‘দানবীয় দল চালাচ্ছে বিজেপি’, ত্রিপুরা কাণ্ডে ‘অল আউট অ্যাটাকে’ মমতা
CM Mamata Banerjee: "ওদের যেভাবে মারধর করা হয়েছে, পাথর মারা হয়েছে, গুলি চালানো হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের ওপর। জয়ার গাল লাল, কান ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে।"
কলকাতা: ত্রিপুরা কাণ্ডে (Tripura Case) এবার সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সোমবার সকালে এসএসকেএমে চিকিত্সাধীন সুদীপ রাহা, জয়া দত্তকে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “ত্রিপুরায় চলছে দানবীয় শাসন। পুলিশের সামনেই আমার নেতাদের ওপর হামলা হয়েছে। হয়নি চিকিত্সা, দেওয়া হয়নি জলও। অভিষেকের জীবনেরও ঝুঁকি রয়েছে। অমিত শাহর নির্দেশেই এই হামলা হয়েছে।”
বেলা ১১.১৫ মিনিট নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ১০৩ নম্বর উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা সুদীপ রাহার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। দেখা করেন ২০৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা জয়া দত্তের সঙ্গেও।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ত্রিপুরাতে দেবাংশু ওরা গিয়েছিল। ওদের যেভাবে মারধর করা হয়েছে, পাথর মারা হয়েছে, গুলি চালানো হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের ওপর। জয়ার গাল লাল, কান ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুদীপেরও মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে। সব থেকে আশ্চর্য পুলিশকে সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে মেরেছে। মারার পর ৩৬ ঘণ্টা চিকিত্সা করতে দেওয়া হয়নি। পানীয় জল দেওয়া হয়নি। ওরাই মারল. ওরাই গ্রেফতার করল। কাউকে এক গ্লাস জল দেয়নি। বিজেপি ত্রিপুরায় দানবীয় দল চালাচ্ছে।” দেবাংশুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই সে কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কানে শোনার ক্ষেত্রে সমস্যার কথা চিকিৎসকদের জানিয়েছেন জয়া। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কান ভোঁ ভোঁ করছে। সিটি স্ক্যানের পরে ইএনটি’র পরামর্শ নেওয়া হবে বলে চিকিত্সকরা জানিয়েছেন। এদিকে, কেন সুদীপ সেদিন অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন, তা জানতেও করা হবে সিটি স্ক্যান।
রবিবার মধ্যরাতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এই তিন যুবনেতাকে নিয়ে কলকাতাতে আসেন। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে তৃণমূল নেতা দেবরাজ চক্রবর্তী তাঁদেরকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
তৃণমূল নেত্রী জয়া দত্ত বলেন, “ত্রিপুরাতে বিজেপির বিপ্লব দেবের বিপ্লব শেষ হয়ে গিয়েছে।” চিকিৎসা শেষে, ফের তাঁরা ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। উল্লেখ্য, সোমবার ত্রিপুরা থেকে ফিরে আসবেন তৃণমূল নেতা সমীর চক্রবর্তী। তবে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ-সহ কয়েক জন নেতা ১২ তারিখ পর্যন্ত ত্রিপুরাতেই থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
রবিবারই খোয়াই থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রেফতার হওয়া যুব কর্মীদের জামিনের দাবিতে একটানা আন্দোলন চালিয়েছিলেন। রবিবার আগরতলার বিশেষ আদালতে তোলা হয় তৃণমূল যুব নেতা-নেত্রীদের।
বিকেলে যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা ও যুবনেত্রী জয়া দত্তর জামিন মঞ্জুর হয় । আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চাকরি বাঁচাতে, পদ বাঁচাতে পুলিশকে এসব করতে হচ্ছে। বিপ্লব দেবের সরকারের অবসান দরকার।” আরও পড়ুন: একুশে ফেরাননি ওঁরা, ‘কৃতজ্ঞতা স্বীকারে’ আজ জঙ্গলমহলে মুখ্যমন্ত্রী