মাসিক বেতন ৬০ হাজার টাকা, দেবাঞ্জনের ‘ক্রাইম পার্টনার’ তিনি! গ্রেফতার দেহরক্ষী

প্রথম থেকেই অরবিন্দ নিজেকে নিরপরাধ বলে দাবি করে আসছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, দেবাঞ্জনের কারবার সম্পর্কে তিনি কিছুই আগে থেকে জানতেন না।

মাসিক বেতন ৬০ হাজার টাকা, দেবাঞ্জনের 'ক্রাইম পার্টনার' তিনি! গ্রেফতার দেহরক্ষী
বাঁ দিকে- দেবাঞ্জনের দেহরক্ষী
Follow Us:
| Updated on: Jul 02, 2021 | 9:51 AM

কলকাতা: কসবা ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে (Kasba Fake Vaccination Camp) গ্রেফতার আরও এক জন। গ্রেফতার করা হয়েছে মূল চক্রী দেবাঞ্জন দেবের (Debanjan Deb) দেহরক্ষী প্রাক্তন বিএসএফ কর্মী অরবিন্দ বৈদ্যকে। বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (STF)। এই নিয়ে দেবাঞ্জন কাণ্ডে গ্রেফতার হলেন ৫ জন।

বৃহস্পতিবার প্রাক্তন বিএসএফ কর্মী অরবিন্দ বৈদ্যকে তলব করে লালবাজার। তাঁকে নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল বেশ কিছু নথি। দীর্ঘক্ষণ অরবিন্দকে জেরা করা হয়। কথায় একাধিক অসঙ্গতি মেলায়, পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীরা মনে করছেন, দেবাঞ্জনের কারবার সম্পর্কে ভালোভাবেই অবগত ছিলেন অরবিন্দ। জালিয়াতির কারবারের সঙ্গে অরবিন্দ যুক্ত ছিল বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। ভুয়ো টিকাকরণ থেকে শুরু করে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা- দেবাঞ্জনের সব কারবারেই তিনি সঙ্গী ছিলেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের আবহে  দুটি ছবি তোলপাড় ফেলে দেয়। তৃণমূল সাংসদ দাবি করেন, দেবাঞ্জনের দেহরক্ষী অরবিন্দ বৈদ্যের সঙ্গে বহু দিন ধরেই ধনখড়ের যোগাযোগ ছিল। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি প্রথম যে ছবিটি সামনে আনেন, তাতে অরবিন্দকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে দেবাঞ্জনের পিছনে। ঠিক তার পরের ছবিতেই দেখা গিয়েছে, রাজ্যপালের পরিবারের সঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অরবিন্দ। অর্থাৎ দেবাঞ্জন কাণ্ডে রাজ্যপাল যোগসূত্র উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করে তৃণমূল। বিতর্ক দানা বাঁধে। তারপরই অরবিন্দকে লালবাজারে তলব করেন গোয়েন্দারা।

প্রথম থেকেই অরবিন্দ নিজেকে নিরপরাধ বলে দাবি করে আসছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, দেবাঞ্জনের কারবার সম্পর্কে তিনি কিছুই আগে থেকে জানতেন না। এমনকি তাঁকেও নাকি চাকরি দেওয়ার সময়ে ভুয়ো পরিচয় দিয়েছিলেন দেবাঞ্জন। গ্রেফতারির পরই পুলিশ যখন তদন্ত করেছে, গোটা বিষয়টি তাঁর সামনে স্পষ্ট হয়। কিন্তু অরবিন্দর বক্তব্য মানতে নারাজ ছিলেন তদন্তকারীরা। কারণ এক জন দেহরক্ষী, যিনি সর্বক্ষণ দেবাঞ্জনের সঙ্গে রয়েছে, কীভাবে কিছুই জানতেন না তিনি? সন্দেহ হয় সেখান থেকেই।

এরপর অরবিন্দের ব্যাঙ্কের নথি খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। গড়মিল থাকে সেখানেও। দেবাঞ্জনের দেহরক্ষী অরবিন্দের মাসিক বেতন ছিল ৬০ হাজার টাকা। আজ, শুক্রবার তাঁকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হবে। এদিকে, বৃহস্পতিবারই দেবাঞ্জনের কসবার অফিস ঘরের মালিক অশোককুমার রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করা হয়।

আরও পড়ুন: ‘হাঁপিয়ে উঠছি, রাজনীতিতে এসে বোধহয় ঠিক করিনি’, বিপুল ভোটে জিতেও কেন বললেন তৃণমূল বিধায়ক?

জানা গিয়েছে, অশোক কুমার রায়ের থেকে অফিস ভাড়া নেওয়ার সময় কলকাতা পুরসভার থেকে নেওয়া ট্রেড লাইসেন্স দেখানো হয়েছিল। ‘ইনস্টিটিউট অফ আরবান প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট’ কেএমসি’ এই নামে ট্রেড লাইসেন্স জমা দিয়েছিলেন দেবাঞ্জন। ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে তাঁর অফিস ভাড়া নিলেও অফিসের বাইরে থাকা ব্যানারে কোথাও ইনস্টিটিউট কথাটির উল্লেখ করেননি। শুধুমাত্র ‘আরবান ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড প্লানিং ডেভলপমেন্ট’ কথাটি লেখা ছিল। যাতে কারও সন্দেহ না হয় যে এটি পুরসভার অফিস নয়।