হোটেলে আড্ডার ফাঁকেই উঠে বাথরুমে গিয়েছিলেন যুবক, দরজার নীচ থেকে বেরিয়ে এল টাটকা রক্ত!

Kolkata: হোটেল সূত্রে জানা গিয়েছে, হোটেল মালিকের সঙ্গে বিভিন্ন সময়েই কথা কাটাকাটি হত রোহিতের।

হোটেলে আড্ডার ফাঁকেই উঠে বাথরুমে গিয়েছিলেন যুবক, দরজার নীচ থেকে বেরিয়ে এল টাটকা রক্ত!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 26, 2021 | 9:02 AM

কলকাতা: হোটেলে তখন লোক রয়েছে। আচমকাই হাতে ছুরি নিয়ে বাথরুমে ঢুকে যান। প্রথমটায় বিশেষ আমল দেননি কেউই। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরও বাথরুম থেকে না বেরনোর সন্দেহ হয় সকলের। পরে বাথরুমের দরজা ধাক্কাধাক্কি। তা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন যুবক। বুকের বাঁ দিকে ছোট্ট ছোট্ট একাধিক গভীর ক্ষত। রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে। হোটেলের মধ্যেই হোটেল কর্মীর এহেন কাণ্ডে তখন স্তম্ভিত গ্রাহকরা। পি ৫২৪ রাজা বসন্ত রায় রোডের একটি হোটেলে বুধবার সন্ধ্যায় ঘটে ভয়ঙ্কর কাণ্ড। মৃত যুবকের নাম রোহিত অধিকারী (২৪)।

কসবার ৯১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রোহিত বেশ কয়েক মাস যাবত্ ওই হোটেলে কাজ করছিলেন। হোটেলের অনান্য কর্মীরা জানান, বুধবার বিকালে আচমকাই রোহিত হাতে একটা ছুরি নিয়ে বাথরুমে চলে যায়। কাজ করতে করতেই বাথরুমে গিয়েছিল। তারপর এই ঘটনা।

এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “ছেলেটা কাজ করতে করতেই বাথরুমে গিয়েছিল। হাতে ছুরি ছিল দেখেছি, তবে ওদের তো কাজে লাগেই, তাই বুঝিনি ওতটা। প্রথমটায় বিশেষ কেউও ওত গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ বাথরুম থেকে না বেরনোয় চিন্তিত হয়ে পড়ে সকলে।”

হোটেল সূত্রে জানা গিয়েছে, হোটেল মালিকের সঙ্গে বিভিন্ন সময়েই কথা কাটাকাটি হত রোহিতের। কাজের ধরন, পরিষেবা নিয়ে হোটেল মালিক মাঝেমধ্যেই তাঁকে বকা দিতেন বলে হোটেলের অনান্য কর্মীরা জানিয়েছেন। তবে কাজ ঠিকঠাক না করলে মালিক হোটেলের বাকি কর্মীদেরও বকাবকি করতেন। ব্যাপারটাকে সকলে সহজভাবেই নিতেন।

তবে গত কয়েক মাসে রোহিতের একাধিক কাজে অসন্তুষ্ট ছিলেন হোটেল মালিক। তাঁর বেতনও অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছিল। তা নিয়ে বচসা চরমে ওঠে। তবুও অন্যত্র কাজ না পাওয়ায় এই হোটেলেই কাজ করতে বাধ্য হন রোহিত।

বুধবার সকালে নির্দিষ্ট সময়েই কাজে এসেছিলেন। বিকালে এই ঘটনা। তবে কাজের ফাঁকে মালিকের সঙ্গে বড় কোনও ঘটনা ঘটেছিলে বলে রোহিতের সহকর্মীরা বলতে পারছেন না। এদিন, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। রোহিতকে উদ্ধার করে ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিত্সকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

তবে পরিবারের অভিযোগ, প্রথমে ভিতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। তারপর তাঁরা জোর করে ভিতরে ঢুকে রোহিতকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। ঘটনার পিছনে হোটেল মালিককে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তাঁরা। তবে হোটেল মালিকের বক্তব্য, এই ঘটনা একেবারেই আকস্মিক। কোনওভাবেই এমনটা হতে পারে বলে আঁচ করতে পারেননি তিনি।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, রোহিত একটি ছুরি নিয়ে হোটেলের বাথরুমে ঢোকেন। তাঁর বুকের বাঁ দিকে একাধিক ক্ষত রয়েছে। ডান হাত দিয়ে বুকের বাঁ দিকে ছুরি চালিয়েছেন রোহিত। তাঁর শরীরে একাধিক ক্ষত তৈরি হয়েছে। অন্য একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বান্ধবীর সঙ্গেও ঝগড়া হয়েছিল রোহিতের। কোন বিষয়টা কাজ করছে, এই ঘটনার নেপথ্যে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। আরও পড়ুন: সুদূর রাজস্থানে বসেই কলকাতায় প্রতারণা! ফের জালে ভুয়ো আইপিএস