্ত করেছে সিবিআই তাই করল। এরপর কোর্ট বলল এটা বিরল থেকে বিরলতম কেস নয়। তাই ফাঁসি হতে পারে না। এর কোনওটার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জড়িত নয়।”

তৃণমূল বিধায়কের কথায়, তিলোত্তমার মা-বাবা প্রথমে বলছেন ওকে (সঞ্জয় রায়) ফাঁসি দিতে হবে। ওকে ফাঁসি থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তৃণমূলের বড় বড় মাথারা। রাজ্য কোর্টে গেল। ফাঁসি চেয়ে। সিবিআই কোর্টে গেল ফাঁসি চাইল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন ফাঁসি চাই। এখন যখন ফাঁসি হল না তখন বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত তাড়া কেন ফাঁসি দেওয়ার। সঞ্জয়ের ফাঁসি হলে তথ্য প্রমাণ লোপাট হবে।

মদন বলেন, “তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করবেন? ওরা কিছু চাই না বলেছেন। রাতারাতি প্রতিদিন কথা বদলে যাচ্ছে। বিজেপি-সিপিএম-এর মতো কথা ওদের মুখে তোতাপাখির বুলি। তাহলে কি ক্ষতিপূরণ চান? সেটা মুখে বলুন। একটা বাচ্চা মেয়ের ষোলো কোটি টাকা লাগবে ইঞ্জেকশনের। ইতিমধ্যে সাত কোটি উঠেছে। একশো চল্লিশ কোটি দেশের লোক আছেন তাঁরা দেবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-নরেন্দ্র মোদী দেবেন। আপনারা পরিষ্কার করে যদি না বলেন কী চান হবে কী ভাবে?” এরপর তৃণমূল বিধাসক বলেন, “আমি ওদের বলেছি মেয়ের ক্ষতিপূরণে টাকা লাগবে? সেটা পরিষ্কার করে বলুন। এমনিতেই কয়েকশো কোটি টাকা ডাক্তারদের আন্দোলনে উঠে গেছে। আপনারা চাইলে এই মুহূর্তে হাজার-হাজার কোটি টাকা উঠে যাবে। সেটা যদি চান ওই টাকা দিয়ে মেয়ের নামে ভাল কাজ করবেন। তাহলে করতে হবে।”

এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা কড়া ভাষায় মদন মিত্রের বক্তব্যের নিন্দা করেছেন। বলেন, “স্বভাব সিদ্ধ অসভ্যের মতো কথা বলেছেন। কয়েকদিন আগে দুধে স্নান করে জন্মদিন পালিত হয়েছে বাড়তি কোনও কিছু এসে গেছে কি না। উনি টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করতে চাইছেন?”

এর আগে ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, “এখন এমন হয়ে গিয়েছে, উনি এখন যাদের পাল্লায় পড়েছেন, এবার ওনারা পলিটিক্স করছেন, তাকে নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী লেফটিস্টদের দয়ায় বা কারোর দয়ায় মুখ্যমন্ত্রী পদে বসে নেই। বাংলার মানুষের সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসে রয়েছেন। আমি আবার বলব, আপনি আপনার এক্তিয়ারের মধ্যে থাকুন, নিশ্চিতভাবে ন্যায় চান। আমরাও অত্যন্ত দুঃখিত সিবিআই যেভাবে তদন্ত করেছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনাকে দিয়ে যা বলাবে, তাই বলবেন…মানুষের যে সহানুভূতি আপনার ওপরে, সেটা নষ্ট হয়ে যাবে।” তারপর কুণাল ঘোষকে বলতে শোনা গিয়েছিল,”কিছু অতৃপ্ত আত্মা এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সরকার বিরোধী, মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী রাজনীতি করছে, তাদের পাল্লায় পড়বেন না। প্ররোচনায় পা দেবেন না। সেক্ষেত্রে এই গোটা ব্যাপারটাও তদন্তে আসা উচিত। ওনারা কার কার সঙ্গে কথা বলছেন, কারা কী শেখাচ্ছে, কোন কারণে বলছেন, কীসের ভিত্তিতে বলছেন, এটা গোটা বিষয়টাই তদন্তে আসা উচিত।” কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “আজকে উনি ফাঁসি চাইলেন না! তাহলে উনি কী চাইছেন? অন্য মহিলাদের ক্ষেত্রে যদি রেপ করে খুন করে, তাহলে দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না, এটাই উনি চাইছেন? যেহেতু ওনার মেয়ে রেপড হয়ে মারা গিয়েছেন বলে, অন্য মেয়েদের ক্ষেত্রে যদি এরকম ঘটনা ঘটে, তাহলে দোষীর ফাঁসি সাজা হবে না বলা হচ্ছে। আসলে ওনারা এখন রাজনীতি করছেন। খুব ভাল রাজনীতি করছেন। আই অ্যাম সরি টু সে। কিন্তু নাও দে আর ইন পলিটিক্স। কমপ্লিটলি পলিটিক্স। বিকাশ ভট্টাচার্যের কথা আর ওনাদের কথা এক হয়ে গেল।”