ব্যর্থ মোদীর নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি! মমতার পাল্টা চালে এবার বাংলার কৃষকদের অ্যাকাউন্টেও কিসান সম্মান নিধির টাকা
শুক্রবার থেকেই কিসান নিধি প্রকল্পের (Kisan Samman Nidhi Project) টাকা প্রত্যেক কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। আগামিকাল ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সেকথা ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)।
কলকাতা: শুক্রবার থেকেই কিসান সম্মান নিধি প্রকল্পের (Kisan Samman Nidhi Project) টাকা প্রত্যেক কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। আগামিকাল ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সেকথা ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। লক্ষ্যণীয়ভাবে কেন্দ্র-রাজ্য দীর্ঘকালের কাদা ছোড়াছুড়ির পর এই তালিকায় এবার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বাংলার কৃষকদের নামও। বাংলার প্রত্যেক কৃষক যাতে এই অর্থ পান, তার জন্য ইতিমধ্যেই উদ্যোগী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের দফতরও। প্রধানমন্ত্রী কিসাণ সম্মান নিধি প্রকল্পের অষ্টম কিস্তিতে ১৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৯.৫ কোটি কৃষকের অ্যাকাউন্টে এই টাকা সরাসরি স্থানান্তরিত করা হবে।
উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারবার ঘোষণা করেছেন, কিসান নিধি প্রকল্পে প্রাপ্য অর্থ দেওয়া হবে প্রত্যেক কৃষককে। এই হাতিয়ারের ওপর ভর করে নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে পারেনি মোদী-শাহ জুটি। মোদী বারবার অভিযোগ তুলেছিলেন, “এটাই আফসোস যে পুরো ভারতের কৃষকরা কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। সব মতাদর্শের সরকার এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আছেন। কিন্তু একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ সরকার তা চালু করেনি।” ক্যারিশ্মা দেখিয়েছেন মমতাই।
ক্ষমতায় আসার চার দিনের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন, কেন্দ্রীয় সরকারের পোর্টালে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ২১.৭৯ লক্ষ চাষি নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৪.৯১ লক্ষ কৃষকের তথ্য যাচাই রাজ্য সরকার করে দিয়েছে। এবং সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকার টাকা পাঠাতে পারবে। মমতার আবেদন, চাষিদের অ্যাকাউন্টে যেন টাকাগুলো অবিলম্বে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
রাজ্যের যে সমস্ত কৃষকরা প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি প্রকল্পের আওতাভুক্ত হয়েছেন, তাঁদেরকে শুক্রবার থেকেই ২০০০ টাকা করে প্রথম দফায় দেওয়া হবে। গোটা দেশজুড়ে ৯ কোটি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছবে ১৯ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত কৃষক সংখ্যা রয়েছে ৭ লক্ষ ৫৫ হাজার। তবে একটি বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে, ভোট পূর্ববর্তী সময়ে প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী এও ঘোষণা করেছিলেন, বকেয়া টাকাও কৃষকদের দেওয়া হবে। তবে এই প্রথম ধাপেই সেই টাকা দেওয়া হবে, নাকি দফায় দফায় ১৮ হাজার টাকা দেওয়া হবে, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মোদী-শাহ জুটি আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাড়ে বন্দুক রেখে বাংলার কৃষক শ্রেণির মানুষদের মন জয় করতে এই প্রকল্পকেই হাতিয়ার করেছিলেন। কিন্তু বিপুল ভোটে দিতে তৃতীয় বারের সরকার গঠনের চার দিনের মধ্যেই পাল্টা চাল দিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্যবেক্ষকদের কথায়, একেই বলে ‘বাউন্সার’!