হঠাৎ গলায় কী একটা পেঁচিয়ে গেল! খপ করে হাত দিয়ে চেপে ধরলেন পুলিশ সার্জেন্ট…ক্ষতের উপর দিয়েই টলল বিপদ
Maa Flyover: বার বারই এই চিনা মাঞ্জা সুতোর কারণে শিরোনামে উঠে আসে মা উড়ালপুলের নাম। প্রায়শই শোনা যায়, চিনা সুতোয় বড় বিপদ ঘটে গিয়েছে বাইক আরোহীদের।
কলকাতা: মা ফ্লাইওভারে চিনা মাঞ্জার ফাঁদ! রবিবার আবারও চিনা সুতোয় দুর্ঘটনা মা উড়ালপুলে (Maa Flyover Accident)। আহত হলেন কলকাতা পুলিশের এক ট্রাফিক সার্জেন্ট। নাম রূপম সাহা। রূপম নিজেই জানালেন, সতর্ক থাকায় বড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে।
রূপম সাহা বলেন, “আমি ডিউটিতে যাচ্ছিলাম। মোটামুটি সকাল তখন আটটা দশ বাজে। একেবারে মা ফ্লাইওভারের সব থেকে উঁচুতে ছিলাম। মাঞ্জা সুতো দূর থেকে দেখা যায় না। যতক্ষণ না পর্যন্ত গায়ে লাগছে বুঝতে পারবেন না কিছু। কিন্তু এই ঘটনা যেহেতু প্রায়শই হয়, আমাদেরও মাথায় সব সময় ঘোরে কিছু একটা থাকতে পারে। কিছু একটা হতে পারে। আমরা মা উড়ালপুলে উঠলে আলাদা সতর্ক থাকিই।” তারপরও হঠাৎই এদিন গলায় কিছু একটা লেগেছে বুঝতে পারেন এই ট্রাফিক সার্জেন্ট।
রূপমের কথায়, “আমি স্কুটিতে ছিলাম। হঠাৎ মনে হল গলায় কিছু একটা লেগেছে। তখনই মনে হয়েছে মাঞ্জা সুতোই হবে। আমার কপাল ভাল স্কুটিতে ছিলাম। আমি এক হাত বাড়িয়ে দিই। বাঁ হাত বাড়িয়ে সুতোটা ধরে নিই। ডান হাতে স্কুটির ব্রেকটা ধরি। ফলে বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। গলায় শুধু একটা দাগ হয়েছে। তবে বাইক থাকলে জানি না কী হতো। স্কুটির জন্যই বেঁচে গিয়েছি।”
বার বারই এই চিনা মাঞ্জা সুতোর কারণে শিরোনামে উঠে আসে মা উড়ালপুলের নাম। প্রায়শই শোনা যায়, চিনা সুতোয় বড় বিপদ ঘটে গিয়েছে বাইক আরোহীদের। এক কথায় প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে এই চিনা মাঞ্জার দাপট। এক বাইক আরোহীর গলায় মাঞ্জা সুতো জড়িয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল। এক বাইক আরোহীর নাক কেটে যায় ওই মাঞ্জায়। বার বার চিনা মাঞ্জার ব্যবহার বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
গত বছরই পাঁচ জন পুলিশ কর্মীকে নিয়ে একটি দলও তৈরি করেছিল কলকাতা পুলিশ। একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর ও চারজন কনস্টেবলকে নিয়ে সেই দল মোতায়েন করা হয় উড়ালপুলের বিভিন্ন জায়গায়। প্রয়োজনে উড়ালপুলে পায়ে হেঁটে টহল দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও খুব বিশেষ কিছু লাভ হয়নি।
কী এই চিনা মাঞ্জা?
মূলত নাইলনের সুতোর উপর ধাতু ও কাঁচের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি করা হয় এই চিনা মাঞ্জা। এর মধ্যে সিন্থেটিক আঠাও ব্যবহার করা হয়। ফলে ব্লেডের মতো ধারাল হয়ে ওঠে এই মাঞ্জা। মুহূর্তে প্রাণ পর্যন্ত চলে যেতে পারে। এই চিনা মাঞ্জায় পাখিরও প্রাণের বিপদ হয় নিয়মিত। যেহেতু কাঁচের গুঁড়োর সঙ্গে সিন্থেটিক আঠা, ধাতুও মেশানো থাকে, ফলে জল লাগলেও তা পচে না। জাতীয় পরিবেশ আদালত ইতিমধ্যেই এই চিনা মাঞ্জাকে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক বলে ঘোষণা করেছে। দেশে এই চিনা মাঞ্জার বিক্রিও আইন বহির্ভূত। তার পরও কী ভাবে খাস কলকাতার বুকে এই মাঞ্জা সুতোর এমন রমরমা, তা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ থাকে।
আরও পড়ুন: New CM of Gujarat: রুপাণীর প্রস্তাবেই সম্মতি, গুজরাটের নয়া মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন ভূপেন্দ্র পটেল