আকস্মিক গোঙানিতে বুক কেঁপে ওঠে, মাংসগলির মুখে চাপ চাপ রক্ত! মেটিয়াবুরুজে হাড়হিম কাণ্ড
Metiaburuz Murder: প্রত্যক্ষদর্শীরা সেভাবে মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে এক জন বলেন, "আমরা একটা আওয়াজ শুনতে পেয়ে বেরিয়ে আসি।
কলকাতা: রাত বারোটা। আপাত নিঃস্তব্ধ হয়ে এসেছে শহর। রাস্তায় লোকজনও কম। রাতের খাবার সেরে সবেমাত্র স্থানীয় বাসিন্দারা তখন শুতে যাচ্ছিলেন। আচমকাই একটা বুক ফাটা আর্তনাদ। স্থানীয়দের কথায়, বুক কেঁপে উঠেছিল সেই চিত্কারে। বিপদ তখনই আঁচ করতে পেরেছিলেন তাঁরা। ভেবেছিলেন হয়তো দুপক্ষের মধ্যে কোনও ঝামেলা হচ্ছে। এলাকায় এই ধরনের ঘটনা আখছার হয়। কিন্তু বিপদ যে আরও বড়! আর্তচিত্কার, গোঙানির শব্দ আরও প্রকট হয়েছে ততক্ষণে। একপ্রকার ভয় নিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন স্থানীয়রা। তখন গলির মুখে চাপ চাপ টাটকা রক্ত পড়ে। ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছেন পাড়ারই ছেলে! রাতের কলকাতায় (Kolkata) ফের রোমহর্ষক কাণ্ড। নেশার ঘোরে বন্ধুকে ছুরি মেরে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ। মেটিয়াবুরুজের মাংস গলির ঘটনা। আক্রান্ত যুবকের নাম মহম্মদ জাভেদ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি।
জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে বন্ধু মহম্মদ রসিফের সঙ্গে কেশরাম জুটমিল এলাকায় আড্ডা মারছিলেন মহম্মদ জাভেদ। তিনি লিচুবাগান এলাকার বাসিন্দা। রাত বারোটা নাগাদ আশেপাশের লোকজনক জাভেদের চিত্কার শুনতে পান। চিত্কারের উত্স খুঁজতে গিয়ে তাঁরা ছোটের মাংসগলির মুখে। সেখানে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন জাভেদ।
খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। জানা যাচ্ছে, ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয়েছে জাভেদকে। ইতিমধ্যেই রসিফকে গ্রেফতার করেছে মেটিয়াবুরুজ থানার পুলিশ। এলাকা ইট দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। লালবাজারের তদন্তকারীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সেভাবে মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে এক জন বলেন, “আমরা একটা আওয়াজ শুনতে পেয়ে বেরিয়ে আসি। একটা আর্তনাদ, গোঙানির শব্দ, কেউ মারাত্মক আঘাত পেলে যেমনটা হয়। প্রথমে আমরা ভাবি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। পরে আওয়াজ অনুসরণ করে এগোতে থাকি। পাড়ার বাকি লোকেরাও তখন বেরিয়ে এসেছেন। দেখি একজন মাটিতে পড়ে রয়েছে। সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে।”
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশেরও অনুমান, ধারাল কোনও অস্ত্র দিয়ে বারবার আঘাত করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। সারা শরীরেই ক্ষত তৈরি হয়েছে। শনিবার রাতের ঘটনার পর থেকেই থমথমে এলাকা। বন্ধ দোকানপাটও। পুলিশ এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। ঘটনাস্থলে যায় ফরেনসিক টিমও। স্রেফ নেশার ঘোরে আকস্মিক বচসা থেকেই হামলা নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীদের অনুমান, হামলা যতটা আক্রোশের সঙ্গে করা হয়েছে, তাতে বিষয়টি আকস্মিক ঝামেলার রেশ বলে মনে হচ্ছে না। আবার পুরনো বিবাদ থাকলেও এক সঙ্গে কেন দু’জনে বসে নেশা করবেন. তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। ধৃতকে আপাতত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সেখান থেকেই সূত্র বেরিয়ে আসবে। তবে যুবক জাভেদের পরিবারের তরফে এখনও এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। খুনের মোটিভ জানার চেষ্টা চলছে। এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। আরও পড়ুন: ‘মা ওরা আমার সঙ্গে নোংরা কাজ করে, রোজ…’, মাকে আত্মহত্যার হুমকি-চিঠি ক্লাস ফোরের ছাত্রের