বিষমদ খেয়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৭৩ জনের, খোঁড়া বাদশার আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ আদালতের
এই ঘটনাকে 'বিরল থেকে বিরলতম' বলে উল্লেখ করে হয়েছে সরকারি আইনজীবীদের পক্ষ থেকে।
কলকাতা: প্রায় এক দশক পর সংগ্রামপুর বিষমদ কাণ্ডের সাজা ঘোষণা করল আলিপুর আদালত। এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া খোঁড়া বাদশাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই ঘটনায় পৃথক একটি মামলা রুজু হয়েছিল। সেখানেও দোষী সাব্যস্ত হয় খোঁড়া বাদশা। মগরাহাট থানায় এই মামলা দায়ের হয়েছিল ২০১১ সালে। বিষমদ খেয়ে একাধিক এলাকায় কমপক্ষে ১৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যে এসেই মামলায় এ দিন সাজা ঘোষণা করে আদালত জানায়, যতদিন না মৃত্যু হচ্ছে, ততদিন জেলবন্দি থাকবে হবে খোঁড়া বাদশাকে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭৩, ৩০২, ৩২৮ নম্বর ধারায় আমৃত্যু সাজা শোনানো হয় খোঁড়া বাদশাকে।
গত শনিবার এই মামলার সাজা ঘোষণা করে খোঁড়া বাদশাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। নুর ইসলাম ফকির ওরফে খোঁড়া বাদশাকে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও বেকসুর খালাস করা হয় তার স্ত্রী শাকিলা বিবিকে। ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর মগরাহাট ও উস্তি থানার বিস্তীর্ণ এলাকায় চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যু হয় প্রায় ১৭৩ জনের। পঙ্গু হয়ে যান প্রায় শতাধিক মানুষ। ঘটনায় মগরাহাট ও উস্তি থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৪ সালে বিষমদ-কাণ্ডে জেলা পুলিশের হাত থেকে সিআইডির হাতে তদন্তভার তুলে দেয় রাজ্য সরকার। সেই তদন্তে নাম উঠে আসে নুর ইসলাম ওরফে খোঁড়া বাদশার। জানা যায়, খোঁড়া বাদশার আস্তানা থেকেই ওই চোলাই মদ চালান হত। খোঁড়া বাদশা ও তাঁর স্ত্রী-সহ মোট নয়জন অভিযুক্তকে বিষমদ-কাণ্ডে গ্রেফতার করে সিআইডি।
২০১৮ সালে উস্তি মামলায় সাজা ঘোষণা হয়। সেই মামলায় তাতে খোঁড়া বাদশা সহ ৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন আলিপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক পার্থসারথি চক্রবর্তী। তবে বেকসুর খালাস পান স্ত্রী শাকিলা বিবি-সহ অন্যান্য অভিযুক্তেরা। শনিবার, আলিপুরের ষষ্ঠ দায়রা বিচারক মগরাহাটের মামলায় খোঁড়া বাদশাকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এই মামলাতেও তাঁর স্ত্রী শাকিলা বিবি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। এই মামলায় মোট ন’জনকে অভিযুক্ত করে বিচার প্রক্রিয়া চলছিল। মামলা চলাকালীন এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পেয়েছেন বাকিরা। আরও পড়ুন: ‘কমিশন বলছে খুন হয়েছে ৫২, রাজ্য বলছে ২২’, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সওয়াল আইনজীবীর