মহিলা তদন্তকারীর স্রেফ ছোট্ট একটা প্রশ্নেই কুপোকাত ‘আইপিএস’ রাজর্ষি! কী সেই প্রশ্ন?
Fake IPS Officer: ভুয়ো আইপিএস সন্দেহে রাজর্ষিকে আটক করলেও প্রথমে তিনি নিজের পরিচয় স্বীকার করেননি।
কলকাতা: প্রথমে স্বীকারই করেছিলেন না! তিনি আইপিএস অফিসারই (Fake IPS Officer) – গোঁ ধরে বসেছিলেন রাজর্ষি ভট্টাচার্য। কিন্তু মহিলা এক অফিসারের স্রেফ একটা প্রশ্নেই কুপোকাত হয়ে পড়েন তিনি। ভুয়ো আইপিএস রাজর্ষি ভট্টাচার্যের কাছে ঠিক কী জানতে চেয়েছিলেন ওই মহিলা তদন্তকারী?
সোমবার রাতে বেলঘরিয়া থেকে রাজর্ষি ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ভুয়ো আইপিএস সন্দেহে রাজর্ষিকে আটক করলেও প্রথমে তিনি নিজের পরিচয় স্বীকার করেননি। তবে লালবাজারের এক মহিলা আইপিএস একটি প্রশ্ন করেন, তার উত্তর দিতে পারেননি রাজর্ষি। বাধ্য হয়ে নিজের পরিচয় স্বীকার করেন।
রাজর্ষির কাছে লালবাজারের ওই আইপিএস জানতে চান, “আপনি কি আরআর অর্থাত্ রেগুলার রিক্রুট নাকি এসপিএস অর্থাত্ স্টেট পুলিশ সার্ভিস?”
এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি রাজর্ষি। সূত্রের খবর, বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকেন তিনি। এটার মানে কী, তাও তাঁর জানা ছিল না। আইপিএস হলে তাঁর এই বিষয়টি জানার কথা! এখানেই তাঁর ভুয়ো পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে যান গোয়েন্দারা। তারপর গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
জেরায় রাজর্ষির কাছ থেকে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাজর্ষি নিজেকে RAW এর অফিসার বলে পরিচয় দিতেন। কিন্তু RAW -এর ডিরেক্টরের নামও বলতে পারেন নি তিনি।
তদন্তে জানা গিয়েছে, রাজর্ষি আসলে ছবি কেনাবেচার কাজের সঙ্গে যুক্ত। নিজে ছবিও আঁকতে পারেন। নিজের আঁকা ছবি প্রখ্যাত শিল্পীর বলে বিক্রি করে দিতেন। ক্রেতাও শহরের প্রভাবশালীরাই। নিজের ভুয়ো পরিচয় ব্যবহার করেই ছবি বিক্রি করতেন।
ছবি বিক্রির জন্যই পাঁচতারা হোটেলে উঠতেন। সেখানেই ক্রেতাদের সঙ্গে দেখা করতেন। সিজিও কমপ্লেক্সে নিজের অফিস বলে দাবি করলেও কোনওদিন সেখানে যাননি রাজর্ষি, তদন্তে তাও স্বীকার করেছেন। নিরাপত্তারক্ষী ও গাড়ির চালককে ২০ হাজার টাকা করে বেতন দিতেন।
জেরায় দাবি করেছেন, লকডাউনে পুলিশ গাড়ি চেক করছে বলে নাকি আইপিএসের ভেক ধরেছিলেন। রাজর্ষি আইপিএস পরিচয় দিয়ে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন। টাকা না দিলে তাঁকে গ্রেফতার করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছিলেন। গত ২৬ জুলাই পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন জাকির হোসেন নামে ওই ব্যক্তি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা। তারপরই তাঁকে বেলঘরিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। আরও পড়ুন: সিভিক ভলেন্টিয়ারের কাজ চলে যাওয়ার পর পরিচয় দিতেন এসআই হিসাবে! এই ‘ঠগ’এর কীর্তি আরও মারাত্মক