সুদূর রাজস্থানে বসেই কলকাতায় প্রতারণা! ফের জালে ভুয়ো আইপিএস
Fake IPS: তদন্তকারীরা বলছেন, প্রতারণার যে ধরনটা এখন দেখা যাচ্ছে, সেটা সাম্প্রতিক কয়েক বছরে বাড়বাড়ন্ত হয়েছে।
কলকাতা: ভুয়ো সিরিজে আরও এক নয়া সংযোজন! আবারও গ্রেফতার ভুয়ো আইপিএস (Fake IPS)। তবে এই ভুয়ো কর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজস্থান থেকে। ধৃতের নাম রাহুল খান। তাঁকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। রাজস্থানেই বাড়ি ওই যুবকের।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, রাজস্থানে বসে ভুয়ো আইপিএস পরিচয় দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন রাহুল। নিজের মিথ্যা পরিচয় দিয়ে তাঁদের বিভিন্ন মামলা থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিতেন। তাঁদের কাছে মোটা টাকা দাবি করতেন তিনি।
টাকা না দিলে অনেক সময় তাঁদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিতেন তিনি। পরে তাঁদের থেকেও মোটা টাকা নিতেন। সম্প্রতি লালবাজারে অভিযোগ জানান এক প্রতারিত। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়।
রাহুল খানের অ্যাকাউন্টে নজর রাখতে থাকেন গোয়েন্দারা। তাঁর আইপি অ্যাড্রেসের সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোবাইল বাজেয়াপ্ত হয়েছে, যার মাধ্যমে তিনি এই কারবার চালাতেন। ধৃতকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে এসে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হলে ১সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
তদন্তকারীরা বলছেন, প্রতারণার যে ধরনটা এখন দেখা যাচ্ছে, সেটা সাম্প্রতিক কয়েক বছরে বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। এর আগেও ভুয়ো সিবিআই আধিকারিক সেজে প্রতারণার চেষ্টার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। সিবিআই কর্তা সেজে কসবার এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। ভুয়ো ইডি অফিসার পরিচয় দিয়েও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে একাধিক। তার একটি মামলা বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করে দেখছে। প্রথমে সেটির তদন্ত শুরু করেছিল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ।
দেখা গিয়েছে, রাজ্যে মূলত চিটফান্ড মামলার তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতারকরা ইডি, সিবিআইকে সামনে রেখে তাঁদের জাল বিছিয়েছে। কারণ এই মামলাগুলির তদন্তে আরও বেশি করে সক্রিয় হয়েছে ইডি-সিবিআই। এই ‘মোডাস অপারেন্ডি’র সূত্র ধরেই নানান কীর্তি প্রকাশ্যে এসেছে।
কসবার দেবাঞ্জন দেব, বরানগরের সনাতন রায় চৌধুরী, বেলঘরিয়ার রাজর্ষি ভট্টাচার্য – ভুয়ো আইএএস, ভুয়ো সিবিআই কৌসুলী, ভুয়ো আইপিএস- ‘ঠগ’দের এই তালিকায় এখন নবতম সংযোজন রাহুল খান। তদন্তকারীরা এবার দেখতে চাইছেন এই রাহুলের হাত কতদূর লম্বা। দেবাঞ্জন, সনাতনের মতো এরও কোনও প্রভাবশালী যোগ রয়েছে কিনা। ভুয়ো আইপিএস রাজর্ষির বিরুদ্ধে তো আবার খুনের পরিকল্পনা করারও বিস্ফোরক অভিযোগ রয়েছে।
এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে রাজস্থানের কোনও বড় গ্যাং জড়িত রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাহুল একাই এই কাজ করতেন, নানা তাঁকে এই কাজে আরও কেউ সাহায্য করত, তা জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা চলছে। তদন্তকারীরা আশাবাদী জেরায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসবে। কত জনের সঙ্গে তিনি এইভাবে প্রতারণা করেছেন, তাও জানা যাবে। আরও পড়ুন: বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ, ফের কি পদ্মশিবিরে মুকুল? জল্পনায় ঘি দিলীপের